কলমের খোঁচা

শ্যামাপ্রসাদের নামে বন্দরের নামকরণ, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামেরই অপমান – গৌতম রায়


চিন্তন নিউজ:১৯শে জুন:- চলতি বছরের শুরুতে কলকাতা সফরকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কলকাতা বন্দরের নামকরণ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করবার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এই ঘোষণার পর সংসদের বাজেট অধিবেশন বসেছে। তখন এ সম্পর্কে কোনো আইন জারি হয় নি। তার পরবর্তী সময়ে কোন অধ্যাদেশ ও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা হয়নি। কোভিদ ১৯ কে ঘিরে লক ডাউনের সময় কালে গোটা ভারত জুড়ে যখন একটা ভয়াবহ আর্থিক সংকট, চরম বেকারি , পরিযায়ী শ্রমিকদের ভয়াবহ দুরবস্থা — এইরকম একটি সময়ে ,কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ,দেশের অন্য সমস্ত সমস্যার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে ,কেন্দ্রীয় সরকারের কলকাতা বন্দর এর নামকরণ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির নামে করার বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সেই ভাবনা অনুযায়ী তারা কলকাতা বন্দরের নাম শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করলেন ।শ্যামাপ্রসাদের নামে কলকাতা বন্দরের নাম করন করা সম্পর্কে একটি শব্দ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে আজ পর্যন্ত উচ্চারিত হয়নি ।মমতার এই নীরবতা এটাই প্রমাণ করে যে , কলকাতা বন্দরের যে অংশগুলি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামে নামাঙ্কিত আছে বহু বছর ধরে ,সেই অংশগুলি র ও নামকরণ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করা ঘিরে মমতার কোনো আপত্তি নেই।
আসলে আরএসএস এবং তার রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপির চিন্তা ধারার অন্যতম উদগাতা ,ঘোরতর রাজনৈতিক হিন্দু সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্ব, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কে ঘিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আকর্ষণ এবং পক্ষপাতিত্ব ,সেটা আমরা কিন্তু তাঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরবর্তীকালে , বিভিন্ন কর্মধারা থেকে খুব পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছি ।মমতা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে পর্যন্ত , কংগ্রেস এবং বামপন্থীদের দীর্ঘকালীন শাসনে ,পশ্চিমবঙ্গে কখনোই সরকারি উদ্যোগে শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যু দিন পালিত হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখে সংখ্যালঘু প্রীতির সম্পর্কে নানা ধরনের অভিনয় সূচক কথাবার্তা বলেন।সেই মমতাই আজ পর্যন্ত মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্মদিন নিজের রাজ্যের সচিবালয়ের প্রধান দপ্তর নবান্নে একটিবারের জন্য পালন করেন নি।
ক্ষমতায় এসেই সেই নবান্নতে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু দিন অত্যন্ত সাড়ম্বরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পালন করার ভেতর দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, আরএসএসের চিন্তা ধারা এবং তাদের সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী অবস্থানের অন্যতম উদগাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁর আকর্ষণ, পক্ষপাতিত্ব কোন অংশেই সঙ্ঘ- বিজেপির থেকে কম নয়।
তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামটিকে, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নাম ঢেকে দিতে ব্যবহার করার কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে একটি শব্দও উচ্চারণ করবেন না, এই নিয়ে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।
ভারতবর্ষের জাতীয় আন্দোলনে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় নামক যে ব্যক্তির অবদান সম্পূর্ণ নেতিবাচক সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।রাজনৈতিক হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তিকে একত্রিত করে, রাজনৈতিক হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষার্থে, যিনি সহনাগরিক মুসলমান সম্প্রদায় সম্পর্কে সমস্ত রকমের নেতিবাচক মানসিকতা নিয়ে চলেছেন , হিংসাত্মক মানসিকতা নিয়ে চলেছেন, রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে ভারতবর্ষে হিন্দু মুসলমানের ভিতরে বিভাজনে সব থেকে বেশি সক্রিয় থেকেছেন তাঁর নামে কেন হবে কলকাতা বন্দরের নামকরণ?
