দেশ

মণিপুর সমস্যার উৎস সন্ধানে চিন্তন।


প্রতিবেদক: মধুমিতা ঘোষ: চিন্তন নিউজ: ২৫/০৭/২০২৩:- লাগাতার কয়েক মাস যাবৎ অশান্ত উত্তর – পূর্ব ভারতের মনিপুর রাজ্য।
সংখ্যাগুরু মৈতেই হিন্দুধর্মাবলম্বী ও সংখ্যালঘু কুকি- জো উপজাতি খৃষ্টান ধর্মে বিশ্বাসী।মৈতেই হিন্দুধর্মাবলম্বীরা মূলত শহরবাসী আর কুকি- জো দের বাসভূমি প্রধানত পাহাড়ী এলাকা। নিজেদের মধ্যে কিছু ঠান্ডা লড়াই থাকলেও, ভারতবর্ষের মানুষ দু’ মাসের বেশি সময় ধরে চলতে থাকা এমন জঘন্য জাতি সমস্যা দীর্ণ হানাহানিতে লিপ্ত মনিপুরকে আগে কখনও দেখেনি।

ফিরে দেখা যাক, প্রায় গৃহযুদ্ধের চেহারা নেওয়া এই সমস্যার কারণ, যা থামাতে ডবল ইঞ্জিন বিজেপি সরকারেরও কোনো হেলদোল নেই।
প্রায় এক যুগেরও বেশি আগে জানা যায় যে মনিপুর দুর্লভ খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এক রাজ্য।
প্রায় তখন থেকেই ওই সম্পদকে পাখির চোখ করে তা যেন তেন প্রকারে পাবার লক্ষ্যে ব্যবসায়ী- মহলে সাড়া পড়ে যায়। কিন্তু দেশের আইন বাধা হয়ে দাঁড়ায় এক্ষেত্রে। বর্তমান আইনে প্রাকৃতিক সম্পদ স্থানীয় আদিবাসীদের -ই অধিকারে থাকে। সম্পদের সুবিধা পাবার অগ্রাধিকার থাকে আদিবাসী দের। তাই খনিজ সম্পদ উত্তোলনের নোটিশ জারি হতেই শুরু হলো অবরোধ, আন্দোলন। আরম্ভ হলো জনজাতি কুকি- জো সম্প্রদায়ের নিজেদের ডেরা- জীবিকা ও প্রাণ বাঁচানোর লড়াই।
তখনকার মতো এই ধরনের কাজ বন্ধ হলেও সরকার জানে, যেকোনো প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের অধিকার সরকারের হাতেই। তাই শুরু হলো মানুষ কে বোকা বানিয়ে নিত্য নতুন আইন প্রণয়নের। মেইতেই সম্প্রদায়ের সরকারের কাছে অনেক দিনের অন্যতম দাবী ছিল জনজাতি তকমা, যা আদায় হলে সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধা অন্যান্য ট্রাইবাল সম্প্রদায়ের মতো ই পাওয়া যাবে। এই ভাবনায় ঘি ঢাললো মনিপুর কোর্টের সদর্থক রায়।
কুকি- জো সম্প্রদায় নতুন করে উৎসাহিত হয়ে ট্রাইবাল বা জনজাতি তকমা পেতে উৎসাহিত হলো।
একদল তার অধিকার ধরে রাখতে আর একদল নতুন অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে মরিয়া লড়াই শুরু করলো। প্রায় ৮০ দিন ধরে চলা এই অশান্তির আগুনে বহু মন্দির ও চার্চ পুড়ে ছাই হলো আর ডবল ইঞ্জিন, বেনিয়া সরকার ” যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখো তাই” এই প্রবাদবাক্য মস্তিষ্কে ধারন করে, অমূল্য রত্ন লাভের পথের কাঁটা দূর করতে, জাতিদাঙ্গা, হানাহানি টিকিয়ে রাখতে প্রয়োগ করে চলেছে সেই চিরকালীন ” ডিভাইড এন্ড রুল” পলিসি।
কর্পোরেটদের স্বাভাবিক মিত্র এই বিজেপি সরকার তার সমস্ত কৌশল আর বল প্রয়োগ করছে এবং করবে এই অশান্ত অবশ্য টিকিয়ে রেখে দানবীয় আইন প্রয়োগ করে প্রাকৃতিক সম্পদ কে ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিতে।
একমাত্র , জনজাতি – আদিবাসী ঐক্যবদ্ধ লড়াই এই অশুভ শক্তি কে পরাস্ত করতে পারে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।