রাজ্য

কর্মসংস্থান নেই, বেকারি কমছে— হাস্যকর দাবি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বাজেট অধিবেশনে।


সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:১২ই ফেব্রুয়ারি:–নতুন কোন শিল্প নেই অথচ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি র বাজেট ভাষনে বললেন বেকারি কমেছে রাজ্যে২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছে আর তার পর এই আট বছর ধরে চলছে তৃনমূল পরিচালিত সরকার।। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে হচ্ছে শিল্প সন্মেলনে।। কিন্তু পশ্চিম বাংলাতে শিল্প তো আসেই নি বরং বন্ধ হয়েছে একেরপর এক কারখানা।। কাজ হারিয়েছেন হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারী।।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাজেট বক্তৃতা যে একেবারে মিথ্যা ভাষন তা বুঝতে পেরেছে শিল্প কারখানার শ্রমিককর্মচারীরা।। একশো বছরের পুরোন ঐতিহ্য পৃর্ন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল।। এই এলাকায় চট শিল্প থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প কারখানা আছে।। তবু বাংলার যুবসমাজ কাজের জন্য দেশছাড়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর বাজেট ভাষণের পর মানুষ গর্জে উঠে”””” দু’হাতে কাজ চাই , শিল্প চাই”””।

মমতা ব্যানার্জি যখন বিজেপি সঙ্গী হয়ে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী ছিলেন তখন কাঁচড়াপাড়ায় রেলের কোচ ফ্যাক্টারীর শিলান্যাস করেছিলেন এবং বলেছিলেন এই শিল্পাঞ্চলে একটিও বেকার যুবক থাকবে না।এখন অভিযোগ উঠেছে তৃনমুল নেতারা ওই শিল্পাঞ্চল থেকে ইট,কাঠ ও কোটি কোটি টাকার গাছ বিক্রি করে দিয়েছে।।দূর্ভাগ্য পশ্চিমবঙ্গের এখন ওই কোচ ফ্যাক্টারীর জমিতে সন্ধ্যায় বসে মদ,জুয়া সাট্টার আড্ডা।।।২০১০ সালে বামফ্রন্ট সরকার নৈহাটিতেে প্রায় একশো একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল।।তারপর পরিবর্তন।। অধিগৃহীত জমির প্রায় নব্বই ভাগ জঙ্গলে ভর্তি।। শিল্পের জন্য জমিতে শিল্প নেই।। অথচ রাজ্যে বেকারি কমেছে।।

নৈহাটিতেে এসে দেখুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষন এর সঙ্গে বাস্তবের কোন মিল নেই।।গত নয় বছরে শিল্পাঞ্চলের একেরপর এক শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে।। তৃনমূলের গুন্ডা বাহিনীর ধ্ব্বংসাত্মক আন্দোলন ও অফিসারদের অমানুষিক নির্যাতন এর জন্য বন্ধ হয়ে যায় কাকিনাড়া টায়ার কর্পোরেশন।। এর ফলে কাজ হারায় শ্রমিক ও কর্মচারী।। কারখানার গেটে কোন নোটিশ ছাড়াই কেন্দ্রীয় সরকার এর পরিচালনাধীন কারখানাটিতে তালা পড়ে যায়।।এখন ওই কারখানার শ্রমিকদের অনেকেই টোটো চালায়, বাজারে সব্জি বিক্রি করে অনেকে অভাব সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন।। অত বড় কারখানা টা দেখতে দেখতে মাঠে পরিনত হয়েছে।।

শ্যামনগরের নিক্কো কেবিল,রাম স্বরূপ নিও পাইপ অ্যান্ড টিউব বন্ধ হয়ে গেছে।।বন্ধ হয়ে গেছে জেসপ,এইচ এম ভি সহ বহু কারখানা।। কর্মহীন শ্রমিক কর্মচারীদের সঙখ্যা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে।। মমতা ব্যানার্জি সরকার কোনদিন কোন কারখানা খোলার ব্যাপারে কোন আন্দোলন গড়ে তোলার প্রয়োজন মনে করে নি।।এই সঙ্কট কালীন অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী দাবি করছেন রাজ্যে বেকারি কমেছে।। এই শিল্পাঞ্চলের সবচেয়ে নামকরা শিল্প চটশিল্প।। সেই চটশিল্প এ এইসমযে ভয়াবহ সঙ্কট।। শ্রমিক কর্মচারীরা চরম আর্থিক সঙ্কটে দিন কাটাচ্ছেন।। কারখানা গুলোতে ঠিকাশ্রমিকে ভর্তি হয়ে গেছে।।

এক মেশিন এক কাজ অথচ শ্রমিক রা সাত আট ধরনের মাইনে পায়।। কাজ করো,পয়সা নাও বাড়ী যাও এই পদ্ধতিতে মিলগুলো চলছে।। শ্রমিকদের কোনো দায়দায়িত্ব মিল কর্তৃপক্ষ নিচ্ছে না।। অথচ এদের সমস্যা সমাধানের জন্য কোনো চেষ্টা নেই কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের।।মিল গুলোতে স্থায়ী শ্রমিক কমতে কমতে ১০%নীচে নেমে গেছে।।সর্বত্র কাজের জন্য হাহাকার।। ঘন অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে গোটা শিল্পাঞ্চল।।।।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।