বাংলা ও বাঙালির ভেতরে বিভেদের মানসিকতাকে উস্কে দিয়ে শ্যামাপ্রসাদ দেশভাগে সব থেকে বেশি নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছিলেন, সেই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কে ঘিরে বাঙালির আবেগ কোনো অবস্থাতেই থাকতে পারেনা ।শ্যামাপ্রসাদ তাঁর কর্মজীবনের সূচনাপর্বে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে, যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ‘ যবন বর্জিত বিশ্ববিদ্যালয় ‘ হিসেবে পরিচিত করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন , তা গোটা ভারতবর্ষের শিক্ষা আন্দোলনের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় ।
উপাচার্য হিসেবে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় , একদিকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের তোষামোদি করে গেছেন, এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সেই সময়ে যে ছাত্রসমাজ আন্দোলনমুখর হয়েছে ,তাঁদের প্রতি নানা ধরনের প্রশাসনিক ,রাজনৈতিক অত্যাচার ,জুলুম চালাতে সব সময় তৎপর থেকেছেন। সেই শ্যামাপ্রসাদ ই কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মুসলমান ছাত্র-শিক্ষকেরা যথেষ্ট চাপের মধ্যে থাকতে বাধ্য করেছেন। কোন অবস্থাতেই তাঁদের কোনো মানবিক অধিকার যাতে প্রতিষ্ঠিত না হয় সেই ব্যাপারে সব সময় তৎপর থেকেছেন।
এইভাবে ব্যক্তি রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে যে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় একবার কংগ্রেস, পরবর্তীকালে সেখানে স্বার্থ পূরণ না হওয়াতে, হিন্দু মহাসভা ,এবং সেই হিন্দু মহাসভা থেকেও পরবর্তীকালে আরএসএসের রাজনৈতিক সংগঠন ‘ ভারতীয় জনসঙ্ঘে’ র নেতৃত্ব দিয়েছেন, তা ইতিহাসের এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।
পরবর্তীতে গোলওয়ালকার ইত্যাদিদের সঙ্গে তাঁর একদম জীবনের শেষ প্রান্তে কিছু সংঘাত হয়।কারণ, সঙ্ঘের স্বার্থ পূরণে তখন শ্যামাপ্রসাদের প্রয়োজনীয়তা প্রায় নিঃশেষিত।সঙ্ঘ নোতুন হিরো হিশেবে তখন তুলে আনছে দীনদয়াল ঊপাধ্যায়কে।এই দ্বন্দ্ব জনিত কারণে, নিজের রাজনৈতিক টিআরপি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে , দেশের প্রচলিত যাবতীয় আইন-কানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, কেবলমাত্র হিন্দু মুসলমান সম্পর্ক ই নয়, কাশ্মীর কে ঘিরে ,আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় ভারতবর্ষকে খাটো করার তাগিদে, অবৈধভাবে কাশ্মীরে প্রবেশ করেন শ্যামাপ্রসাদ।
এইভাবে একটা ভাবাবেগ তৈরির ভেতর দিয়ে ,গোটা রাজনৈতিক হিন্দু সাম্প্রদায়িক শিবিরকে, প্রবল রকমের রাজনৈতিক মাইলেজ পাইয়ে দিয়ে গিয়েছেন তিনি সেই শ্যামাপ্রসাদের নামে কেন কলকাতা বন্দরের মতন একটি ঐতিহ্যশালী বন্দরের নামকরণ হবে? ভারতের জাতীয় আন্দোলনে যে ব্যক্তিটি বিন্দুমাত্র ভূমিকা নেই, ব্রিটিশ কারাগারে যে ব্যক্তিটি একটি রাতও কখনো অতিবাহিত করেন নি, সেই লোকটির জন্য, বহু শ্রমিকের রক্তস্নাত , কলকাতা বন্দরের নামকরণ কেন হবে ?
