দেশ বিদেশ

নোয়াম চমস্কি’- র আশঙ্কায় – অতিমারী পরবর্তী বিশ্ব


চৈতালি নন্দী: চিন্তন নিউজ:১৮ই জুন:–অতিমারী পরবর্তীতে পৃথিবী আরও বড় দুটি বিপদের সম্মুখীন হতে চলেছে, জানালেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী নোয়াম চমস্কি। যে বিপদ থেকে মুক্তি অত সহজে মিলবেনা।
তিনি জানান ভয়ংকর করোনা ভাইরাসকে ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কারণ ইতিমধ‍্যেই তা কেড়ে নিয়েছে বিশ্বের কয়েক লক্ষ মানুষের প্রাণ। কিন্তু এর চেয়েও বড় বিপদ হয়তো অপেক্ষা করে আছে। তার একটি হোলো পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা ও অপরটি হোলো বিশ্বের উষ্ণায়ণ; যার পরিণতি হবে এর থেকে আরও ভয়ঙ্কর ও ধ্বংসাত্মক, যা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন।

যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিশালী দেশ যখন ইরাণ বা কিউবার উপর অবরোধ তৈরী করে এবং সমগ্র ইউরোপ তাকে সমর্থন করে, তখন তা অত‍্যন্ত দূর্ভাগ‍্যজনক ঘটনা হয়ে ওঠে। অতিমারীর সংকটের সময় সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ঘটনা হোলো কিউবার মতো ছোট্ট সমাজতান্ত্রিক দেশের ইউরোপের সাহায্যে এগিয়ে আসা, যেখানে জার্মানি গ্রীসকে সাহায্য করতে পারছেনা। এটা থেকে পশ্চিমী দেশগুলোর ধ্বংসাত্মক প্রবণতা স্পষ্ট হয়ে যায়। করোনা পরবর্তী বিশ্বে চমস্কি পুঁজিবাদী দেশগুলোকে অপেক্ষাকৃত দূর্বল দেশগুলিকে সহযোগিতার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন যে বিশ্ববাসী জানে যে কয়েকবছর অন্তর বিশ্বে মহামারীর আগমন ঘটে। সার্স পরবর্তী বিশ্বকে এজন‍্যে প্রস্তুত থাকা, ভ‍্যাকসিন তৈরির উপর জোর দেবার দরকার ছিল। কিন্তু তা না করে এবং শুধুই অস্ত্র প্রতিযোগিতায় মগ্ন থাকায় আজ অতিমারী নিয়ে ভুগতে হচ্ছে বিশ্বকে। এক্ষেত্রে বড় বড় বহুজাতিক ওষুধ প্রস্ততকারী সংস্থার যতটা দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল তা হয়নি, কারণ ওষুধ প্রস্তুত করার থেকে প্রসাধনী তৈরী অনেক বেশী লাভজনক। এক্ষেত্রে সরকারি পর্যায়ে যতোটা প্রচেষ্টা আবশ‍্যিক ছিল, পুঁজিবাদী ব‍্যাবস্থার ফলে তা সম্ভব হয়নি।
২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভাইরাসের আগাম খবর থাকা সত্বেও তা গুরুত্ব না দেওয়ায় বেড়েছে প্রাণহানি। অন‍্যদিকে চীন ঐ বছরের ডিসেম্বরেই একধরনের নিউমোনিয়ার কথা হু’ কে জানালে তা বিশ্ববাসীর গোচরে আসে।

করোনা সংকট পরবর্তীতে হয় সাম্রাজ‍্যবাদী, কর্তৃত্ববাদী হিংস্র রাষ্ট্রব‍্যবস্থাকে মেনে নিতে হবে,  নয়তো সমাজতান্ত্রিক মানবিক ব‍্যবস্থা গুরুত্ব পাবে। চমস্কি বলেন পৃথিবীকে আরও মানবিক আরও উদারমনষ্ক ভাবে গড়ে তোলার সময় এখনও রয়েছে, যা শুধু গড়বে ধ্বংস, করবেনা। যেখান থেকে অনেক দূরে সরে যাবে পরমাণু যুদ্ধ। বড় এবং মৌলিক পরিবর্তন ছাড়া যা অসম্ভব। অন‍্যদিকে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যয় থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে যা আমাদের সদর্থক পথে এগিয়ে দেবে।

পৃথিবীকে পরবর্তী প্রজন্মের বাসযোগ্য করে যাবার জন‍্যে সংকীর্ণতা, দীনতা, যুদ্ধবাজ  মনোভাব পরিত‍্যাগ করে, গড়ে তুলতে হবে এক মানবিক, মঙ্গলকামী ও উন্নয়নশীল সমাজ যেখানে ব‍্যাক্তিগত লাভের থেকে প্রাধান্য পাবে সমষ্টিগত প্রয়োজন ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।