শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

কিশোর কিশোরীদের মানসিক গঠন বোঝা বড়দের কর্তব্য।


সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ :২১শে জুলাই :—শিশু দের অভিমান বুঝুন——–কিছু বাচ্চা থাকে তারা তাদের নিজেদের খেলাধুলো —–লেখাপড়া —–গানবাজনা নিয়ে থাকে।। আবেগ নিয়ে অতশত মাথা ঘামায় না।। আবার কিছু কিছু বাচ্চা আছে তারা ছোট থেকেই খুব অনুভুতি প্রবণ।।অল্পেই কাঁঁদে —-অভিমান করে—-ধরা যাক স্কুলে কেউ না বলে তার টিফিন খেয়ে নিয়েছে বা চুল ধরে টান দিয়েছে তখন সে প্রতিবাদ করতে পারে নি কিম্বা টিচাররা তাকে বকেছে।। সে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারে নি ——মনের ভিতর কষ্ট জমিয়ে রেখেছে।। সবথেকে মুশকিল এই অতিসংবেদনশীল বাচ্চাদের নিয়ে—–কিছু দুঃখ—কষ্ট পেলে তারা নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে কিন্তু তার আপনজনেরা সেটা বুঝতে না পারলে বা সে নিজে বোঝাতে না পারলে সে আরও বেশী মনকষ্টে ভোগে।। আবার তারা আর কোন উপায় না পেয়ে সকলের সামনে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলে।। সংবেদনশীল বাচ্চাদের একটা বৈশিষ্ট আছে।। তারা যেমন নিজের আবেগ কে গুরুত্ব দেয় তেমন অন্যের প্রতিও সহমর্মিতা প্রকাশ করে।। তারা এতটাই আবেগপ্রবন হয় যে বাবা মায়ের কথায়—-বন্ধুদের কথায় বা ছেলেবন্ধু বা মেয়েবন্ধুদের কথাতে আঘাত পায়।। মনখারাপ জমে জমে বিষাদ আসে মনে।। অবসাদগ্রস্ত হতে শুরু করে।। এরা তখন লোকের সাথে কথা বলা কমিয়ে দেয়——বারবার বলে ভাল লাগছে না——পড়াশুনো করতে চায় না——খাওয়া কমে যেতে পারে আবার বেড়ে যেতে পারে —–অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ করে——অকারণে পেটব্যাথা বা মাথা ধরার কথা বলে।। যখন বাচ্চাকাচ্চা এমন করে বাবা মা দের উচিৎ খুব সতর্ক হয়ে যাওয়া উচিৎ।। বাচ্চা অল্পে কেঁদে ফেলছে বা চুপ করে যাছে এমন হলে কখনই “”ন্যাকা”” বলবেন না।। বরং বলুন জানি তুমি খুব সেনসিটিভ। বলবেন না “”ঘ্যানঘ্যান করিস না তো”””—-ওর আবেগ টাকে গুরুত্ব দিন।। বলুন সেনসিটিভ হওয়া ভাল তবে এত অল্পে আঘাত পেতে নেই।।সমস্যা বয়ঃসন্ধি তে আরও বাড়ে।। এই সময় বাচ্চাদের শরীর বাড়ে কিন্তু মন তেমন ভাবে বড় হয় না।। বাবা- মার মাথায় মাথায় হয়ে যায় বলে তারা মনে করে তারা বড় হয়ে গেছে বাস্তবে তারা তত বড় হয় না।। ফলে দুমদাম করে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করা এই বয়েসের ধর্ম।। এরা সারারন মনকষাকষি তে নিজের জীবন শেষ করে দিতে পিছপা হয় না।।। সন্তান যে একটা সম্পর্ক এ জড়িয়ে পড়েছে তা বোঝার উপায় হল ——–খেয়াল করুন বাচ্চা প্রাইভেসির ব্যাপারে বেশী সতর্ক কি না???ঘর বন্ধ করে রাখার প্রবনতা দেখা দিচ্ছে কিনা??? আবার অনেক বাচ্চা লুকিয়ে লুকিয়ে ডায়েরী লেখে। উপহার পেলে সেটা বেশ যত্ন করে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে আর সেই জায়গাতে কারুকে হাত দিতে দেয় না।। সন্তান এমন আচরন করলে কখনই রাগারাগি করবেন না।। কিন্তু ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখা একেবারেই সমর্থন করবেন না।। ঠাণ্ডা মাথায় বোঝান আগে পড়াশুনো করে বড় হয়ে যাও তারপর এসব নিয়ে ভাবা যাবে।। প্রথমেই জোর করে বাধা দিলে বাচ্চা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।। মাধ্যমিক পাশ না করা অবধি বাচ্চার হাতে মোবাইল দেবেন না।। তবে এখনকার পরিস্থিতি অনুযায়ী পড়াশোনা বা কোচিং করতে বাচ্চা কে দূরে যেতে হয়।। এই সময়ে সবসময় সাধারন ফোন দিন।।। এই বয়েসে দামী ফোন হাতে পেলে ওই ফোন এর প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাবে।।। এই থেকে এক নতুন সমস্যার সৃষ্টি হবে।। ফোন ব্যাবহারের সময়সীমা বেধে দিন।। বাবা মাদেরও উচিৎ সবসময় বাচ্চার সামনে ফোন নিয়ে ঘাটাঘাটি না করা।। ওরা যা দেখে তাই শেখে।। তার থেকে বাচ্চার সামনে বই পড়ুন —-গান শুনুন।।। আপনি যা করবেন বাচ্চা তাই করবে।। ওদের সাথে গল্প করুন—–আপনি ছোট বয়েসে কি করতেন??? এটা একদম ঠিক নয় যে ওকে যেটা বারন করছেন সেটা আপনি অবলীলায় করে যাচ্ছেন।। সুস্থভাবে শিশুদের বাড়তে দিন——–ওদের প্রতি কঠোর না হয়ে বুঝিয়ে বলুন আর মারধোর একদম করবেন না।।।।।। বোঝান ওদের ——ভালবাসুন ——-ওরা নিজেরা এই পৃথিবীতে আসে নি —–ওদের বাঁঁচতে দিন…………….


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।