জাতীয় আন্দোলনের সময় কালে শ্যামাপ্রসাদের একমাত্র কাজ ছিল; হিন্দু-মুসলমানের ভেতরের সংঘর্ষ লাগিয়ে, ভয়াবহ দাঙ্গায় উসকানি দিয়ে, ব্রিটিশের সহযোগিতা ।তার পাশাপাশি মুসলিম লীগের শক্তি বৃদ্ধি ।মুসলিম লীগের সাম্প্রদায়িক কায়েমী স্বার্থের সঙ্গে অদ্ভুত ধরনের শ্রেণীস্বার্থ জনিত সখ্যতা ছিল শ্যামাপ্রসাদের। ফলে গোটা বাংলা জুড়েই ,মুসলিম লীগের স্বার্থ সংরক্ষিত করবার তাগিদে এবং বিত্তবান উচ্চবর্ণের হিন্দুদের স্বার্থ সংরক্ষণের তাগিদে দেশভাগের জন্য সোচ্চার হয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদ।
১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগ থেকে বিতাড়িত দুর্বৃত্ত গোলাম সারওয়ারের নেতৃত্বে নোয়াখালীতে ভয়াবহ দাঙ্গা হয়। তৎকালীন পূর্ববঙ্গে দাঙ্গার পরিবেশ তৈরিতে , হিন্দু মুসলমানের ভিতরে ভয়ঙ্কর রকমের উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি করে, এক কে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে, সব থেকে বড় অনুঘটকের ভূমিকা পালন করা ব্যক্তিত্বের নাম হল শ্যামাপ্রসাদ ।
একই সঙ্গে ,সেই সময় কালে, কলকাতার বিধ্বংসী দাঙ্গার ক্ষেত্রেও সমস্ত রকমের রাজনৈতিক হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্বৃত্তদের সংঘঠিত করে, তাদের মুসলমান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করা ,প্ররোচিত করা এবং সমস্ত রকমের হিংসায় তাদেরকে নিয়োজিত করার অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব হলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।
এহেন ঘোরতর রাজনৈতিক হিন্দু সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্ব শ্যামাপ্রসাদ, যিনি ফজলুল হক মন্ত্রিসভার সিভিল সাপ্লাই মন্ত্রী হিসেবে ,গোটা বাংলাকে ঠেলে দিয়েছিলেন এক ভয়াবহ মন্বন্তরের মুখে ।তাঁর নিজস্ব পেটোয়া দত্ত কোম্পানিকে সব রকমের সুবিধা পাইয়ে দেওয়া ছিল তাঁর অন্যতম ব্যক্তিগত স্বার্থ ।
সেই শ্যামা প্রসাদের নামে কোনো অবস্থাতেই কলকাতার মত একটি ঐতিহ্যশালী শহরে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ,সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সুমহান ঐতিহ্যশালী কলকাতা বন্দরের নামকরণ হতে পারে না।কলকাতা বন্দরের একটি প্রাচীন বন্দর , যার সঙ্গে ভারতবর্ষের বাণিজ্য ইতিহাসের সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত , সেখানকার নামকরণ হতে পারে না সাম্প্রদায়িক শ্যামাপ্রসাদের নামে।
দেশভাগের অব্যবহিত পরে, জাতীয় সরকার গঠনের সময় জওহরলাল নেহরুর মত উদার, মানবিক, সমাজতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক ব্যক্তিত্ব, শ্যামাপ্রসাদের মতো ঘোরতর সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিকে নতুন আঙ্গিকে, দেশ গঠনের লক্ষ্যে ,কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সভ্য করেছিলেন। শিল্প-বাণিজ্য দপ্তরের দায়িত্ব পর্যন্ত দিয়েছিলেন ।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সভ্য থাকাকালীন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের একমাত্র কাজ ছিল ,কংগ্রেস দলের ভেতরে বল্লভভাই প্যাটেল প্রমুখের নেতৃত্বে যে ঘোরতর রাজনৈতিক হিন্দু সাম্প্রদায়িক ,মৌলবাদী শক্তি জোরদার ছিল ,যাদের একমাত্র কাজ ছিল, নেহরুর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যাবতীয় ভাবনাকে বিঘ্নিত করা , নেহরুর ধর্মনিরপেক্ষ নীতির থেকে ,গোটা দেশকে হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার পথে প্রতিষ্ঠিত করা ,সেই শক্তিকে সাহায্য।
