সুপর্ণা রায়: চিন্তন নিউজ:১৬ই ফেব্রুয়ারি:- পশ্চিমবঙ্গের মানুষ দেখেছেন অনেক ধরনের আন্দোলন। কখনো সরকারের পক্ষে আবার কখনও সরকারের বিপক্ষে। অনেক প্রাণ গেছে জনগণের স্বাভাবিক দাবি আদায় করার আন্দোলন করতে গিয়ে। কিন্তু আজ বাংলা যে আন্দোলন দেখলো একদম মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বাড়ীর সামনে আদিগঙ্গাতে, তা এককথায় অসাধারণ এবং অভূতপূর্ব। অনেক দিন ধরেই চলছে পার্শ্ব শিক্ষকদের আন্দোলন। আজ সেই পার্শ্ব শিক্ষকরাই বুঝিয়ে দিলেন তাঁদের আন্দোলনের জল কতদূর গড়াতে পারে।
আজ সকাল ১০:৩০ নাগাদ আলিপুর জেলের কাছে এবং তার আশেপাশের কিছু জায়গায় পার্শ্ব শিক্ষকদের ছোট ছোট দল জমায়েত হয়। একেকটি দলে পাঁচ ছয় জন করে পার্শ্বশিক্ষক ছিলেন। দলগুলো পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে সোজা আদি গঙ্গার ধারে উপস্থিত হন এবং কেউ কিছু বুঝতে পারার আগে ঝাঁপ দেন আদিগঙ্গায় যা একদম মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ীর সামনে।। তাঁদের হাতে রয়েছে তাঁদের দাবী সমূহ লেখা প্লাস্টিক মোড়া প্ল্যাকার্ড।সেই প্ল্যাকার্ড উঁচু করে তুলে তাঁরা সাঁতার কাটতে শুরু করেন।।
এমন ঘটনার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিলেন না।। হতচকিত পুলিশ বাহিনী তড়িঘড়ি গঙ্গার ধারে উপস্থিত হন।। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র হাজির হন।। অনেক অনুরোধ করে তাদের পাড়ে তোলা হয় এবং প্রায় পাঁচ জন শিক্ষামিত্রকে গ্রেফতার করা হয়।। রুনু দত্ত নামে এক শিক্ষামিত্র জল থেকে উঠে হাউ হাউ করে কাঁদতে কাঁদতে জানিয়েছেন গত সাত বছর ধরে তাঁদের কোনো বেতন নেই, নেই কোন প্রকার ভাতা। সংসার ঋনের দায়ে ডুবে গেছে।। প্রশাসনের নজরে তাঁদের অবস্থা আনার জন্য এই ধরণের আন্দোলন।।
সরস্বতী পূজার দিন সকাল বেলা এই ঘটনায় হকচকিয়ে গেছে প্রশাসন। জানা গিয়েছে বেতন কাঠামোর পরিবর্তন এবং স্থায়ীকরণের দাবিতে তাঁদের এই আন্দোলন। তাঁরা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন তাঁদের দাবি অবিলম্বে পূরণ না হলে এই আন্দোলনের জল অনেক দূর গড়াবে।
সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পে নিযুক্ত এডুকেশন ভলান্টিয়ার শিক্ষক বা শিক্ষামিত্রদের সমস্যা দীর্ঘদিনের। তাঁদের দাবি, ছয় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে বেতন। সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পে যুক্ত প্রায় ১২০০ স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষকরাও অনুমোদনহীন মাদ্রাসার শিক্ষকরা চরম সঙ্কটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এরই মধ্যে করোনা রুখতে বন্ধ রাখা হয়েছিল স্কুল, কলেজ। ফলে আরও সমস্যায় পড়েন তাঁরা।