জেলা

বিলুপ্ত হতে চলা কাউন চাল বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে অদম্য উৎসাহে চাষ গরুমারা ফার্মাস ক্লাবের চাষীদের।।


দীপশুভ্র সান্যাল: চিন্তন নিউজ: ১০জুন,২০২৪:- এক সময় বাংলার মানুষজন ক্ষুধা মেটাতে যে কাউন চালের ভাত খেয়েই দিব্যি দিন কাটাতেন সেই কাউন চাল গ্রামবাংলার ঐতিহ্য এবং সুস্বাদু-স্বাস্থ্যকর ফসল এখন বিলুপ্তির পথে! এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা অনেকেই কাউন চেনেন, আবার অনেকেই নামই শোনেন নি হয়ত! । পুরানো দিনে হরেক রকমের পিঠা, খীর, পায়েসসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তৈরি হতো কাউন থেকে। তবে উত্তরের জলপাইগুড়ি জেলায় দেখা মিলল এই গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী হারিয়ে যেতে বসা কাউন চালের।

এই কাউন চাল আবার কি, কেমন এই প্রশ্ন মানুষের মনে। কাউন চাল দেখতে অনেকটা পোস্তর দানার মতো। পুষ্টিগুণও রয়েছে বেজায় ভাল। রক্তে মিশে থাকা খারাপ কোলেস্টোলের মাত্রা কমায়, কাউনে থাকা পটাশিয়াম শরীরে লবণের ভারসাম্য বজায় রেখে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এছাড়াও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি। তবে আগেকার দিনের মানুষ এত গুণ না বুঝেই সহজলভ্য হওয়ায় শুধুমাত্র পেট চালাতেই খেতেন কাউনের চাল।

৮০ এর দশকের পর উন্নত কৃষি প্রযুক্তির কল্যাণে পর্যাপ্ত ধান উৎপাদন হতে থাকলে ক্রমশ কমতে কমতে এখন প্রায় হারিয়েই গিয়েছে এক সময় গরীব অসহায় মানুষের ক্ষুধা নিবারণকারী বহু পুষ্টিগুণে ভরা কাউনে চালের আবাদ। প্রসঙ্গত জলপাইগুড়ি জেলার দক্ষিণ ধুপঝোড়ার কৃষক এলাকার গরুমারা ফার্মার্স ক্লাবের চেয়ারম্যান লিটন বাবুর দেওয়া উৎসাহে এবার প্রথম কাউনে চালের চাষ করে ব্যাপক আনন্দিত এলাকার চাষিরা। এই অঞ্চলে তার উদ্যোগেই প্রথম চাষ হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এই চাল। কাউন নামের ফসলটি যাতে বিলুপ্ত হয়ে না যায় তাই বাঁচিয়ে রাখতেই এই উৎসাহ। এই কাউন চাষে কোনও রাসায়নিক সার ব্যবহার না করেও ভালো ফলন সম্ভব। সবচেয়ে মনমুগ্ধকর পরিবেশ নজরে আসে ভোরে। কাউনের ক্ষেতে ভোর হতেই উড়ে আসে হাজার হাজার পাখির ঝাঁক। এছাড়াও খদ্দেরের কাছে দাম ভালো মেলায় বেশ খুশি কাউন চাষের সঙ্গে যুক্ত চাষিরাও। এই চালের বর্তমানে প্রায় ২০০ টাকা কেজি দর উঠছে বাজারে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।