চৈতালি নন্দী: চিন্তন নিউজ:২১শে জুলাই:-বিভিন্ন সংবাদ সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে চীন ও ইরান আগামী ২৫ বছরের জন্যে একটি কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদন করতে যাচ্ছে। যদিও চুক্তিটি এখনও স্বাক্ষরিত হয়নি, ইরানের পার্লামেন্টের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করা হচ্ছে খুব শীঘ্রই চুক্তিটি বাস্তব রূপ পাবে, যাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও উপসাগরীয় অঞ্চলের উপর ছড়ি ঘোরানো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
জানা গেছে এই চুক্তি অনুসারে ইরানে ৪০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে চীন। তারমধ্যে তৈলক্ষেত্র গুলো ছাড়াও রয়েছে গ্যাস, ব্যাঙ্কিং, টেলিকম, বন্দর উন্নয়ন, রেলওয়ে উন্নয়ন সহ আরও কয়েকটি ক্ষেত্র। এছাড়া সামরিক ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ করা হবে।
সামরিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যৌথ প্রশিক্ষণ, মহড়া গবেষণা, যুদ্ধাস্ত্র ও গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদানের কথা বলা হয়েছে। এর পরিবর্তে চীন বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কমদামে ও বিশেষ ছাড়ে পাবে তেল ও গ্যাসের অবাধ যোগান।
বলাই বাহুল্য এই চুক্তিটি বাস্তবে রূপ পেলে তা বিশ্ব রাজনীতিতে যোগ করবে অন্যমাত্রা। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবাধে ছড়ি ঘোরানো, ইরানের উপর অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা কঠিন প্রতিরোধের মুখে পড়বে। এটা এতোদিন উপযুক্ত শক্তির অভাবে যা সম্ভব হচ্ছিল না। ইরানের তৈলক্ষেত্র গুলোর দখল নেওয়ার ও অধিকার কায়েমের প্রবল মার্কিন প্রচেষ্টা উপসাগরীয় অঞ্চলেও শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ফেলবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে। আমেরিকার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও মহামারী বিদ্ধস্ত ইরানের তৈলক্ষেত্র গুলোর আর্থিক দূর্বলতার ফলে সেখানে যে অর্থনৈতিক মন্দার সৃষ্টি হয়েছিল, তা ক্রমেই হ্রাস পাবে। চীনের অস্ত্র ও প্রযুক্তির সাহায্যে বলীয়ান হয়ে ইরান তাদের অর্থনীতির চাকা সচল করার সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা হলেও চীনের মুখাপেক্ষী হবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে একসঙ্গে দুটি শত্রুর সঙ্গে লড়াই শুরু করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একদিকে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ, অন্যদিকে ইরানকে কোনঠাসা করা। কিন্তু এই চুক্তি সম্পাদিত হলে আমেরিকার ব্যাকফুটে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মিডিয়ায় ফাঁস হওয়া এই চুক্তি সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইরানের পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র আব্বাস মুসাভি বলেন, চুক্তি টি বাস্তবায়িত হলে তৈরী হবে কূটনীতিক ক্ষেত্রে ইরানের গর্ব করার মতো অধ্যায়। এর ফলে পাল্টে যেতে পারে বিশ্বজুড়ে শক্তির ভারসাম্য ।এই প্রথম মধ্যপ্রাচ্যে চীন তাদের উপস্থিতি সুনিশ্চিত করবে। তৈরি হবে বিশ্ব রাজনীতির নতুন সমীকরণ।