সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ২১ জুলাই: আশঙ্কা একটা ছিল রেগা প্রকল্প নাকি বন্ধ হয়ে যাবে। এবার এই আশঙ্কাটাই সত্যি হতে চলেছে, কোটি কোটি গ্রামীন শ্রমজীবী মানুষের ভরসা “এম.এন. রেগা” চিরতরে বন্ধ করে দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর এমনই ইংগিত দিয়েছেন। এই প্রকল্পটি আর কেন্দ্রীয় সরকার আর চালিয়ে নিয়ে যেতে চায় না। তার এই ঘোষনার পরই সারা ভারত ক্ষেতমজুর ইউনিয়ন তীব্র বিরোধীতা শুরু করেছে।
“একশো দিনের কাজের প্রকল্প” হিসাবে সুপরিচিত এই রেগা প্রকল্প চালু হয়েছিল ২০০৫ সালে প্রথম ইউ পি এ সরকারের সময়। তখন গ্রামের কোটি কোটি মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছিলেন। তখন বামপন্থীদের চাপে রীতিমতো আইন পাশ করিয়ে এই প্রকল্পটি চালু হয়। গরীব গ্রামের মানুষ এর ফলে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিল।
“রেগা” তুলে দেওয়ার পক্ষে এক হাস্যকর যুক্তি শুনিয়েছেন তোমর। যেমন মোদী “আচ্ছে দিন” এর ব্যর্থ স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন আর এটা তিনি স্লোগান এর মতোই ব্যবহার করেছিলেন, তেমন তোমর বলেছেন এই প্রকল্পটি গরিব মানুষের জন্য হয়েছিল কিন্তু মোদী দেশকে গরিবমুক্ত করবেন তাই এই প্রকল্পের আর কোন যুক্তি নেই।
এবারের বাজেট প্রস্তাব বিতর্ক চলাকালীন বিভিন্ন সাংসদ উদ্বেগ জানিয়েছেন এই রেগা খাতে বরাদ্দ কমে যাওয়া নিয়ে। যেখানে রেগাতে বরাদ্দ বাড়ান দরকার সেখানে সরকার বরাদ্দ কমিয়ে দিল ১০৮৪ কোটি টাকা। লোকসভায় এই জনবিরোধী ঘোষনার পরেই প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন। তারা জোরালো ভাবে জানিয়েছেন সরকার এমন কাজ যদি করে তবে তারা এই আক্রমণের প্রতিবাদে সোচ্চার হবেন।
এর আগে মোদী সংসদে বলেছিলেন যে কংগ্রেসের ব্যর্থতা দেখানোর জন্য তারা এই প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছেন। গ্রামের গরিব মানুষ কাজের সুযোগ পাচ্ছে না। সেই গরিবের প্রতি বিজেপি সরকারের সত্যিকার মনোভাবটা তোমর-এর মন্তব্যে স্পষ্ট হচ্ছে। রেগা তুলে দেওয়ার পদক্ষেপ কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন খেত মজুর ইউনিয়ন।
রেগার সাফল্য তুলে ধরতে খেতমজুর ইউনিয়ন বলেছে গত দশকে গ্রামীণ ভারতের অর্থনীতি ও কৃষিক্ষেত্রে চরম সংকট ও দূর্দশার সময় এর কার্যকারিতা বোঝা গেছে। রেগার জন্যই গ্রামীণ শ্রমজীবী জনতার জীবনজীবিকা টিকে আছে। সমাজের দূর্বলতর অংশের কর্মপ্রার্থিরা একসঙ্গে রেগার সুযোগ পেয়ে থাকেন। আর এই কারণেই এই প্রকল্পকে আরও জোরদার করতে হবে আর এর বাস্তবায়ন সুনিশ্চিত করতে হবে।