মহাশ্বেতা চ্যাটার্জি, চিন্তন নিউজ, ২৭ এপ্রিল: বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সি পি আই( এম) প্রার্থী কমঃ আভাস রায়চৌধুরীর সমর্থনে এক বিশাল জনসভা আয়োজিত হয় বর্ধমান টাউনহল ময়দানে। এই সভার মূল বক্তা ছিলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, সি পি আই (এম) পলিট ব্যুরো সদস্য মানিক সরকার। শুক্রবার বিকেলে ঝড়-বৃষ্টি কে উপেক্ষা করে বহু মানুষ আসেন মানিক সরকারের বক্তিতা শোনার জন্য।অধির আগ্রহে ১ ঘন্টাখানেকের ওপর শোনেন তাঁর কথা।
জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মানিক সরকার বলেন বিজেপি আর তৃণমূল মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি আজ গনতন্ত্র নিয়ে গলা ফাটাচ্ছে। আর ত্রিপুরাতেপঞ্চায়াতে, ৯৯ শতাংশ আসনে রিগিং করে ভোট লুট করে জিতেছে।পশ্চিমবঙ্গে ও তৃণমূল কি ভাবে ভয় দেখিয়ে ভোট লুট করেছে তা তো সকলের জানা। দুই দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে ভোট লুটে কে হয় চাম্পিয়ন।
এই ১৮ মাসে বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার কি ভয়ঙ্কর সন্ত্রাস নামিয়ে এনেছে তার বর্ণনা করেন। এই লোকসভা নির্বাচনেও
পশ্চিম ত্রিপুরাতে ভোট লুট, হামলা, পুলিসের সামনে এজেন্টদের মারধোর, ব্যাভিচার করে বিজেপির বর্গীবাহিনী।
কিন্তু এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ত্রিপুরার মানুষ গর্জে উঠেছে প্রতিরোধ গড়ে তুলে পূর্ব ত্রিপুরায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ভয়ঙ্কর আক্রমণের সামনে মাথানত করেন নি সাধারণ মানুষ। ফ্যাসিস্ট শক্তির সামনে চোখে চোখ রেখে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে গোটা ত্রিপুরাবাসী। তিনি বলেন মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে পৃথিবীর এমন কোন শক্তি নেই তাকে ঠেকায়।
ত্রিপুরায় বিজেপি ৮৫০ টি বুথে ভোট লুট করে যে ভাবে গণতন্ত্রের অন্তর্জলি যাত্রা ঘটিয়েছে মানুষ ওদের গণতন্ত্রের শুধু শত্রু নয় ডাকাত বলে চিহ্নিত করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গে কে রঙ্গমঞ্চ বানিয়েছে বিজেপি ও তৃণমূল, মঞ্চে রাম রাবনের যুদ্ধ হচ্ছে আর পিছনে গিয়ে একসঙ্গে তামাক সেবন করছে।আসলে এরা যমজ ভাই। দুই অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করতে হবে।তৃণমূলের দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে যারা বিজেপি কে আনার কথা ভাবছেন
তাঁরা ভুল করবেন। কেন্দ্র এই ৫ বছরে বিজেপি একচেটিয়া পুঁজিপতিদের স্বার্থ
দেখেছে। প্রতিশ্রুতি রক্ষা তো হয় নি! উল্টে মানুষ কাজ হারিয়েছেন, কৃষক হত্মহত্যা করেছে, বেকারত্ব বেড়েছে। মোদী যে নীতি নিয়েছে তা কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-যুব, কর্মচারী, আদিবাসী ও গরিব মানুষের স্বার্থ বিরোধী। বিজেপি গনতন্ত্রের শত্রু নয় ডাকাত। এই সরকারে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা সুরক্ষিত নয়।
ধর্মে ভিত্তিতে বিভাজন নয়, বামপন্থীরা চান পেটের ভাত আর হাতের কাজ।
১৮০০হাজার টাকা নুন্যতম মজুরী ও ৬ হাজার টাকা কৃষি পেনশন। সংসদে এই সব কথা বলতে পারে শুধু বামপন্থিরাই।
তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন এক আবেদন এর মাধ্যমে, বামপন্থিদের শক্তিশালী করতে, ভোট লুট রুখতে, এবং মাথা উঁচু করে দাঁড়ানর কথা বলেন। নিজের অধিকার কে প্রতিষ্ঠিত করতে , নিজের ভোট নিজে দিতে এবং দৃষ্টান্ত স্থাপন করার মত প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা বলেন।