কল্পনা গুপ্ত, চিন্তন নিউজ, ২৩শে জুন: ১৯৪৮ সালের ২৩শে জুন সাহিত্যিক নবারুণ ভট্টাচার্য জন্মগ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরে। তাঁর জন্ম হয়েছিলো সাহিত্য, শিল্প, সিনেমা ও নাট্যজগতের নক্ষত্র পরিমন্ডলে। তাঁর দাদু ছিলেন মনিষ ঘটক যিনি কল্লোল গোষ্ঠীর স্বনামধন্য লেখক। মনিষ ঘটকের কন্যা মহাশ্বেতা দেবী হলেন নবারুন ভট্টাচার্যের মা। মহাশ্বেতা দেবীর মা ধরিত্রীদেবীও ছিলেন লেখিকা ও সমাজসেবী।
মহাশ্বেতাদেবীর কাকা ছিলেন ঋত্বিক ঘটক। যাঁর চিত্র জগতে ছিলো এক অসামান্য মৌলিক অবদান। তিনি সম্পর্কে নবারুণ ভট্টাচার্যের দাদু হন। দাদু ও মা পদ্মশ্রী খেতাবে ভূষিত। মা মহাশ্বেতাদেবী পদ্মভূষণ ইত্যাদি খেতাবে ভূষিতা ছিলেন। তাঁর লেখার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিলো ট্রাইবাল জনগণের সুখদুঃখ, তাদের চাওয়া পাওয়া। অরণ্যের অধিকার, হাজার চুরাশির মা, অগ্নিগর্ভ ইত্যাদি রচনা করেন তিনি। নবারুণ ভট্টাচার্যের বাবা ছিলেন বিজন ভট্টাচার্য। তিনি ছিলেন ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশনের সদস্য।
স্কুলজীবনে নবারুণ ভট্টাচার্য বালিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথমে জিওলজি পরে ইংরেজি বিষয়ে পড়েন। ১৯৭৩ সালে একটি বিদেশি সংস্থায় কাজে যোগ দেন এবং ১৯৯১ পর্যন্ত সেখানে কাজ করেন।
তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘হার্বার্ট’। এরজন্য তিনি সাহিত্য একাদেমি পুরষ্কার পান। ২০০৫ সালে সুমন মুখোপাধ্যায় হার্বার্টের চলচিত্রায়ণ করেন। এছাড়া তাঁর বিখ্যাত রচনা অন্ধবিড়াল, ফ্যাঁতারু। বাংলা সাহিত্যে তাঁর রচনা এক ভিন্নতর স্বাদের। লেখার বিষয়গুলোর মধ্যে অতিসাধারণ মানুষের চলাফেরাকে তিনি উড়ন্ত ঘুড়ির মত দেখেছিলেন যার একটা শব্দ তিনি শুনতে পেতেন। এই শব্দ যেন মন্ত্রের মতন হয়ে উঠত। একে সঙ্গীতে রূপ দিয়েছে বাংলা গানের জনপ্রিয় ব্যান্ড চন্দ্রবিন্দু। কাঙাল মালসাট তাঁর বিখ্যাত রচনা।
তিনি ১৯৯৭ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরষ্কার ও ১৯৯৬ এ বঙ্কিম পুরষ্কার পান। তিনি ‘নবান্ন নাট্যগোষ্ঠী’ পরিচালনা করেছেন। ২০১৪ সালের ৩১শে জুলাই আন্ত্রিক ক্যানসারের কারণে কলকাতা ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন ৬৬ বছর বয়সে মারা যান।