বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ভারত মহাসাগরের নিচে সন্তরণরত প্লেটের গতিতে ভূমিকম্প ঘটার সম্ভাবনা


কল্পনা গুপ্ত, চিন্তন নিউজ – পৃথিবীর এখন বড়ো দুঃসময়। মানুষই একমাত্র প্রাণী যে সমস্ত কিছুই পরিকল্পিতভাবে করে চলে। কিন্তু প্রকৃতি চলে তার আপন নিয়মে। সেখানে কোন বোঝাপড়া কাজ করে না। তাই প্রকৃতপক্ষে প্রকৃতিই একমাত্র আমাদের সময়ের নিয়ন্ত্রক।

করোনা ভাইরাসের আক্রমণ, আমফানের তান্ডবলীলা, নতুন বিপদ পঙ্গপালের উপদ্রব, এসবের সাথে নিঃশব্দে অপেক্ষা করে আছে আরেক সম্ভাব্য বিপদ- তাহলো ভারত মহাসাগরের নিচে টেকটোনিক প্লেট ভেঙে যাচ্ছে। সম্প্রতি গবেষকেরা এই তথ্য আবিষ্কার করেছেন। অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মাঝে এই প্লেটে ফাঁক দেখা যাচ্ছে। প্রতি বছর ০.০৬ ইঞ্চি করে সরে যাচ্ছে।

বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট লাইভ সায়েন্সে জানিয়েছে, আট বছর আগে একবার ভারত মহাসাগরের নিচে ভূমিকম্প হয়েছিল। তারপর থেকেই ওই প্লেটের পরিবর্তন লক্ষ্য করছেন তারা। ইন্সটিটিউট অব আর্থ ফিজিক্স অফ প্যারিসের বিজ্ঞানীরাই এই তথ্য সামনে এনেছেন।

ভূত্বকের নিচে ৭০-২২০ কিমি গভীরে উত্তাপের কারণে ভূ অভ্যন্তরীণ পদার্থ পিচের মত সান্দ্র অবস্থায় থাকা স্তরটিকে এস্থনোস্ফেয়ার বলে। পাতিগুলো ওই এস্থেনোস্ফেয়ারের ওপর ভাসমান অবস্থায় থাকে। পাতগুলির গড় গভীরতা ১০০কিমি এবং পাতগুলি সর্বদা গতিশীল। কিন্তু খুব ধীর গতিতে পাতের চলন ঘটে।

০.০৬ ইঞ্চি করে সরে যাওয়ার গতিতে পাত দুটি সরতে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু যেহেতু প্রক্রিয়াটি জলের তলায় ঘটছে তাই পরিবর্তনগুলির প্রতি নজরদারি চলছে। এভাবে প্লেট সরলে অবশ্যই তার প্রভাব হিসাবে ভূমিকম্প হবে। তাই কখনও যে বড়রকমের ভূমিকম্প হতে পারে সে বিষয়ে সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে বলছেন না ভূবিজ্ঞানীরা।

সাবমেরিন রিলিফ ও সিসমিক ডেটা থেকে জানা গেছে যে ২০১২ সালে প্লেট ভূমিকম্পের মাত্রা ছিলো ৮। গবেষকেরা জানাচ্ছেন ভারত মহাসাগরের নিচে যে বিশেষ ফল্ট দেখা গিয়েছে তার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো কয়েক মিলিয়ান বছর আগে। তারই জেরে ২০১২ তে ব্যাপক ভূমিকম্প ঘটে। তবে প্রাকৃতিক নিয়মে প্রতিসারী প্লেট দুটি যখন পরষ্পর থেকে সরে যাবে তখন নানান আকারের ভূমিকম্পের সম্ভাবণা থাকবেই। যেহেতু এই প্রক্রিয়া খুব সময়সাপেক্ষ তাই বিজ্ঞানীরা বিষয়টি সম্বন্ধে অবগত করলেও এখুনি কোন ভূমিকম্পের সম্ভাবণা নেই বলেই জানিয়েছেন।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।