রঘুনাথ ভট্টাচার্য্য:চিন্তন নিউজ:৪ঠা ফেব্রুয়ারি:–ভূমিকম্পই হোক বা প্লাবন, বিদেশী আগ্রাসন বা দেশজ গদ্দারি, যাই আসুক না কেন কলকাতা থেকে যায় কলকাতাতেই। কোনো আঁধার এখানে চিরস্থায়ী হয় না। তাই….৪৪তম কলকাতা পুস্তক মেলা রমরমিয়ে চলছে বাঙালির জনতার বইমেলা হয়ে। সঙ্গে আছেন ত্রিপুরা তাঁদের স্বকীয় উজ্জ্বল উপস্থিতি নিয়ে।
খবর হচ্ছে , কলকাতা বইমেলা শহরে মধ্যে জায়গা না পেয়ে কলকাতার বাইরে অন্য জেলায় চলে গেছে।অনেকের কাছেই মনে হচ্ছে, এটা অনভিপ্রেত ছিল।যাই হোক, সেখানে কিন্তু ভীড় ক্রমশ বাড়ছে। ফলে বাড়ছে বইয়ের বিক্রি ।বইয়ের পোকারা তো যাবেনই। তাঁদের কে আটকায় ?জনসমাগমের ক্লান্তি নেই। প্রকাশকদের মুখে হাসি। ‘বইমেলার’ আরো শ্রীবৃদ্ধি কামনা করি।কেউ কেউ বললেন, আরও একটা বইয়ের মেলা হোক না !নাম হোক ‘গ্রন্থমেলা ‘।
প্রসঙ্গে ফিরে এসে দেখি কে নেই ‘পুস্তকে’ ! প্রফুল্ল রায় মশাই, সুচিত্রা ভট্টাচার্য, বাণী বসু, ভগীরথ মিশ্র, কিন্নর রায়, প্রচেত গুপ্ত-রা আছেন । সুনীল-শীর্ষেন্দু-শঙ্কর-নবনীতা আছেন মেলা আলো করে।চারিদিকে ছড়িয়ে আছেন জীবন নাইয়ারা মেলার চোখের দিকে তাকিয়ে। নানা জ্ঞাণসাগরের নাবিক তাঁরা।কেউ বিজ্ঞানের সাহিত্যের, কেউ সাহিত্যের বিজ্ঞানের, কেউ দেশপ্রেমের কেউ প্রেমেরদেশের। শিশু-সাহিত্য, কিশোর-সাহিত্য, রহস্য-রোমাঞ্চ , সমস্ত শাখাপ্রশাখায়যাঁদের সরল সহজ বিচরণ।
আর আছে ত্রিপুরা তাঁদের জ্ঞাণ-বিচিত্রা তোআমাদের কাছে ,সমস্ত মেলা প্রেমীর কাছে পরিচিত , এবং সমাদৃত সমাজমুখী বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থের ভান্ডার এই বিজ্ঞান সাহিত্যকেন্দ্র। উল্লেখযোগ্য যে, এই নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ পাচ্ছে নিয়মিত।
শিশুসাহিত্য সংসদ এসেছেন ‘পুস্তক’-য়ে তাদের সম্ভার নিয়ে। কৌতুহলী পাঠককুল আকুল হয়ে দেখছেন ডঃ অসীম দাশগুপ্তের আর্কটিক অ্যাডভেঞ্চার, শান্তনু বসুর নসিবপূরের ভুত , আরও কতকিছু। ছাত্রছাত্রীদের জন্য পাঠ্যপুস্তকের স্টলেও ভীড়ের কমতি নেই।
এত বইয়ের সমারোহের মধ্যে জীবনের গানেরও অভাব নেই। বঙ্গ জীবনে রাজনীতি হল যেন সুক্তো-বড়িতে সর্ষে-ফোড়ন।বই খুঁজে দেখতে দেখতে কানে এলো , -‘বুঝতে পারি না , এত বড় একটা দল,এত বড় সংগঠন, অথচ এরা কি কেউ ইতিহাস উল্টে দেখে না । বুক ফুলিয়ে তরপে চলেছে সিএএ- এন আরপি-এন আর সি। না মানলে বলছে গুলি করে দেবে।এদের কী করতে হয় জানো ? দিতে হয় এক পিস্ ‘দেশভাগ থেকে নকশাল ‘ হাতে ধরিয়ে।
কোথায় যেন গান চলছে,-‘ এবার তবে জ্বালো, আপন তারার আলো।’ ঝুলি ভর্তি করে বই নিয়ে
ছেলে মেয়েরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছে, দেখে প্রাণ ভরে গেল।