কলমের খোঁচা রাজ্য

জনমত সমীক্ষা : দেবু রায়


ভোটের আগে ভোটের ফলাফলের পিছনে লুকিয়ে থাকে মিডিয়ার নির্লজ্জ চাটুকারিতা। ইদানিং আমরা দেখছি যে বাংলার প্রায় প্রতিটি মিডিয়া শুরু করেছে যে জনগণের রায় নামক অনুষ্ঠানের নাম করে একটা অলীক, অবাস্তব পরিবেশনা, যেটা আসলে একটা কল্পনা দিয়ে মোরা।

তাহলে একটু বিশদে যাওয়া যাক, গত লোকসভা ভোটের হিসেব অনুযায়ী তৃণমূল ৪৪%, বিজেপি ৪০%, বাম ৭% কংগ্রেস ৫% ভোট পায়। তৃণমূলের ৪৪% ভোটের মধ্যে একটা বড়ো অংশ ছিলো সংখ্যালঘু, দলিত, আদিবাসী ভোট। আর যেহেতু সেটা ছিলো লোকসভা সুতরং রাজ্য সরকারের প্রতি প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোটের কোনো বিষয় ছিলো না।

কিন্তু এবার যেহেতু বিধানসভা, তাই প্রতিষ্ঠান বিরোধী ফ্যাক্টর কাজ করতে বাধ্য। সেটা যদি ধরে নেওয়া যায় ৫% কাজ করবে তাহলে তা তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাবে, সাথে যে মুসলিম ভোটের একছত্র আধিপাত্য ছিলো সেটাও থাকবে না। যদি সেটা ৫০/৫০ ও হয়, তাহলে কি দাঁড়ায়? ৪৪% -৫% = ৩৯% – ১০% = ২৯%। হ্যাঁ এটাই তৃণমূল দল পেতে পারে।

বিজেপি গত নির্বাচনে পায় ৪০%, যার মধ্যে বাম ভোট ছিলো প্রায় ২০%, কিন্তু রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বিভিন্ন মানুষের সাথে আলোচনায় একটা জিনিস পরিস্কার যে, অন্তত ৫০% ভোট আবার বাম দিকে ফিরতে চলেছে। অর্থাৎ ১০% ভোট বিজেপির দিক থেকে বাদ। তাহলে সংখ্যা টা দাঁড়ায় ৪০%-১০% =৩০%।

যারা বিভিন্ন কারনে বাম থেকে মূখ ফিরিয়ে নিয়েছিল যেমন তৃণমূলের অত্যাচারের কারনে, বা বাম দলের নেতৃত্বর পক্ষ থেকে তাঁদের কোনো নিশ্চয়তা না দিতে পারার কারনে, যাই হোক, লক ডাউনের পরবর্তী সময় শ্রমজীবী বাজার, রান্না ঘর , মাস্ক বিতরন, এবং ১১ ফেব্রুয়ারী ছাত্র -যুব দের নবান্ন অভিযান ও সবশেষে ব্রিগেড এর সমাবেশ দেখে, এবং দল বদলু দের দেখে তাঁদের একটা বড়ো অংশ আবার ফিরতে চলেছে বাম দিকে। তাহলে বামেদের সমীকরণ হলো ৭%+৫%(কংগ্রেস ) +১০% ISF +৫%প্রতিষ্ঠান বিরোধী +১০%(যেটা চলে গিয়েছিলো ) =৩২%। তাহলে যেটা হলো তৃণমূল ২৯%, বিজেপি =৩০%, জোট =৩২%।

এবার এর সাথে আরো কিছু ফ্যাক্টর এর কথা দেখে নেওয়া যাক। ১)এই মুহূর্তে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের ভোটার প্রায় ২৭% যাদের কাছে ইনকামটা মুখ্য, ধর্ম বা দেশ ভক্তি মুখ্য নয়। তৃণমূলের পক্ষে তারা যাবে না, যদি তাই হতো তাহলে প্রতিষ্ঠান বিরোধী বলে কিছুই থাকতো না। আবার বিজেপির কথাকেও তারা বিশ্বাস পারছে না কারন পেন্ডেমিক অবস্থায় তাঁদের বাবা বা দাদাদের হয় চাকরি গেছে অথবা মাইনে কমে গেছে।

সুতরং সম্ভাবনা আছে জোটের দিকে। তবে তৃণমূল গত লোকসভা নির্বাচনের সময় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার অনেক বুথে যে ভাবে ভোট করেছিল যেমন, ভোটার বুথে গেছে, হাতে কালি নিয়েছে তার পরে তাকে বলা হয়েছে বাড়ি যান বাকি evm এর কাজটা আমরা করে দেবো, সবাই অসহায়। এই রকম ভোট হলে তৃণমূল আবার ২০০র উপর সিট পাবে। আর সবটাই নির্ভর করছে নির্বাচন কমিশন, সেন্ট্রাল ফোর্সকে কি ভূমিকায় দেখা যাবে তার উপর। যদি সুস্থ ভাবে ভোট হয় তাহলে বাম জোট ক্ষমতায় আসবে ৩২% ভোট পেয়ে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।