পন্ডিত নেহরু মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শ্যামাপ্রসাদ কেবলমাত্র রাজনৈতিক হিন্দু সম্প্রদায়ের চরিত্রই বজায় রেখে চলেন নি ।আরএসএসের নির্দেশে জনসংঘ তৈরির যাবতীয় কার্যকলাপের ভিতর দিয়ে বল্লভভাই প্যাটেল যে নেহেরু বিরোধী একটি ব্লগ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার ভিতরে অদৃশ্য ভাবে তৈরি করেছিলেন, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল; নেহরুকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলকে দেশের প্রধানমন্ত্রী করা , সেই গভীর ষড়যন্ত্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ।
আপাদমস্তক সাম্প্রদায়িক, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের গভীর, গোপন বন্ধু এবং উচ্চবর্ণের হিন্দু অভিজাত্যের স্বার্থরক্ষাকারী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কোন অবস্থাতেই স্বাধীন ভারতের গণতান্ত্রিক ,ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ পুরুষ হতে পারেন না।জাতীয় আন্দোলনের সময় কালে যিনি সর্বস্তরের মানুষের ব্রিটিশবিরোধী গণপ্রতিরোধকে মুসলিম বিরোধী , বিচ্ছিন্নতাবাদী ভাবনায় পরিণত করতে সবথেকে বেশি তৎপর থেকেছেন, স্বাধীন ভারতে ইতিহাসের আস্তাকুড়েই সেই লোকটির ঠাঁই হওয়া দরকার।
সমস্ত স্তরের হিন্দুদের মুসলমানদের বিরুদ্ধে বেশি রকম ভাবে ক্ষেপাতে উৎসাহিত করাই ছিল শ্যামাপ্রসাদের একমাত্র রাজনৈতিক কাজ। সর্বোপরি হিন্দু অভিজাত, উচ্চবর্ণের শ্রেণীর স্বার্থ সংরক্ষণের ভেতর দিয়ে, এক ই সঙ্গে মুসলিম অভিজাত ও উচ্চবর্ণের মানুষদের স্বার্থ সংরক্ষণ করার কাজ টিও করে , হিন্দু-মুসলমান ,উভয় সম্প্রদায়ের ই, নিম্নবর্গীয় , নিম্নবিত্তের মানুষদেথ আর্থ-সামাজিক- সাংস্কৃতিক, এমনকি ধর্মীয় অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেওয়া এহেন ব্যক্তিত্বের নামে কোন অবস্থাতেই কলকাতা বন্দরের মত একটি ঐতিহ্যশালী সংস্থার নামকরণ হতে পারে না ।
যে বন্দরের আংশিক নামকরণ রয়েছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মতো আত্মনিবেদিত সাম্রাজ্যবাদবিরোধী, সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী ,ধর্মনিরপেক্ষ একজন ব্যক্তিত্বের নামে ।শ্যামাপ্রসাদের মত একজন ঘোরতর সাম্প্রদায়িক, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের দাসানুদাসের নামে সেই কলকাতা বন্দরেথ নামকরণ সভ্যতার কলঙ্ক।এই কাজ ভারতবর্ষের মানুষদের, চিরজাগরুক ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি আত্মনিবেদন, সাম্রাজ্যবাদের প্রতি বিরোধিতার প্রশ্নে জীবন পণ লড়াইয়ের প্রতি একটি চরম অশ্রদ্ধা সূচক সিদ্ধান্ত।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।