দেশ

নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অনৈতিক আয় এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের রায়।


সলিল ঘোষাল: চিন্তন নিউজ: ১৬/০২/২০২৪:– ২০১৮ সাল থেকে অনৈতিক উপায়ে নির্বাচনী তহবিল কে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলার স্বার্থে বিজেপি Electoral Bond Scheme চালু করলো। যার মাধ্যমে দেদার কালো টাকা কে সাদা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল !! আমরা বামপন্থীরা প্রথম থেকেই এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করে আসছি এবং এর মধ্যে দিয়ে রাজনৈতিক দল গুলির ভিতরে দুর্বৃত্তায়নের প্রভাব যে ক্রমশই বাড়বে–এই আশঙ্কা আমরা অনেক আগেই করেছিলাম। অবশেষে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট এটাকে অ-সাংবিধানিক আখ্যা দিলেন। বিজেপি এবং তার দোসরদের উদ্দেশ্য ছিল–শক্তিশালী দলীয় নির্বাচনী তহবিল গঠন করে সাধারণ গরীব অসহায় মানুষদের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে তাদের ভোট কেনা। এ ক্ষেত্রে একটা ছোট্ট উদাহরণ ই যথেষ্ট–এখন পর্যন্ত নির্বাচন বন্ড থেকে বিজেপি র লিখিত আয় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা !! বিজেপি র দোসর তৃণমূল কংগ্রেসের লিখিত আয় প্রায় পাঁচশো আঠাশ কোটি টাকা !! যা কিনা ২০২০–২০২১ সালের তুলনায় শতকরা হিসাবে ১২০০% বেশি !! এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে সি পি আই (এম) এর তহবিলের ৪০% আসে স্বেচ্ছা অনুদানের মধ্য দিয়ে আর ২৯% আসে পার্টি সদস্যদের কাছ থেকে প্রাপ্ত লেভী সংগ্ৰহের মধ্যে দিয়ে। নির্বাচনী বন্ডের থেকে পার্টির আয় শুন্য !! আমরা যেমন রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়নের বিরোধী, তেমনি দল এবং সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থার ভূমিকার ও তীব্র বিরোধী। এই মূহুর্তে বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থার পছন্দের তালিকার প্রথম নাম বি ডি জে পি-র। ঠিক তার পর ই তৃণমূল কংগ্রেসের নাম !! নির্বাচনী বন্ডের ফলে মানুষের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ বা বাক স্বাধীনতার অধিকার যে খর্ব হবেই–এ কথা অনেক আগেই বামপন্থীরা অনুমান করতে পেরেছিল, আর তাই প্রথম থেকেই তারা এই বিপজ্জনক আইনের বৈধতা নিয়ে সরব। রাজনৈতিক দল গুলির আয়ের উৎস এবং তার স্বচ্ছতা-অস্বচ্ছতা সম্পর্কে জনসাধারণের জানবার অধিকারটা যে ভারতীয় সংবিধান সম্মত–এই সত্যতা কে শাসক শ্রেণী লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিল!! আমরা আশা করি মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের এই উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্তের ফলে সংসদীয় গণতন্ত্রের ভিত আরো অনেক মজবুত হবে। এই ধরনের একটা জঘন্য নিয়মের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের কাছে সি পি আই(এম) এর আবেদন এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে সেটা প্রতি মান্যতা নিঃসন্দেহে বামপন্থীদের মনোবল অনেকাংশে বাড়িয়ে দিয়েছে, এবং নির্বাচন বিধি সংক্রান্ত যাবতীয় কালা নিয়ম নীতির বিরুদ্ধে আগামী দিনে ও বামপন্থীদের আন্দোলন আরো অনেক বড় আকার ধারন করবে–এ ব্যাপারে আমরা ভীষন আশাবাদী।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।