খেলাধূলা রাজ্য

রাজ্য প্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করলো জলপাইগুড়ি।।


দীপশুভ্র সান্যাল: চিন্তন নিউজ:- ১৯/০২/২০২৩,  রবিবার  শেষ হলো ৩৮ তম রাজ্য প্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। রাজ্যের ২৪টি জেলা থেকে ৭২১ জন প্রতিযোগী এই রাজ্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।ইভেন্ট ছিল মোট ৩৪টি। জলপাইগুড়িতে আয়োজিত রাজ‍্য প্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সার্বিকভাবে চ‍্যাম্পিয়ন হয় জলপাইগুড়ি জেলা। রানার্স দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং তৃতীয় হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা।  জানা গেছে অ্যাথলেটিক্সে ৪৩ পয়েন্ট পেয়ে চ‍্যাম্পিয়ন হয়েছে জলপাইগুড়ি। ৩২ পয়েন্ট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে দক্ষিণ২৪ পরগনা জেলা। পুরুলিয়া জেলা ২১ পয়েন্ট পেয়ে তৃতীয় হয়েছে।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।    সফলভাবে প্রতিযোগিতা সমাপ্ত হওয়ায় খুশি আয়োজক কমিটির কর্মকর্তা‌রা। প্রতিযোগিতা‌র উদ্বোধন করেছিলেন মন্ত্রী ব্রাত‍্য বসু।
অ্যাথলেটিক্সে বালক বিভাগে ১৮ পয়েন্ট পেয়ে চ‍্যাম্পিয়ন হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা। পুরুলিয়া জেলা ১৫ পয়েন্ট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। ১০ পয়েন্ট পেয়ে যুগ্মভাবে তৃতীয় হয়েছে মুর্শিদাবাদ ও নদীয়া জেলা।

অ্যাথলেটিক্সে বালিকা বিভাগে ২৯ পয়েন্ট পেয়ে চ‍্যাম্পিয়ন হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা। কোচবিহার জেলা ১৫ পয়েন্ট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে। ১১ পয়েন্ট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা।

জিমন‍্যাস্টিক্সে ১৫ পয়েন্ট পেয়ে চ‍্যাম্পিয়ন হয়েছে হুগলি জেলা। হাওড়া জেলা ৭পয়েন্ট পেয়ে দ্বিতীয় ও ৬ পয়েন্ট পেয়ে তৃতীয় হয়েছে দক্ষিণ২৪ পরগনা জেলা।

যোগাসনে ১৯ পয়েন্ট পেয়ে চ‍্যাম্পিয়ন হয়েছে দক্ষিণ২৪ পরগনা জেলা। ১৩পয়েন্ট পেয়ে দ্বিতীয় হাওড়াও ৬ পয়েন্ট পেয়ে উত্তর২৪ পরগনা জেলা তৃতীয় স্থান পেয়েছে।

বিজয়ী প্রতিযোগিদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য জলপাইগুড়ি জেলার ঘুঘুডাঙ্গা গোমস্তা পাড়া বিএফপি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর ছাত্রী পায়েল পারভীন তিনটি বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। পায়েল হাই জাম্প ও ২০০ মিটার রাণে প্রথম হয়। তার সাথে ৪×১০০মিটার রিলে রেসে দলগতভাবে প্রথম হয়েছে পায়েল। এছাড়াও জলপাইগুড়ি জেলায় আরেকটি উজ্জ্বল মুখ হল ঝিলিক রায় পার কুমলাই দেব চাঁদ  প্রাথমিক বিদ্যালয় পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। ঝিলিক ১০০ মিটার দৌড়, লং জাম্পে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এছাড়া সেও ৪×১০০ মিটার রেসে দলগতভাবে প্রথম হয়েছে। এই দুটি বালিকার জন্যই জলপাইগুড়ি অন্যান্য জেলার পিছনে ফেলে প্রথম স্থান অধিকার করেছে।
   
পারুল বেগমের বাড়ি জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্গত ঘুঘুডাঙ্গার গোমস্তা পাড়ায়। তার বাবা আনসারুল হক কাঠমিস্ত্রির কাজ করে। মা বিউটি পারভীন গৃহবধূ। দুই বোনের মধ্যে পারুল বড়। তার ছোট বোন মৌসুমী পারভীন প্রথম সেনিতে পড়াশোনা করে। নুন আনতে পান্তা ফুরায় পরিবারের থেকে বড় হচ্ছে পারুল পারভীন। এ বাড়ির রাজ্য প্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় তার পারফোর্সম্যান্স সকলের নজর কেড়েছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০০৭ সালে জলপাইগুড়ি জেলায় অনুষ্ঠিত রাজ্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অ্যাট ইলেকট্রিক মিটে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন স্বপ্না বর্মন যিনি পরবর্তীতে সাফল্যের সঙ্গে দেশের হয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাফল্য লাভ করেছিলেন। সবাই আশা করছে পারুল ঠিকমতো যত্ন পেলে আগামী দিনে স্বপ্না বর্মন এর মত হয়ে উঠতে পারে। জলপাইগুড়ি জেলার আরেক উজ্জ্বল মুখ ঝিলিক রায় পার কুমলাই দেব চাঁদ প্রাথমিক বিদ্যালয় এর পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। তার বাড়ি ধুপগুড়ির কালীর হাটে। সে আবার দরিদ্রতার কারণে তার বাবা-মার কাছে থাকে না। ছোটবেলা থেকেই থাকে কাকা কাকিমার কাছে। ঝিলিকের কাকিমা পিংকি রায় বলেন ঝিলকে তার মেয়ের মতোই বড় করছেন তারা। আগামী দিনে ঝিলিক যেন বাংলার মুখ উজ্জ্বল করে, তার জন্য সকলের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন তিনি।জলপাইগুড়ির জেলার দুই কৃতি মেয়ের সাফল্যে আনন্দিত জলপাইগুড়ির ক্রীড়া মহল।



মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।