রাজ্য

কৃষকদের দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে নামমাত্র বৃষ্টি


সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ২৪ জুলাই: মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টি হয়েছিল ১৭.৬৯ সেন্টিমিটার। তারপর আর তেমন ভাবে বৃষ্টি হয়নি। মে মাসের ওই বৃষ্টি হয়েছিল ফেনীর দাপটে। কিন্তু তারপর থেকে ঝাড়্গ্রাম-পশ্চিম মেদিনীপুরে মোট সাতবার বৃষ্টি হয়েছে আর তার পরিমান ২২ থেকে ২৪ সেন্টিমিটার। এই অল্প বৃষ্টিতে মাটি তো ভিজলোই না শুধু মাটির উপর ধুলো ভিজিয়ে বিদায় নিয়ে জেলার কৃষকদের কপালে ভাজ ফেলেছে।

এই বছর আর চাষ হবে কিনা সেই নিয়ে কৃষকদের চিন্তার শেষ নেই। এমন পরিস্থিতি হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। তবে তখন ধান গাছ বড় হয়ে ধোড় বেরনো র সময়। সেই বছর নাকি আষাড় শ্রাবনের পর আর বৃষ্টি নামেনি। মাঠের মধ্যে থাকা ক্যানেল, পুকুর, খাল, নদীর জল দিয়েও অভাব মিটলেও শেষ রক্ষা করা যায় নি।

এবারের পরিস্থিতি অন্যরকম। মাঠের ভেতর থাকা সেই খাল, বিল, পুকুর, ক্যানেল সব শুকিয়ে গিয়ে চাষ জমির সমান সমান হয়ে গেছে। ফলে গত তিন বছর অতিবৃষ্টিতে জল বেরতে না পেরে জমির ফসল জমিতেই নষ্ট হয়েছে। এবার যেটুকু বৃষ্টি হয়েছে সেই জল ঠিকমতো ধরে রাখতে না পারার জন্য বিপত্তি আরও বেড়েছে।

জুনে যে বৃষ্টি হয় সেই বৃষ্টিতেই বীজতলা ফেলেন কৃষকরা। তারপর চারা বেরলে ৪৫ দিনের মাথাতে তা জমিতে রোপন করা হয়। এবার জলসংকটে সেই সময়সীমা পার হয়ে গেছে। বৃষ্টি না হওয়াতে ধানচারা শুকিয়ে চৌচির। খাল, বিল, ক্যানেল শুকিয়ে কাঠ। নদীতে দেড়-দু ফুট জল জমলেও সেচের জন্য ব্যবহার এর সুযোগ নেই।

ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পে বাম সরকারের সময় গড়ে উঠেছিল ৮৯ টি রিভার পাম্প, আর মাঠে বসেছিল ৭২ টি ডিপ টিউবওয়েল। আজ সেগুলো অকেজো। কৃষকরা জানিয়েছেন এই দুই জেলার কংসাবতী, শিলাবতী আর সুবর্ণরেখা এই তিনটি মিস্টি জলের প্রধান নদী ও তার অসংখ্য শাখানদীতে বোরো ধান চাষে ৩৭ টি স্থানে সেচদপ্তর থেকে বাঁধ দেওয়া হত। গত তিন-চার বছর সেই বাধ দিয়ে জল ধরে রাখার কাজ বন্ধ রেখেছে মমতা ব্যানার্জী সরকার। এর ফলে সুবর্ণরেখা মরা নদীতে পরিনত হয়েছে। জলস্তর পুরো নেমে গেছে। চাষের জল তো দুর-অস্ত মানুষের পানীয় জলের হাহাকার পড়ে গেছে।

স্থানীয় মানুষ জানাচ্ছেন এই ব্যারেজটা যদি হত তাহলে পানীয় জল, চাষের জল বা সেচের জলের অভাব হত না। তার সঙ্গে দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম মিলিয়ে ১৬ টি ব্লক জুড়ে পুরো এলাকায় সেচের ব্যবস্থা গড়ে উঠত।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।