অর্থনৈতিক দেশ

দেশের বর্তমান অর্থনীতি এবং সরকারী বদান্যতায় ঋণ খেলাপীদের ৬২ হাজার কোটি টাকা ঋণ মকুব —–


-বিশেষ প্রতিবেদন: মিতালী সরকার : চিন্তন নিউজ:১৬ই ফেব্রুয়ারি:– ঋণ খেলাপি ভারতবর্ষের একটি জ্বলন্ত সমস্যা, পর্যাপ্ত ” সিকিউরিটি ” না নেওয়া, কঠোর আইনি ব্যবস্থা না নেওয়া, অর্থাৎ সরকারী উদাসীনতা ঋণখেলাপির সংখ্যা ও পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করছে । আরো একটি কারণ হলো বাইরের চাপে কাজটি করা অর্থাৎ সরকারী উদাসীনতায় বিনা সিকিউরিটিতে ঋণ প্রদান করার জন্য প্রভাবশালী ঋণ গ্রহীতারা ঋণ খেলাপিতে পরোক্ষভাবে উৎসাহিত হচ্ছেন।

যদিও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দায়িত্ব হলো অন্যান্য ব্যাঙ্কে কি ধরনের ব্যবস্থাপনা চলছে তা মনিটরিং করা কিন্তু এক্ষেত্রেও ঠিকমতো পর্যালোচনা হয় না বলেই ব্যাঙ্কগুলোর ভেতর – তা ব্যক্তি খাতে হোক বা রাষ্ট্রীয় মালিকানায় হোক সেখানে অভ্যন্তরীণ সুশাসনের বড় অভাব দেখা দিয়েছে। যার কারণে এই ঋণ ফেরত না দেওয়া বা জালিয়াতি সহ নানা ধরনের কার্যক্রম ঘটে যাচ্ছে। এসব দেখলে বোঝা যায় ঋণ ফেরত আনার ক্ষেত্রে সরকারের যে ধরনের কঠিন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন ছিল, বাস্তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা প্রয়োগ করা হয় না। তাই পুরনো অনাদায়ী ঋণ আদায় তো হচ্ছেই না বরং নতুন করে দেওয়া ঋণও খেলাপি হয়ে যাচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে কোনো ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে খেলাপি ঋণ আদায় করতে ব্যর্থ হবার কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এমন কোনো দৃষ্টান্ত নেই। বিশিষ্ট আর টি আই কর্মী সকেত গোখেল এবং বিশ্বনাথ গোস্বামী আলাদা আলাদা ভাবে আর বি আই এর কাছে ” তথ্য জানার অধিকার ” আইনে জানতে চাওয়ায় যে তথ্য উঠে এসেছে, সেখানে ভারতের শীর্ষে থাকা ৫০ জন ঋণ খেলাপির নাম প্রকাশিত হয়েছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে যতীন মেহেতার উইনসোম ডায়মন্ডস এবং জুয়েলারী। এদের ৩,০৯৮ কোটি টাকা রোট অফ হয়েছে। বাসমতী চাল প্রস্তুতকারী কোম্পানি আরইআই এগ্রোর ২,৭৮৯ কোটি টাকা , রাসায়নিক কোম্পানি কুদস চেমির ১,৯২৭ কোটি টাকা, নির্মাণ সংস্থা জম ডেভেলপারদের ১,৯২৭ কোটি টাকা , শিপ বিল্ডিং সংস্থা এবিজি শিপইয়ার্ডের ১,৮৭৫ কোটি টাকা রোট অফ করা হয়েছে। বিজয় মালিয়ার কিংফিসার এয়ার লাইন্সের জন্য ১,৩১৪ কোটি টাকা রোট অফ করা হয়েছে। মেহুল চোকসির গীতাঞ্জলি জেমস , যাদের ৫,০৭১ কোটি টাকার এন পি এ রয়েছে, বিভিন্ন ব্যাঙ্ক এই কোম্পানির ৬২২ কোটি টাকার রেট অফ করেছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের ” কালাধন ” উদ্ধারের প্রচেষ্টা সফল তো হয়ইনি উপরন্তু সরকারের অপদার্থতার ফলে ঋণ খেলাপীরা বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে।।এই বিপুল অংকের অনাদায়ী ঋণ এর বোঝা চেপেছে পরোক্ষভাবে সাধারণ মানুষের উপর । অর্থনীতিবিদদের মতে এর ফলে দেশের আর্থ সামাজিক ভারসাম্য সম্পূর্ণ ভাবে বিনষ্ট হয়েছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।