জেলা

হুগলি জেলা সংবাদ


সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ১২ই ফেব্রুয়ারি: গতকালের ছাত্র যুব কমরেডদের ওপর পুলিশের হিংসাত্মক আক্রমনের প্রতিবাদে আজ পুরো পশ্চিমবাংলা জুড়ে ১২ ঘন্টার বনধ পালিত হলো। জালিওয়ানালাবাগকেও হার মানাবে গতকাল ছাত্র যুবদের উপর বর্বরতা ও নির্বিচারে আক্রমণ। দলদাস পুলিশ গণ আন্দোলন দমাতে কি যা খুশি করতে পারে? মাথায় লাঠি মেরে ফাটিয়ে দিতে পারে?

হুগলীর চন্ডীতলা এলাকার গঙ্গাধরপুরের যুব কমরেড পল্লব চক্রবর্তীর মাথায় ৩টে স্টিচ করতে হয়েছে। আহত যুব কমরেড সারা শরীরে ব্যথা নিয়েও গর্বিত এই আন্দোলনে সামিল হতে পেরে। বাবাকে অনেক আগেই হারিয়েছে। মা বলছে, “সরকার কি পারতো না ৫/৬ জন প্রতিনিধির সাথে কথা বলতে? তবে লড়াই করতে গিয়ে মাথা ফেটেছে এতে আমি ভীত নই। আমি চাই সবার জন্য লড়াইয়ে আরও এগিয়ে যাক্। বামপন্থীরা ভয় পায় না। বরং আরও উজ্জীবিত হয়ে আগামীদিনের লড়াই সংগ্রামে সামিল হবে।”

আবার এদিকে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) কোতরং-হিন্দমোটর এরিয়া কমিটির উদ্যোগে আজ সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থন করে কোতরং ধাড়সা এলাকায় জি টি রোডে, কোতরং ঘোষপাড়ায় জি টি রোডে এবং ভদ্রকালী বীরেশ্বর ব্যানার্জী স্ট্রিট ও জি টি রোডের মোড়ে রাস্তা অবরোধ করা হয়। কোতরং বটতলা লেন, বিদ্যাসাগর বাজার, দেশবন্ধু পার্ক এলাকায় ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল বের হয়। অবরোধ সংগঠিত হয় আরামবাগের কাবলেতে। সিঙ্গুর রাস্তায় চলতে থাকে পিকেটিং, কোন্নগরে পথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে এবং সেখানে উপস্থিত ছিলেন কমরেড সুদর্শন রায়চৌধুরী।

আরামবাগের জাঙ্গীপাড়া বিবেক কোল্ড ষ্টোর মোড়ে, জাঙ্গীপাড়া থানার দিলাকাশে ও জাঙ্গীপাড়া বাসষ্ট্যান্ডে অবরোধ হয়েছে৷ বন্ধের সমর্থনে সিপিআইএম কর্মীরা প্রচুর সংখ্যায় রাস্তায় নেমেছিল। ত্রিবেনী ও বাঁশবেড়িয়াতেও চলে বিক্ষোভ মিছিল। চন্দননগর জিটি রোড অবরুদ্ধ ছিল আজ। ধনিয়াখালির মদনমোহন তলায় ১৭নং রোডের উপর পথ অবরোধ করা হয় বামপন্থীদের পক্ষে। ধনিয়াখালির পারাম্বুয়া রোডেও অবরোধ হয়েছে। ডানকুনিতে বিক্ষোভ মিছিল ও দূর্গাপুর এক্সপ্রেস ওয়ে দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। মগরাতেও জিটি রোড অবরুদ্ধ ছিল। পান্ডুয়ায় দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ ছিল রেল। ছাত্র-যুবদের নবান্ন অভিযানের উপর পুলিশের বর্বরোচিত আক্রমণের প্রতিবাদে ১২ ঘন্টা বাংলা বনধের সমর্থনে চুঁচুড়াতে বামফ্রন্ট ধিক্কার মিছিল করল।

গতকাল বাম ছাত্র যুবদের কাজের দাবী, বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় দুর্নীতির প্রতিবাদে, শিল্পের দাবীতে কলেজস্ট্রীট থেকে নবান্ন পর্যন্ত বিশাল মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল, কিন্তু সেই মিছিলকে ধর্মতলা আসার আগে বাধা দেওয়া হয় ও ছাত্র যুবদের উপর অকথ্যভাবে লাঠি চার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে বহু ছাত্র যুব কমরেড আহত হয়ে হসপিটালে ভর্তি হয়েছেন। তার প্রতিবাদে আজ সারা বাংলা জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে বামফ্রন্টের তরফ থেকে। সকাল থেকে ভালো সারা মিলছে ডানকুনি সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। অন্যান্য দিনের মত আজ বেসরকারি দূরপাল্লার বাসের দেখা পাওয়া যায়নি। এছাড়া ট্রেনে অফিস যাত্রীর সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক কম।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।