দেশ

জল‌ই জীবন।জল সংরক্ষণ করুন


সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:১২ই জুলাই:–মানুষের জীবনে সোনার চেয়ে দামী জল। গত একশো বছরের মধ্যে এবছর শুষ্কতম “জুন”…২০১৯ এর এক চরম বার্তা দিতে চলেছে। এক ফোটা জলের জন্য চাতকের মতো অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কখন আসবে জলের গাড়ী —-মিলবে জল।মানুষকে জলের এজেন্সি বা পৌরসভার উপর নির্ভর করতে হচ্ছে।।এই চিত্র আরও প্রকট হয়েছে মহানগরী চেন্নাইতে।।সেখানে এখন একটাই কথা—-“”সোনার চেয়ে দামী জল “”……আর আমাদের দক্ষিণ বঙ্গে বর্ষাতো আসছেই না উলটে গরম হাওয়ার দাপটে মানুষের প্রান ওষ্ঠাগত।। এবছরের জুন অবধি বৃষ্টি তে ঘাটতি র পরিমান ৫০%। আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে ঠিকঠাক বৃষ্টিতো দূরের কথা নুন্যতম বৃষ্টিও হয়নি এই জুনে।।২০১৯ এর জুন শুষ্কতম জুন।। ১৯২০ সালের পর ১৯২৩—-১৯২৬——২০১৪—–২০১৯ —-তে সবচেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছিল ভারতে।। কিন্তু এখন বড় প্রশ্ন বৃষ্টি ফিরবে কবে????আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে জুন শুষ্ক থাকলেও জুলাই এ বৃষ্টি হবে আর তা যা স্বাভাবিক তাই হবে। কিন্তু বৃষ্টি কোথায়???? বর্ষা এলেও বৃষ্টির দেখা নেই তেমনিভাবে।। তীব্র তাপ প্রবাহে ১০০ জনের বেশী মানুষের মৃত্যু হয়েছে।। চাষিদের কপালে চিন্তার ভাজ।। এবার দেশের অর্থনীতিতে সংকট বাড়বে।।জলস্তর প্রতি বছর বাড়ছে এতে পশ্চিম বঙ্গসহ একাধিক শহর তলিয়ে জেতে পারে সমুদ্রগর্ভে। দক্ষিণ যে জলসংকট শুরু হয়েছে তা আজকের নয়।।৪০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে প্রতিবছর জলস্তর বাড়ছে ১’৩ মিলিমিটার করে।। ফলে উপকুলবর্তী এলাকাগুলিতে চরম বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে।। বাড়ছে সমুদ্রস্তর —-উত্তাল সমুদ্র—অল্প বৃষ্টি তে প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে বিস্তির্ন এলাকা।। জলস্তর বাড়ার জন্য সমুদ্র গ্রাস করে নিচ্ছে স্থলভূমি।। অত্যাধিক তাপে গলে যাচ্ছে বরফ।।জি–২০ সামিটে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী বিষয়টি উঠিয়েছেন।।আট বছর আগেই নাসা জানিয়েছিল জলাধারের জলস্তর হু হু করে নামছে।।২০১৮ সালের ছবি তে এই চিত্র আরও স্পষ্ট হয়েছে।। অবিবেচক এর মত জল নষ্ট শুধু ভারতে নয় —–এই মুহুর্তে স্পেন—ইরান—মরক্কো প্রভৃতি জায়গাতেও তীব্র জলসংকট দেখা গেছে।।। এর মধ্যে আর এক ভয়ংকর তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে——- নাসার উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে গ্রীনল্যান্ডের বরফ গলতে শুরু করেছে।। এতে কলকাতাও সমুদ্রগর্ভ এ চলে যাওয়ার এক ভয়ংকর ইংগিত পাওয়া গেছে।।এমন চলতে থাকলে এমন একটা সময় আসবে যখন কলকাতা —-মুম্বাই সবই সমুদ্রের তলায় জায়গা পাবে।।। কলকাতা —-হাওড়া—–হুগলি গঙ্গার গায়ে অবস্থিত বলে এখন তেমন জলসংকট বুঝতে পারে না।। এখানে বিশুদ্ধ জল মেলে বিনা পয়সাতে।।গঙ্গা থাকায় “”জল নাও সাফা কর””—- কিন্তু এই করতে গিয়ে পরিশোধনের মাত্রা বাড়ছে।। আগে যা পরিশোধন হত এখন তার বহুগুন বেশী হচ্ছে।। এটা আরও বাড়বে।। কিন্তু রিপোর্ট জানাচ্ছে যে কলকাতার জল পাইপলাইন দিয়ে যাওয়ার লিকেজের সমস্যা হয় আর তার ফলে গড়ে ৩০—৩৫% জল অপচয় হয়।।। নরম পানীয় সংস্থা গুলো আমাদের মাটির তলার জল ফাকা করে দিচ্ছে।।।শুধু কোকাকোলার প্ল্যান্ট রয়েছে ৫৮ টি।।। সাধারণ হিসেব বলছে কোকাকোলা যে পরিমাণ জল তুলছে সেই জলে আগামী একবছর মানুষের তেষ্টা মেটাতে পারত।। অথচ সামান্য টাকার বিনিময় এ তারা কোটি কোটি টাকা মুনাফা করছে। শুধু জল তোলা নয় এরা নানারকম বর্জ ফেলে যাচ্ছে।। এর থেকে আশেপাশে র জলও দূ ষিত হচ্ছে।। এই নোংরার মধ্যে সবথেকে বেশী থাকে সীসা যা কিডনি রোগের বড় কারন।। অনেক রাজ্য ই প্রতিবাদ করে কোককাকোলার উতপাদন বন্ধ করে দিতে পেরেছে।।।তবু সমস্যার সমাধান হয়নি।।।শুধু জল তোলা নয় —-সেই স্বাদু জলের অপচয় সংকট আরওবাড়িয়ে তুলেছে।।কমে যাচ্ছে মিস্টি জলের ভান্ডার।।। এসব কারণে মানুষ কে সচেতন করতে হবে।। একটু জল নষ্ট করলেও বলতে হবে জলের প্রয়োজনীতা। জল বাচান——প্রান বাচান——-দেশ বাচান——-।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।