দেশ

সীমান্তে উত্তেজনার আবহে হিসাব পাল্টে যাচ্ছে, সবকিছুর


দেবু রায়: চিন্তন নিউজ:২৩শে জুন:–চীন – ভারত সীমান্তে উত্তেজনার আবহে অনেক হিসাবই উলোট পালোট হচ্ছে ! দেশের বিভিন্ন সেক্টর যেমন টেলিকম, আই.টি. ঔষধ ইত্যাদি ! অন্য সেক্টরগুলো বাদ দিয়ে আজ দেখা যাক, ঔষধ শিল্পের উপরে কি প্রভাব পড়তে চলেছে এবং তার কি প্রভাব আগামী দিনে পড়তে পারে, এবং কেন? এর কারন ঔষধ হলো এমন একটা বিষয় যেটা ছাড়া মানুষ এক পা’ও চলতে পারে না!

অনেকেই হয়তো জানেন না যে ভারতবর্ষে যে ঔষধ গুলো চলে তার ৮০% কাঁচা মাল ভারতে তৈরি হয় না এবং সেটা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় বর্তমানে! ধরা যাক ক্যালপল ট্যাবলেট, যার একটিভ উপাদান হলো প্যারাসিটামল, সেটাও বিদেশ থেকে আনতে হয়।

আমরা এমনি আত্মনির্ভর যে, আমাদের দেশের ঔষধ কোম্পানিগুলো পাউডার বিদেশ থেকে আমদানি করে আনে, এখানে শুধু প্যাকিং করে লেবেল করা হয়। অর্থাৎ বেসিক ড্রাগটা আসে বিদেশ থেকে আর ফিনিশিং এর কাজটা হয় এখানকার কোম্পানিতে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বেসিক ড্রাগ বানায়, কিন্তু তাদের মধ্যে চীনের দাম সব চেয়ে কম।

জানুয়ারি মাসে শুধু পেরাসিটামল ২৫ কেজি ব্যাগের দাম ছিলো ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মতন। কিন্তু বর্তমান অবস্থাতে চীন ওটার দাম দিয়েছে ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা মতন। অর্থাৎ প্রায় ৫০% মতন দাম বেড়েছে বা বাড়িয়েছে। এখন যে ৬৫০ মিলিগ্রা: ট্যাবলেট ১.৫০ টাকা থেকে ২ টাকাতে পাওয়া যাচ্ছে সেটা হতে চলেছে ৩ টাকা থেকে ৩.৫০ টাকা মতন।

এ তো গেল একটা জ্বর বা ব্যাথ্যার ট্যাবলেটের কথা! উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রন করার জন্য টেলমিসারটান ৪০ (TELMA- 40) বা সুগার, হার্টএর সমস্যায় যে ঔষধই খান সব বেসিক ড্রাগ তো সেই চীন থেকে আসে। এগুলো ছাড়াও নতুন প্রজন্মের যত এন্টিবায়োটিক আছে সেটা 4th বা 5th বা 6th প্রজন্মের হোক না কেন তার বেসিক ড্রাগ কিন্তু আসে সেই চীন থেকেই।

লিভোফ্লোক্সাসিন একটা গুরুত্বপূর্ন এন্টিবায়োটিক যেটা আমাদের দেশে ট্যাবলেট, বা সিরাপ বা অন্য অনেক ফর্মে তৈরি হয়ে বিক্রি হয়। আর এই লিভোফ্লক্সাসিন পাউডার গত জানুয়ারি মাসে ২৫ কেজি বস্তার দাম ছিলো ৫০০০০ থেকে ৬০০০০ টাকা (ট্যাক্স ছাড়া)। এখন চীন থেকে ওটা আনতে গেলে দাম হচ্ছে প্রায় এক লক্ষ থেকে এক লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকার মতো। অর্থাত এখন যে ট্যাবলেটটা পনেরো থেকে কুড়ি টাকার মধ্যে পাচ্ছেন একবার কল্পনা করুন আগামী দিনে তার দাম কত হতে পারে!

আর একটা জীবন দায়ী ঔষধ যেমন মেনোপোৱান ইনজেকশন এক মিলির দাম ছিলো ২৬০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে। এটারও বেসিক ড্রাগ আসে চীন থেকে (মনোপোৱান ছাড়াও আরও অনেক উন্নত মানের ঔষধ আছে তার দাম আরও অনেক বেশি)। ভারতবর্ষে যেখানে নিম্নবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের সংখ্যাটাই সবচেয়ে বেশি সেখানে এরকম উচ্চ মূল্যের ঔষধ সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে। সেই দিন হবে আরো ভয়াবহ।
ক্রমশ!


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।