কলমের খোঁচা

পীড়িতের সেবায় অকুতোভয়, অক্লান্ত, – রেড ভলেনটিয়ার্স


দেবু রায়: নিজস্ব প্রতিবেদন: চিন্তন নিউজ:২২শে মে:– আজ এই পেন্ডেমিক অবস্থায়, একদল ভয় ডর হীন একদল যুবক যুবতী যাদের মাথায় মার্ক্সবাদ বুকে ভালোবাসা আর মনে বিশ্বাস, কিন্তু অতি বাম নয় , শুধু বামপন্থী নীতি আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে তৈরি হওয়া, ইউনিভার্সিটির একদল যুবক -যুবতী , তারাই রেড ভলিন্টিয়ার।
কি করছে না ওই বাচ্চা গুলো! কাউকে রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচাচ্ছে তো কাউকে অক্সিজেন জোগাড় করে পৌঁছে দিয়ে মানুষকে বাঁচাচ্ছে. আজকে এই অবস্থায় আমরা যদি শুনি কারোর জ্বর হয়েছে আমরা তার কাছে যেতে ভয় পাই. কিন্তু রেড ভলিন্টিয়ার এর সদস্য রা অবলীলায় পৌঁছে যাচ্ছে তার কাছে। শুধু তাই নয় সেই মানুষটিকে ডাক্তার দেখানোর ব্যবস্থা করছে বা তাকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে যাচ্ছে.
আবার যখন‌ই খবর পাচ্ছে, কোনো পরিবারের সকলে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে তাঁদের বাড়ির বাজার সহ ও সব ধরনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী, এমন কি ঔষধ জল সব, কি করছে না ওরা মানুষের জন্য !

কিন্তু কিছু জায়গাতে কিছু মানুষ রুপী জানোয়ারও তো আছে , তাঁদের থেকে নির্যাতন ও পেতে হয়েছে। যদিও সংখ্যাটা কম, কিন্তু তবুও কেউ এই রেড ভলান্টিয়ারদের দমাতে পারে নি। করোনার ভয়ে যখন অনেক জায়গায় মৃতদেহ ছুঁতে ভয় পাচ্ছে, তখন ভরসা সেই রেড ভলান্টিয়ার।

আজ সারা বাংলা জুড়ে প্রায় একলক্ষ র মতন পড়াশুনায় সবচেয়ে ভালো ছাত্র -যুব রেড ভলিন্টিয়ার সারা বাংলা জুড়ে তাঁদের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। বিনা স্বার্থে, নিজেদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতকে পরোয়া না করে। যেখানে রাষ্ট্র জনগণকে সামাজিক সুযোগ সুবিধা দিতে ব্যর্থ, তখন এই বাচ্চা গুলো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে আমাদের দোষে আমাদের ভুল সিদ্ধান্তে আজ সমাজটা কত ঘুন ধরা অবস্থায়!
আমরা যখন এই গরমে এসি চালিয়ে ঘুমের দেশে যাই, তখন রেড ভলিন্টিয়ার এর বাচ্চা -বাচ্চা ছেলে মেয়ে গুলো ছুটছে অক্সিজেন নিয়ে, অক্সিমিটার নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে অসুস্থ মানুষের সেবায়. আমি নিজেই তার প্রমান. আমি যখন কোভিড -১৯ নিয়ে হাসপাতালে, আমার ৭৬বছরের মা বিছানায় শয্যাশায়ী, একা আমার বোন বাড়িতে, তখন এই রেড ভলান্টিয়ার এর সদস্য রা আমার বাড়ির পাশে না দাঁড়ালে কি হতো ভাবলেও শিউরে উঠতে হয়। যখন যা প্রয়োজন হয়েছে ওরা ব্যবস্থা করেছে। আমার মতন আরও অনেক মানুষ এই উপকার পেয়েছেন এদের থেকে।

কিন্তু আমরা এতটাই আকৃতজ্ঞ যে আর স্বীকৃতি টুকুও মানুষকে জানাতে চাইনা কারন পাছে আমাদের ব্যক্তিস্বার্থ বা ধান্দাবাজি আঘাত প্রাপ্ত হয়। আমরা এত চতুর যে সুবিধা নেবার সময় অনেক ভালো -ভালো কথা বলি কিন্তু প্রয়োজনের সময় তার মান্যতা দিই না। প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে আমরা ধর্ম আর পাউচের গন্ধে মেতে থাকি ।

তবুও তোমাদের বলবো পিছু হটবে না নিজের সংকল্প থেকে বিশ্ব সাম্যবাদকে মাথায় নিয়ে তোমরা যুদ্ধে নেমেছো, এই যুদ্ধে তোমরা ইন্দ্রজিৎ এর মতো আদর্শের লড়াইতে নেমেছো!অন্য দিকে বিভীষণরাও কিন্তু বসে থাকবে না, তাঁরাও তাঁদের স্বার্থের জন্য তোমাদের বিরুদ্ধে যাবে, তোমাদের কাজকে অপব্যাখ্যা করে প্রচার চালাবে, বিভ্রান্তির সৃষ্টি করবো অতি বাম, কম বামদের মতন .

তোমরা পলাশীর মীরমদন, মোহনলাল হলেও মীরজাফর রুপী মিডিয়া থাকবে যারা তোমাদের খবর কোনো দিনই মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে না। কোনো দিনই ওদের মিডিয়াতে চর্চার মধ্যে আনবে না, ওরা আনবে চুরি ঘুষ খাওয়া টা সংবিধানিক না অসংবিধানিক। ওরা ব্যাস্ত থাকবে রিয়ার গাঁজা খাবার পরিমান কতো . আর কিছু না থাকলে তৈমুর এর পটি টা হলুদ না সবুজ এই নিয়ে, তবুও বলবো মীরজাফর, বিভীষন রা সমাজে থাকলেও আগামী দিনের ইতিহাস অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের মতন তোমাদের মাথায় তুলে রাখবে. আর এই মিডিয়া কুলকে, বা স্বার্থপর ধান্দাবাজদের সমাজের ভাইরাস বলে ব্যাঙ্গ করবে একটা কথা ইতিহাস চিরকাল কিন্তু সত্যর প্রকাশ করেছে। তাই বলি
কারোর দয়ায় বাঁচবি না তুই নিজের পায়ে দাঁড়া
মনের মধ্যে বল এনে, সম্মুখে পা বাড়া !


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।