বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ভয়ংকর ধ্বংসের মুখে পৃথিবী! কারণ কি?


মল্লিকা গাঙ্গুলি: চিন্তন নিউজ:২১শে জুন: ভয়ংকর ধ্বংসের মুখে এই সুন্দর পৃথিবী । উহঃ এ বছর সব থেকে বেশি গরম, আর পারা যাচ্ছে না! ঘরে বাইরে সর্বত্র এখন এই কথা শোনা যাচ্ছে। হ্যাঁ সত্যিই খুব গরম। কিন্তু শুধু এ বছরই সব থেকে বেশি গরম তা নয়, আগামী বছর আরো বেশি হবে, তারপরের বছর আরও বেশি গরম হতে চলেছে! এর একটায় কারন তা হলো গ্লোবাল ওয়ার্মিং এ প্রসঙ্গে অতি সাম্প্রতিক দুটি ঘটনা উল্লেখ করতেই হয়। ১। জানা গেছে মাত্র একদিনে গ্রীনল্যান্ডে বরফ গলেছে 200 কোটি টন! এই অনুপাতে মেরু প্রদেশের বরফ গলতে থাকলে আমাদের এই গ্রহ আর কতদিন বাঁচবে!? ভাববার সময় পেরিয়ে যাচ্ছে, আর একদিনও এড়িয়ে থাকার অবকাশ নাই! ২। দ্বিতীয় ঘটনাটি আরও ভয়াবহ এবং চমকপ্রদ। উত্তর সাইবেরিয়ার রাশিয়ার শিল্প শহর নরিলস্কের রাস্তায় দেখা গেল, একটি মেরু ভল্লুক মন্থর ক্লান্ত গতিতে হেঁটে চলেছে! দেখলেই বোঝা যায় প্রাণীটি বেশ কয়েকদিন অভুক্ত থাকায় শীর্ণ তার শরীর, চারপায়ে কাদামাখা। খাবারের সন্ধানেই সে শহরের আস্তাকূঁড় ঘাঁটতে ঘাঁটতে রাজপথে এসে হাজির হয়েছে। এ দৃশ্য নারিলস্কবাসী দেখেনি তাই রাস্তায় সারি সারি গাড়ি দাঁড়িয়ে পরেছে বিশেষ প্রজাতির শ্বেত ভল্লুক দেখতে। পরিবেশবিদ দের মতে গত 40 বছরে রাশিয়ায় এমন ঘটনা ঘটেনি, জলবায়ুর বিবর্তনের কারনে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাচ্ছে, আল মেরুপ্রানীরা এই পরিবর্তিত আবহাওয়ায় নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারছে না। শুধু নরেলস্ক শহরেই নয়, বহু মেরু প্রদেশের প্রাণীরাই বাসস্থান হারিয়ে জনবসতি এলাকায় ঢুকে পড়ছে। সম্প্রতি গ্রীনল্যান্ডেও বরফের চাদরে জল, সেই জলে পা ডুবিয়ে স্লেজ কুকুর গাড়ি টেনে চলেছে, কানাডার মেরুতে ও এক ই চিত্র। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন যে ঘটনা অন্তত 70 বছর পর ঘটবে বলে আশঙ্কা ছিল, 70 বছর আগেই মেরুবরফের এই গলন নিঃসেন্দেহে পৃথিবী বাসীর চরম দুর্দিনের ইঙ্গিত। এই হারে মেরুবরফের গলন জানান দেয়, আগামী দশ বছরে পৃথিবীর বাকি অক্ষাংশের তাপমাত্রা অন্তত 4 ডিগ্রি বৃদ্ধি পাবে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং গ্রিনহাউস গ্যাস এই শব্দ গুলো আর নতুন নয়? বিশ্বের সমস্ত মানুষ এখন জানে এই বিষপূর্ণ পৃথিবীর মারণ খেলা থেকে রেহাই পেতে প্রাকৃতিক পরিবেশ কে সংরক্ষণ এবং রক্ষা করতেই হবে। প্রতিটি দেশ সরকারি বা বেসরকারি ভাবে বৃহত্তর যে উদ্যোগ ই নিক না কেন তা যথেষ্ট হবে না, যতক্ষণ না প্রত্যেক দেশের প্রতিটি নাগরিক ব্যক্তিগত বা যৌথ প্রচেষ্টায় পরিবেশ বাঁচানোর ব্যবহারিক কাজে ব্রতী হবে? গভীর তত্ত্ব কথা না জেনেও সমাজ কে বাসযোগ্য করে তুলতে সবাই কে অন্তত কয়েক টি কাজে হাত লাগাতে হবে। “একটি গাছ অনেক প্রাণ” “জল ই জীবন” … কথা গুলির মর্মার্থ অনুধাবন করে নিজ উদ্যোগে গাছ লাগানো, সেই গাছ রক্ষা করা, জলের অপচয় রোধ, প্লাস্টিক বর্জন ইত্যাদি কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করতেই হবে। নিজে এবং নিজের সন্ততিকে বাঁচানোর জন্যই পৃথিবীকে বাঁচাতে হবে। মনে রাখতে হবে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর বিরুদ্ধে কেউ একা লড়াই করতে পারে না, কোন একটি দেশ ও না! এই সমগ্র ভূখণ্ড এক প্রাকৃতিক পরিবেশে আবদ্ধ, সমস্ত জীবকূল একটি বিশ্ব পরিবারের অন্তর্গত। মনুষ্যেতর জীব নিজেরা কিছু করতে পারে না, মানুষ কেই দেশ কালের গন্ডি অতিক্রম করে এ বিশ্বকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। এখন শ্লোগান হোক- Live and let Live. Save World for better Existence.


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।