চৈতালী নন্দী:চিন্তন নিউজ:২৭শে নভেম্বর:–নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে কেন্দ্রীয় অনুমোদন ছাড়াই কেন্দ্রের জমি এবার উদ্বাস্তুদের।।নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে এবার কেন্দ্রীয় সরকারের ও ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমিতে পরিকল্পনাহীন ভাবে গড়ে ওঠা উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের ,ফ্রি হোল্ড’ বা দলিল তুলে দেবে রাজ্য সরকার।সোমবার নবান্নের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী।আপাতদৃষ্টিতে এই সিদ্ধান্ত জনকল্যান মূলক একটা পদক্ষেপ তাতে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই।কিন্তু সমস্যা হোলো এইভাবে রাজ্যসরকার কেন্দ্রীয় সরকারের বা ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি হস্তান্তর করতে পারে না।ঐসব জমি উদ্বাস্তু পরিবারের হাতে তুলে দিতে গেলে আগে ঐ জমির মালিকানা রাজ্যের হাতে আনতে হবে।সেই কাজের জন্যে চাই কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় দপ্তরের অনুমোদন মিললে ঐ জমিকে অধিগ্রহণ করতে হবে,যা একটা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ পদ্ধতি।কারন এই অধিগ্রহণ ছাড়া হস্তান্তর সম্ভব নয়।এবার কেন্দ্রের হাতে থাকা জমি রাজ্যসরকার উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে অধিগ্রহণ করে নেবে।
কিন্তু কেন্দ্রের অনুমোদন ছাড়াই কিভাবে মন্ত্রীসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হোলো।কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকা মোট জমির পরিমাণ ৯৭৩ একর এবং ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমির পরিমাণ ১১৪ একর।প্রকৃতপক্ষে রাজ্যসরকারের এইধরনের নিয়মবিরুদ্ধ সিদ্ধান্ত একটা রাজনৈতিক চমক ছাড়া আর কিছু নয়।কারন সামনে একটা বছর বাদ দিলেই আসছে কর্পোরেশন ও বিধানসভা ভোট।এছাড়া এনআরসি নিয়ে কোনও সমাধানের পথে না গিয়ে তা জিইয়ে রাখতে চাইছে রাজ্যসরকার।পরে যা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হবার রাস্তা খোলা থাকবে।রাজ্যসরকার যদি সঠিক সমাধানের রাস্তায় হাঁটতে চাইতো তবে আগেই প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে জমি চেয়ে চিঠি দিতে পারতেন।তাছাড়া ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমিতে যে ৯৯৮টি কলোনি রয়েছে সে নিয়ে চুপ রাজ্য সরকার।এছাড়াও স্বীকৃতি হীন বহু কলোনি ও রয়েছে।
এরআগেই রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরের হাতে থাকা জমি উদ্বাস্তু পরিবার গুলি র হাতে দলিল সহ তুলে দেবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।কাজ সামান্য শুরু হলেও ৫০% জমি এখনও হস্তান্তরের কাজই করে উঠতে পারেনি রাজ্য।৯৪ কলোনির মধ্যে দুএকটি কলোনি ছাড়া এখনও এই কাজ শুরু ই হয়নি।
এই নিয়মবিরুদ্ধ অধিগ্রহনের আর একটা অসুবিধা ও রয়েছে।কেন্দ্রীয় সরকারের রেল,বন্দর,প্রতিরক্ষা সহ যেসব জমি অধিগ্রহণের কথা বলা হচ্ছে ,ভবিষ্যতে সেইসব দপ্তরের সম্প্রসারণের জন্যে জমির প্রয়োজন হলে তার কোনো সুযোগ থাকবেনা। সম্মিলিত কেন্দ্রীয় বাস্তুহারা পরিষদের নেতা দীপক ভট্টাচার্য্যের মতে কেন্দ্রীয় অনুমোদন ছাড়া এইধরনের ঘোষণা আসলে মূল্যহীন।কারন সরকারের জমি হস্তান্তরের নিয়ম না মেনে তা করা হলে তার উদ্দেশ্য নিয়েই সন্দেহের অবকাশ থাকে।