কলমের খোঁচা

আজ আর‌ও একটি ভাষা শহীদ দিবস।


মিতা দত্ত: চিন্তন নিউজ:১৯শে মে:- ভাষা মানে সংস্কৃতি। ভাষা একদিকে আমাদের বাঙালী হিসেবে একত্রীকরণ করে, অন্যদিকে ভাষা যত সমৃদ্ধ হবে বিশ্বে আমাদের মান তত বাড়বে।

আমাদের মাতৃ ভাষা রক্ষার জন্য দু’বার বাংলা মায়ের সন্তানেরা আত্মবলিদান দিয়েছে। কিন্তু তাদের বলিদান থেকে মানুষ আদৌ কিছু শিখেছে !!!আমরা বছরে দুইদিন উদযাপন করি। কিন্তু তারা কি সত্যিই শুধু এই উদযাপন চেয়েছিলেন!!!

বাঙালি এখনো ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে বেরোতে পারেন নি। ইংরেজী ও হিন্দি ভাষার দাপটে আমরা বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর একাংশ নিজেদের সংস্কৃতি বিকিয়ে দিচ্ছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণির একাংশ মনে করে তাদের সন্তানকে ইংরেজী বা হিন্দী শিখলেই চলবে, বাংলা কিই বা কাজে লাগে। সন্তানদের মধ্যে তাদের মাভাষার প্রতি শ্রদ্ধা চলে যাচ্ছে। তারা কেমন একটা কিম্ভূত কালচারে বড়ো হচ্ছে।

আমরা রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করি, কিন্তু রবি ঠাকুর যে বলে গেছেন, “মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধের সমান” তাঁর সেই কথাকে মান্যতা দিই না “আমরা। ভাষা আমাদের কারণে তার গৌরব হারাচ্ছে।

অথচ যে জাতি উন্নতির শিখরে উঠেছে, তারা মাতৃভাষাকে মান্যতা দিয়েই। আমরা নকলনবিশ হয়ে পড়ছি। এই সুযোগে শিক্ষাকে বিক্রি করার জন্য একশ্রেণির পুৃঁজিপতিগোষ্ঠী বাজারে হাজির। আমরাও চড়া দামে শিক্ষা কিনছি। নিজে বাংলা মিডিয়ামে পড়াচ্ছি, সন্তানকে দিচ্ছি ইংরেজী মিডিয়ামে। ঘরের টাকা বাইরে দিচ্ছি ।ওদিকে ইংরেজী মাধ্যম বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকদের কম বেতন দিচ্ছে, তারা শোষিত হচ্ছে, পুঁজির পাহাড় গড়ছে। সরকার এই সুযোগে শিক্ষাকে বেসরকারিকরণে করছে। আমরা নির্বিকার। আপনার সন্তান বেসরকারিতে চাকরি করবে তার পরিণাম ভয়াবহ তা করোনো ভাইরাসে উদ্ভূত। পরিস্থিতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো।

তাই আসুন আমরা নিজের ভাষার প্রতি যত্নবান হই। বিদেশী ভাষা অবশ্যই শিখবোও সন্তানকে শেখাবো, কিন্তু মাভাষাকে মর্যাদা দিয়ে। আমাদের মাতৃভাষা জ্ঞানীজনদের হাত ধরে সন্মানের আসনে অধিষ্ঠিত। জ্ঞানীজন ইংরেজী ভাষা রপ্ত করেছে কিন্তু মাভাষাকে সমৃদ্ধ করে। আমরা দাবী করি মাভাষাকে রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা দিতে হবে ।শিক্ষার বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।তবেই শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হবে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।