সুহাস কান্তি ভট্টাচার্য: চিন্তন নিউজ:২২শেমে:– ২২মে বিশ্বব্যাপী আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস। বিশ্ব জীব বৈচিত্র্য দিবসের ধারণটির সূচনা হয় ১৯৯২ সালে। রাষ্ট্র, সরকার ও পৃথিবীর বড় বড় সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে ব্রাজিলের রিও তে শীর্ষ ধরিত্রী সম্মেলনে জীববৈচিত্র্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
মূলত ১৯৯২ সালের ২২ মে কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কনভেনশনে দিনটিকে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।আর তখন থেকেই প্রতি বছর মে মাসের ২২ তারিখ বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। বিশেষত বিশ শতকের ৭০-এর দশক থেকে খাদ্য-বস্ত্রসহ মানুষের নানান ধারার চাহিদার পরিসর বিস্তৃত হওয়ার কারণে লাখ লাখ প্রজাতি বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ১৫ হাজার তথ্য সূত্র নিয়ে ৩ বছরের গবেষণা শেষে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ‘সামারি ফর দ্য পলিসিমেকার’ শিরোনামে প্রকাশিত হয় জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনের সারমর্ম। ৪০ পৃষ্ঠার সেই সংক্ষেপ হাজির করতে গিয়ে বলা হয়েছে, মানবজাতি কীভাবে নিজেদের ‘একমাত্র বাড়ি’-কে ধ্বংস করছে; এটাই তার সবচেয়ে শক্তিশালী দলিল।
প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, স্থল, জল কিংবা আকাশ; সবখানেই মানুষের কারণে বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে বিভিন্ন প্রজাতি। জাতিসংঘের ইন্টার গভর্নমেন্টাল সায়েন্স পলিসি প্ল্যাটফর্ম অন বায়োডাইভারসিটি অ্যান্ড ইকোসিস্টেম সার্ভিসের ১৮০০ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে বিশ্বের ১০ লাখ প্রাণী বিলুপ্তির হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানিয়েছে। সেখানে বলা হয়, প্রাণী জগতের ২৫ ভাগ প্রজাতিই মানুষের কারণে বিপন্নতার মধ্যে রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিজেদের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে প্রাণী জগতের ১০ লাখ প্রজাতিকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে মানুষ। জীব বৈচিত্র্য সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করতেই জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি ২২ মে দিনটি বিশ্ব জীব বৈচিত্র্য দিবস হিসেবে উদযাপন করে আসছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৯৩ সালের শেষ দিকে ২৯ ডিসেম্বর বিশ্ব জীব বৈচিত্র্য দিবস হিসেবে পালন করা হলেও ২০০১ সাল থেকে এটি প্রতিবছর ২২ মে পালন করা হচ্ছে। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সুস্থ ও টেকসই পরিবশে রক্ষার লক্ষ্যেই এ ধরনের একটি দিবস পালন করা জরুরি হয়ে পড়ে। বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে ধারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এ ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণে দিবসটি গুরুত্বপূর্ণ। করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে প্রকৃতি যেভাবে আবার নিজেকে নিজের মতো করে সাজাচ্ছে, তার জন্যই এবারের প্রতিপাদ্যে এসেছে ভিন্নতা। এ বছর দিবসটির স্লোগান ঠিক করা হয়েছে ‘Building a Shared Future For All Life’