জেলা

হুগলি জেলার টুকিটাকি সংবাদ:


সোমনাথ ঘোষ-: চিন্তন নিউজ:২৯শে এপ্রিল:- -ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) চন্ডীতলা ১ এরিয়া কমিটির উদ্যোগে প্রয়াত কমরেড নকুল চ্যাটার্জির স্মরণসভায় তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করছেন প্রবীণ কমরেড শান্তশ্রী চ্যাটার্জি, জেলা সম্পাদক কমরেড দেবব্রত ঘোষ কমরেড ভক্তরাম পান সহ অন্যান্য নেতৃত্ব ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কমরেড স্বপন বটব্যাল । সভায় কমরেড নকুল চ্যাটার্জির অগ্রজ কমরেড গোবিন্দ চ্যাটার্জী, তাঁর পুত্র কন্যা, পুত্রবধূ নাতনি সহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন জেলা ও এরিয়া কমিটির অন্যান্য নেতৃত্ব ।

জয়দেব ঘোষ—–আজ সকালে কুন্তিঘাট অঞ্চলের ১০ বছরের শিশু সুমিত মন্ডলের রক্তের প্রয়োজন হয়। খবর যায়, মগরা অঞ্চলের রেড ভলেন্টিয়ার্স এর কাছে । করোনা পরিস্থিতিতে তৎক্ষণাৎ কমরেড শঙ্খশুভ্র চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে বাচ্চাটিকে রক্তদান করে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে রেড ভলেন্টিয়ার্স ই মানুষের পাশে রয়েছে। সেটা আরো একবার প্রমাণিত।। এটাই ডি ওয়াই এফ আই—- রাত ২ টো — একটা ফোন এল যুগেরমোড় থেকে।। সেখানের এক বাসিন্দা ফোন করে জানালেন তাঁর স্ত্রীর কোভিড -১৯ পজিটিভ , আরও জানালেন এবং প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছে , এক্ষুনি অক্সিজেন এর ব্যবস্থা করতে না পারলে ভীষণ বিপদের সম্মুখীন হতে হবে।। সিঙ্গুর-১ এর রেড ভলান্টিয়ার্স এর টিম পৌঁছে গেল মাত্র ৩০ মিনিট এর মধ্যে।।। এভাবেই মানুষ এর সেবা করে চলেছে ডি ওয়াই এফ আই।। “জিনা তো ইসিকা নাম হায়…….

প্রথম ছবি : আজ সকাল সকাল আবার কল।রক্ত লাগবে O+।সঙ্গে সঙ্গে কোন্নগরের এস এফ আই এর রেড ভলান্টিয়ারদেরকে কল।গতকাল শুনেছিলেন শুভমিতা হালদার এর কথা,আজ যে ছাত্রীর ছবি দেখছেন,ছাত্রীটির নাম সৌমি শেঠ ।। এস এফ আই কোন্নগর আঞ্চলিক কমিটির অন্যতম সদস্য,আইনের ছাত্র।রক্ত লাগবে খবর পেয়েই চারিদিক না ভেবেই জীবন বাঁচাতে জীবনকে বাজি রেখেই হাসপাতালে গিয়ে রক্ত দিয়ে আসলো।শুনলাম রুগির বাড়ির লোক যখন ওকে রক্ত দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে,ও তখন হাসি মুখে উত্তর দিয়েছে “এইটা আমাদের কর্তব্য”।সাবাশ সৌমি এগিয়ে চল। বাংলার মানুষ কোনো বিজ্ঞাপন দেওয়া বাংলার মেয়েকে দেখতে চায় না,বাংলার মানুষ তোদের মতো মেয়েকেই দেখতে চায়,যারা জীবনকে বাজি রেখে মানুষের জন্য এগিয়ে আসে।

দ্বিতীয় ছবি: দুপুর ৩ টে তে কল,অক্সিজেন লাগবে কোন্নগর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কনকর্ট আপার্টমেন্টে।রুগির বয়স ৩৮।মূহুর্তের মধ্যে কোন্নগরের এক ঝাঁক ইয়ং ব্রিগেড অক্সিজেন জোগাড় করে পৌছে দিলাম অক্সিজেন।বাড়ির লোক বললো “তোমাদের এই কাজ জীবনের শেষ দিন অবধি মনে রাখবো,বামপন্থীরা সত্যি আলাদা “।

তৃতীয় ছবি :এই কয়দিনে দেখা সব থেকে এমার্জেন্সি পেসেন্ট।৭৮ বছরের দাদু, কোভিড আক্রান্ত,অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৪১।বাড়ির লোকের সবার চোখে জল।হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব। সঙ্গে সঙ্গে উত্তরপাড়ার মোহিত চৌধুরী দাকে কল,একটা বেড লাগবে যে কোনো হাসপাতালে।মোহিত দা মুশকিল আশানের মতো বেলুড় লাইফ কেয়ার হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে দিলো।দাদুকে নিয়ে যাওয়ার আগে দিদা হাত ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো”তোমার দাদুকে ছেড়ে ৫০ বছরের বৈবাহিক জীবনে কোনদিন আলাদা থাকিনি,তোমার দাদু কোনদিন হাসপাতালেও যায়নি এর আগে।”আসার আগে দিদার হাত ধরে চোখ মুছিয়ে বলে এলাম “দাদু ৩ দিনের মধ্যে তোমার কাছে সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে।”দিদা রাত্রিবেলা কল করে বললো তোমার দাদু হাসপাতালে ভর্তি হয়ে গেছে,ভালো আছে।শোনবার পর এক অদ্ভুত অনুভূতি হলো,মনে যেন এক আলাদাই আনন্দ।

চতুর্থ ছবি: কমরেড বিমল দাসের কল।৯০ বছরের একজন কোমা রুগিকে অক্সিজেন পৌছে দিতে হবে।মূহুর্তের মধ্যে অক্সিজেন নিয়ে রেড ভলান্টিয়ারদের সঙ্গে করে পৌছে গেলাম রুগির বাড়ি। বাড়ির লোকেরা কমরেড দের দেখে এক অদ্ভুত শান্তির নিশ্বাস।বাড়ির লোকেরা বললো”দুটি সরকারি তো অকেজো,তোমরাই মানুষের পাশে আছো।”

পঞ্চম ছবি: রাত ২ টো কোতরং থেকে কল,একজন ৪৬ বছরের কোভিড রুগির অক্সিজেন লাগবে। ছাত্র-যুব রেড ভলান্টিয়ারদের নিয়ে নবগ্রাম থেকে অক্সিজেন তুলে রুগিকে দিয়ে আসা হলো।বাড়ি লোক বললো “তোমাদের ধন্যবাদ দেওয়ার মুখের কোনো ভাষা নেই।”রেড ভলান্টিয়ার বলুন বা কোন্নগরের ইয়ং ব্রিগেড মানবিকতার স্বার্থে কমরেড গন ছিল,আছে আর থাকবে।কারণ সবাই বিশ্বাস করে “সবার উপরে মনুষ্যত্ব,তাহার উপরে নাই। “


আজ বেলুড় মঠকে মঠের তরফ থেকে করোনা হাসপাতালে রুপান্তর করা হয়েছে ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।