দেশ

রাজ্যসভায় ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে গেল কৃষিসংক্রান্ত জোড়া বিল


নিউজ ডেস্ক: চিন্তন নিউজ:২০শে সেপ্টেম্বর:- রাজ্যসভায় ধ্বনিভোটে পাশ হয়ে গেল কৃষিসংক্রান্ত জোড়া বিল। । বিরোধীদের প্রবল বিক্ষোভের মধ্যেই ধ্বনিভোটে পাশ হয়ে গেল বিল দুটি। রবিবার রাজ্যসভায় এই বিল দুটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন বিরোধীরা। কিন্তু এই বিক্ষোভের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা ও বিতর্কের পরেও সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাশ হয়ে গেল বিল দুটি।

প্রসঙ্গত: সংসদে চলতি বাদল অধিবেশনে তিনটি অর্ডিন্যান্স জারি করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এগুলি হ’ল, ১) কৃষি পণ্যের বাণিজ্য সংক্রান্ত , ২) কৃষি পরিষেবা ও কৃষি পণ্যের মূল্যের নিশ্চয়তা সংক্রান্ত এবং ৩) অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন সংশোধন । গত বৃহস্পতিবার এই অর্ডিন্যান্সগুলি বিলের আকারে পাশ হয়ে যায় লোকসভায়।

রবিবার রাজ্যসভায় বিল পেশের পরেই সম্মিলিতভাবে বিরোধিতা করে প্রায় সব বিরোধী দলই। এই বিক্ষোভের ফলে অধিবেশনের কাজে দেরি হয়। তাই নির্ধারিত সময়ের পরেও চলে অধিবেশন। এত বিরোধিতা সত্ত্বেও দু’টি বিলই পাশ করিয়ে নেয় নরেন্দ্র মোদী সরকার।

বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের বক্তব্য, এই তিনটি অর্ডিন্যান্স হল কৃষক স্বার্থ বিরোধী। এর ফলে চাষিরা সরকারের থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য থেকে বঞ্চিত হবে। সব থেকে ক্ষতি হ’তে পারে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের। বেসরকারি সংস্থার হাতে বিপন্ন হ’তে পারেন তাঁরা। কারণ উৎপাদিত কৃষি পণ্যের সঠিক মূল্য থেকে তাঁদের বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে ফড়েরাও এই অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতা করছেন। তাঁদের আশঙ্কা, এর ফলে তাঁদের ব্যবসা লাটে উঠবে। ফলে ফড়েদের সঙ্গে যুক্ত বিপুল সংখ্যক মজুর ও পরিবহণ কর্মী কাজ হারাবেন বলে তাঁদের মত।

যদিও কেন্দ্র সরকারের বক্তব্য, এই তিন অর্ডিন্যান্স কৃষকের স্বার্থ রক্ষা করবে। কৃষকরা নিজের এলাকার বাইরে অন্যত্র বা অন্য রাজ্যে তাঁদের উৎপাদিত পণ্য বিপণনের সুযোগ পাবেন। কোনও বাধা থাকবে না। বর্তমানে চাল, গম সহ বেশ কিছু কৃষিপণ্য চাষিরা নোটিফায়েড এলাকার বাইরে বিক্রি করতে পারেন না। তা ছাড়া নয়া অর্ডিন্যান্স বলে কৃষকরা বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে কৃষি পণ্য উৎপাদন করতে পারবেন।

কিন্তু কৃষক স্বার্থ বিরোধী এই বিলের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই রাস্তায় নেমেছেন পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও রাজস্থানের কৃষকরা। পাঞ্জাবে কৃষকদের একটি সংগঠন আগামী ২৪ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর রেল রোকো কর্মসূচি নিয়েছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর কৃষকদের একাধিক সংগঠন ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছে। কৃষকদের পক্ষ নিয়ে বৃহস্পতিবার মোদী মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন হরসিমরত কউর বাদল। কংগ্রেস এই বিলকে কৃষকের মৃত্যু পরোয়ানা বলে অভিহিত করেছে। বিরোধীদের বক্তব্য, বাহুবলে পাশ করিয়ে নেওয়া হ’ল এই কৃষক স্বার্থবিরোধী কৃষকসংক্রান্ত জোড়া বিল।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।