দেশ রাজ্য

উভয় সঙ্কটে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকরা।।


সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:.১১ই জুন:- ভিন রাজ্যে কাজের জন্য যাওয়া শ্রমিকদের অনেকেই নিজের গাঁ ঘর কে ” দেশ’ বলেন।। মুম্বাইয়ের গয়না কারখানাতে কাজ করেন কারিগর প্রশান্ত পাল। তাঁর দেশ হুগলি জেলার সিঙ্গুরে।।এই লকডাউনে কেমন আছেন প্রশান্ত পাল??

তাঁর বক্তব্যে ক্ষোভ ঝরে পড়লো। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য সিঙ্গুরে যদি গাড়ীর কারখানাটা হোতো, তবে দেশের মানুষ এর আর কাজের অভাব থাকতো না।।। দেশ ঘর ছাড়ে মুম্বাইয়ের গয়না কারখানাতে কাজ করেন কারিগর প্রশান্ত পাল।। দেশে কাজ পাননি তাই তাঁকে বিদেশ যেতে হয়েছে।। তাঁর দেশ হুগলি জেলার সিঙ্গুরে। যেত __এই বিপদের মধ্যে আর ভিন রাজ্যে কাজের জন্য পড়ে থাকতে না।।

করোনা সংক্রমণ আর তার জেরে মাত্র চার ঘন্টার নোটিশে একটা অপরিকল্পিত লকডাউন পরিস্থিতিতে বাড়ী ফিরতে পারেন নি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ওই মুম্বাইতে পড়ে আছেন ।। এদিকে জমানো টাকাপয়সা নেই , কাজ নেই তবু দেশের মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে না দিয়ে ওখানেই আছেন।।

প্রশান্তর মতো আরও অনেক কারিগর পড়ে আছেন মুম্বাইতে যেখানে করোনা সংক্রমণ সব থেকে বেশী ভারতবর্ষের মধ্যে।বৈদ্যবাটি, নালিকূল, হরিপাল , চাঁপা ডাঙায় তাদের দেশ।। মুম্বাইতে থাকতে থাকতে আর সর্বদাই মৃত্যুভয় তাদেরকে আরও বেশী করে মনে পড়াচ্ছে তাদের দেশের কথা।। আর এক শ্রমিক দেবব্রত কোলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সরকার বলেছিলেন যে ১০০ দিনের কাজ সকলের জন্য বাঁধা কিন্তু ওরা খবর নিয়ে জানতে পেরেছেন যে দেশের মানুষ ১০০ দিনের কাজ পাচ্ছে না।। কাজ হারানো শ্রমিকরা মুম্বাইতে কেউ আনাজ পত্র বিক্রি করছেন বা কেউ অন্য কোথাও কিছু অল্পস্বল্প কাজ করছে কিন্তু এই কাজ করে কিছুতেই সংসার চালানো যাচ্ছে না ।। দেশে আসতে গেলে করোনা সংক্রমণ এর ভয়, আর না আসতে পারলে, না খেতে পেয়ে মরণ নিশ্চিত । উভয় সঙ্কটে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকরা।।

সিঙ্গুর এর বেড়াবেড়ীর প্রদীপ বাউড়ি এখন নিজ কৃতকর্মের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন। টাটা মোটরসের কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য আন্দোলনে সামিল ছিলেন।। “চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে” এই প্রবাদ বাক্যের সঙ্গে একমত এখন তিনি __জানিয়েছেন এই ধ্বংসাত্মক রাজনীতিতে সামিল হয়ে নিজেদের জীবন জীবিকা বিপর্যস্ত করেছেন। সবার উপলব্ধি যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন, যাতে রতন টাটার ন্যানো গাড়ীর কারখানাটা হয়।। একটা কারখানা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে ছারখার করে দিয়ে কারুর কোন লাভ হয়নি।। শুধু পশ্চিমবঙ্গের মানুষ গুলো বাইরে কাজ করতে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিক এর নামে ভূষিত হয়েছে।। ভাতের অভাব যাদের হবার কথাই নয় আজ তারা ভাতের অভাবের সঙ্গে করোনা সংক্রমণ এর আতঙ্কে ভুগছে।।।



মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।