চৈতালী নন্দী, চিন্তন নিউজ, ২৪ জুলাই: রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরন ও বেসরকারীকরনের জন্যে বলির পাঁঠা করা হলো সেইসব সংস্থায় কর্মরত শ্রমিক ও কর্মচারীদের। বেসরকারী ক্রেতা যারা ঐ সব সরকারি সংস্থা কিনছে তাদের জন্যে কর্মীদের স্বার্থের কথা বিন্দুমাত্র চিন্তা না করে নতুন ক্রেতারা যাতে নির্ভাবনায় দ্রুত ছেঁটে ফেলতে পারে তাদের পুরোনো কর্মীদের যাতে দ্রুততার সঙ্গে ঝুট ঝামেলা ছাড়াই বিক্রি করে দিতে পারে সেইসব সম্পত্তি, তার জন্যে অত্যন্ত উদার নীতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কোম্পানির পুরোনো বকেয়া কর সংক্রান্ত জটিলতা যাতে সহজেই মিটে যায় সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
মোদী সরকারের দ্বিতীয় রাউন্ড শুরু হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত হেলিকপ্টার সংস্থা পবনহংসকে বিক্রীর সময়ে ঢালাও সুযোগ সুবিধা দেওয়ার মধ্যে দিয়ে। অন্যান্য সংস্থা বিক্রির ক্ষেত্রেও পরবর্তী কালে একই রকম সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে বলে কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গেছে।
গত মোদী সরকারের আমল থেকেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিলগ্নিকরন ও বেসরকারীকরনের ক্ষেত্রে এই ঢালাও সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়া শুরু হয়েছিল শ্রমিক স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে। এক্ষেত্রে শ্রমিকদের জীবন জীবিকার প্রশ্নটি সম্পূর্ণ ভাবে উপেক্ষিত থেকে গেছে। যথেচ্ছ ছাঁটাই, স্বেচ্ছাবসরকালীন ও অবসরকালীন ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা অন্যায় ভাবে কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
পবনহংসের বকেয়া করের পরিমাণ হল ৫৭৭ কোটি টাকা যার আইনি জটিলতা থেকে ক্রেতাকে রেহাই দেওয়া হলো। পবনহংস কেনার জন্যে যখন দরপত্র আহ্বান করা হয় একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করেছিল কয়েকটি শর্ত সাপেক্ষে। নতুন মোদী সরকার সেসব শর্ত মেনে নেয়, যেগুলোতে কর্মীদের পিছন থেকে ছুরি মারার সব উপাদান মজুত ছিল।
এরপর আসে এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রির প্রক্রিয়া। তার কর্মচারী নিয়োগ ও কর্মচারীদের পদোন্নতি বন্ধ করে দেওয়া হয়। লাভে চলা একটি কোম্পানিকে কর্মচারীদের দিকে না তাকিয়ে ক্রেতাকে বিশেষ সুযোগ সুবিধা দিয়ে বিক্রির ব্যবস্থা প্রায় পাকা।
এইভাবে মোদী সরকার একটার পর একটা লাভজনক কোম্পানি বিক্রির পরিকল্পনা করে বসে আছেন।