রাজ্য

বোনাস পেলেও পরিমাণ নিয়ে খুশি নয় তোতা পাড়া চাবাগানের চা শ্রমিকরা


সঞ্জিত দে,ধূপগুড়ি:চিন্তন নিউজ: ২৩ সেপ্টেম্বর: শারদোৎসববের প্রাক্কালে হাতে বোনাস পেলেও খুশি নয় চাবাগানের শ্রমিকরা। ডুয়ার্সের বানারহাট থানার তোতা পাড়া চাবাগানে। এদিন বোনাস প্রদান করা হয়।যে পরিমাণ বোনাস প্রদান করা হয় তা অনান্য চাবাগানের তুলনায় প্রায় ৮ শতাংশ কম বোনাস দেওয়া হয়। আর তাতেই মন ভার চা শ্রমিকদের।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বানারহাট থানার অন্তর্গত তোতাপাড়া চা বাগানে শারদীয় উৎসব বোনাস দেওয়া হল। এর আগে চা বাগানের মালিক পক্ষের সাথে শ্রমিক সংগঠনের বৈঠকে বিভিন্ন চা বাগানের বোনাস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। সেই মিটিং-এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কোন বাগান কত শতাংশ হারে তাদের শ্রমিকদের বোনাস দেবেন। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডুয়ার্সের এই তোতাপাড়া চা বাগানে ১২% হারে বোনাস দেওয়া হল। বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটে থেকে বোনাস প্রদান করার কাজ শুরু করা হয়। দুপুরের কাজ সেরে চা বাগানের শ্রমিকরা ফ্যাক্টরিতে উপস্থিত হয়ে বোনাস সংগ্রহ করেন। সকাল থেকে শ্রমিকরা সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেছিলেন এত কম হারে কেউ বোনাস নেবেন না।পরে বাগানের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন বর্তমানে সকলের যে রকম আর্থিক সঙ্কট চলছে এবং বাগানের মালিকানার হাত বদল হয়ে যা পরিস্থিতি তাতে বাধ্য হয়ে এবার এই হারেই বোনাস নিতে হবে।পূর্বতন মালিক পি এফ গ্র‍্যাচুইটি সহ আরও কিছু বকেয়া রেখে গেছে। সে কারনে ডুয়ার্সের যে কয়েকটি রুগ্ন চা বাগান রয়েছে তার মধ্যে তোতাপাড়া অন্যতম। পুজোর তিন সপ্তাহ আগে বোনাস পেলেও পরিমাণ নিয়ে খুশি নয় চা শ্রমিকরা। চা শ্রমিকদের অভিযোগ অন্যান্য বাগানের থেকে অনেক কম হারে বোনাস তাদের দেওয়া হয়েছে। এই সামান্য কয়েক টাকা দিয়ে পুজোর আনন্দ তো দূরের কথা বাকি বকেয়া শোধ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। বাগান কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে তোতাপাড়া একটি রুগ্ন চা বাগান এই কারণেই অন্যান্য বারের তুলনায় এই চা বাগানে পুজোর বোনাস এর পরিমাণ কিছুটা কম। তবে বাগানের শ্রমিকরা বাগান কর্তৃপক্ষের এই দাবি মানতে নারাজ। বাগানের শ্রমিকদের দাবি এই বাগানের চা পাতার উৎপাদনের পরিমাণ যথেষ্ট ভালো।কিন্তু বোনাস কম দেওয়ার জন্য রুগ্ন বাগানের তকমা অজুহাত মাত্র। তবে বোনাস এর পরিমাণ যাই হোক না কেন সেই টুকু অর্থ দিয়েই পুজোর দিন গুলি আনন্দে কাটাতে চান চা শ্রমিকরা।

চাবাগান শ্রমিক রবি ওরাও বলেন,তাদের মুদি দোকানে অনেক বাকি রয়েছে, এই টুকু বোনাসে তাদের কিছু হবে না। অন্যান্য বাগানে অনেক বেশি বোনাস দিয়েছে অনেক বেশি দিয়েছে। আর নতুন জামা কাপড় পুজোতে কিনবে কি করে, ঋণ দিতেই শেষ হয়ে যাবে।

চা বাগান শ্রমিক মোস্তাক আনসারী বলেন, “আমরা তো বোনাস প্রথমে নিতে চাইনি কিন্তু আমাদের উপর মহলে যে সমস্ত শ্রমিক নেতারা রয়েছে তারা মিটিং এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই ইচ্ছা না থাকলেও আমরা নিলাম। আমরা এইটুকু বোনাসে খুশি নই, আমাদের বাগানের অবস্থা খারাপ না। এখানে পাতা অনেক বেশি উঠে। আমাদেরকে কুড়ি শতাংশ বোনাস না হলেও অন্তত ১৮ শতাংশ বোনাস দেওয়া উচিত ছিল বাগান কর্তৃপক্ষের। “

, বাগান ফিল্ড ম্যানেজার পিনাকী দত্ত বলেন ,তাঁদের বাগানে ৮২৪ জন স্থায়ী শ্রমিক রয়েছে। তাদের বোনাস প্রায় ৫২ লক্ষ টাকার দেওয়া হলো। অন্যান্য বাগানে কুড়ি শতাংশ হলেও এই বাগানে ১২ শতাংশ করেই মিটিং এ সিদ্ধান্ত হয়েছে । কারণ এই বাগানটি রুগ্ন বাগান।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।