রাজ্য

একদা ভৈরব নদী আজ বিলুপ্ত, থেকে গেছে কিছু সমস্যা


অর্পিতা ব্যানার্জী,বিশেষ প্রতিবেদন:চিন্তন নিউজ :০৮/০২/২০২৪:–গঙ্গার নিম্নগামী প্রবাহে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের কাছে দু’টি শাখায় বিভক্ত হয়েছে। গঙ্গার একটি শাখা ভাগীরথী ও হুগলি নাম নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়েছে, অপর শাখা পদ্মা নাম নিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত। পদ্মা থেকে উৎপন্ন হয়েছে জলঙ্গি নদী আর জলঙ্গিতে এসে মিশেছে ভৈরব। একটা সময় এই ভৈরবের জলাধারা পুষ্ট করত জলঙ্গিকে। আজ সবটাই অতীত। মানব সভ্যতার করাল গ্রাসে ভৈরবের অস্তিত্ব আজ প্রশ্নের মুখে। অপরিকল্পিত নগরায়নের বিষে জর্জরিত হয়ে নদীর উৎস মুখ বন্ধ হয়ে গেছে, তার ফলে জলধারার গতিপথ দিক পরিবর্তন করেছে ।

বিভিন্ন জায়গায় প্লাস্টিক দূষণ নদীকে বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত করেছে। এর ফলে কোথাও ভৈরব নদী মজে গেছে, কোথাও আবার শুকিয়ে গেছে । নদীর ওপর নির্ভরশীল মৎস্যজীবী পরিবারগুলির কর্মসংস্থানের পথ বন্ধ। এমনকি জলঙ্গী নদীর জল কালো হয়ে মাছ মারা যাচ্ছে। ভৈরবের বুকে বড় বড় চর, সেই চরে চলছে চাষাবাদ এবং গড়ে উঠছে নতুন নতুন বসতি। বর্ষায় যখন নদী খাত ভাসিয়ে দুকুল প্লাবিত করছে, তখন পাড়ের মানুষদের দুর্দশার শেষ নেই। তবে কয়েক বছর ধরে প্রকৃতি আর সেভাবে বর্ষার আয়োজন নিয়ে বসে না, তাই বন্যার প্রকোপ যেমন কম তেমনি কম ফসলে জলের যোগান কিংবা বাজারে মাছের জোগান।

প্রাথমিকভাবে নদী সংস্কারের চেষ্টা করলে হয়তোবা নদীগুলি বাঁচতো কিন্তু এখন অপরিকল্পিতভাবে নদীর বুকের মাটি চুরি হচ্ছে । ফলে নদীর নাব্যতা বাড়ার বদলে পাড় ভাঙছে এবং আরো বিস্তীর্ণ এলাকা নদী খাতে পরিণত হচ্ছে, বর্ষার দুর্ভোগ বাড়ছে। সেদিন খুব বেশি দূরে নেই যেদিন এই নদী খাতগুলিতে বড় বড় বিল্ডিং গড়ে উঠবে। মানুষ ভুলে গেছে পৃথিবীর বড় বড় সভ্যতা গুলি নদীর কূলেই গড়ে উঠেছিল, আজও নদী পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকার চাষে নদীর জল ব্যবহৃত হয়। নদীগুলি মরে গেলে জল সংকটে নতুন এক মাত্রা যোগ হবে যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পক্ষে প্রাণঘাতী।
এই বিষয়ে রাজ্য বা কেন্দ্র – কোনো সরকারেরই কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।