প্রবীর দত্ত: চিন্তন নিউজ: ৩রা মে:-উত্তরবঙ্গ থেকে পার্টির নির্দেশে মধ্যমগ্রামে আসে পরিমল ,থাকত সুভাষপল্লীর একটা ভাঙ্গা দরমার ঘরে,মাটিতেই বিছানা ,টিম টিমে একটা আলো ,খেতো জয়ন্ত হোটেলে ,ভাল ভাত তরকারী ,মিনদার চায়ের দোকানের চা বিস্কুট আর বিড়ি ,খুব বড় জোর চারমিনার , সাদামাটা জীবন , তখন তিনুদা বেঁচে (কমঃ শৈলেশ দাশগুপ্ত )। সবে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতা দখল করেছে । শাসন অঞ্চলে বর্গা আন্দোলন জোর কদমে চলছে , পরিমল পড়ে থাকতেন ওই শাসন অঞ্চলে। কোন দিনও ওঁকে রাগতে দেখিনি। ওনার ঘরে যে গেছেন,দেখেছেন উনি উপুর হয়ে বসে পোস্টার লিখছেন ।একটা প্লেটে লাল কালি আর একটায় কালো ,কোন তুলি নেই দেশলাই বাক্স ভেঙ্গে কি অদ্ভুত মুনশিয়ানায় লিখে যাচ্ছে ,অনেককে এটl ও হাতে ধরে শিখিয়েছিলেন। একটা কাপড় ছাপার ছোট্ট দোকান ছিল ,উনি প্রত্যেকদিন ওখানে গল্প করতে আসতেন। কিছু মানুষ ওনাকে বেঁচে থাকার রসদের জন্য কিছু কিছু দিতেন। খুবই সামান্য (পার্টি ক্ষমতা আসার আগে) তখন তো অবস্থা খুবই খারাপ , মধ্যম গ্রামে কবে এসে ছিলেন সঠিক জানা নেই , ৬৮/ ৬৯ সালে উনি পার্টির হোলটাইমার ছিলেন। ছিপ ছিপে রোগা ফর্সা একমুখ দাড়িগোঁফ ,পাজামা পাঞ্জাবি পড়া। ,খুব বেশী উচ্চ স্বরে কথা বলতেন না। তবে নিজের কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান ছিলেন।
সেই সময় শাসন অঞ্চলে ওনার বন্ধু যেমন ছিল , তলেতলে শত্রুও তৈরী হচ্ছিল ,সেটাই স্বাভাবিক ,উনি করছিলেন বর্গা আন্দোলন। পয়লা মের সকালে শোনা যায়, পরিমলকে হত্যা করেছে ,ওঁকে মেরে পাঁকে পুঁতে দিয়েছে ,ওকে তার আগে বারণ করা হয়ে ছিল ক’দিন.না যেতে ,কে কার কথা শোনে ,উনি তো প্রকৃত কমরেড ~ বাঁধা কি ওঁকে বাঁধ মানাতে পারে ! তারপর আর কি পরিমলকে আনা হলো মধ্যম গ্রাম পার্টি অফিসে। সারা অঞ্চলের মানুষ ভেঙ্গে পড়ে ছিল পার্টি অফিসে , শেষ বারের মতো ওঁকে একবার দেখার জন্যে। ফুলে মালায় লাল পতাকায় ~ কমরেডরা ওঁকে বয়ে নিয়ে চললেন ~ মুখে গান ~ ” জাগো জাগো সর্বহারা অনশন বন্দিকৃত দাস, শ্রমিক দিয়াছে আজ . সাড়া উঠিয়াছে মুক্তির আশ্বাস ~ ~ ~