সমদর্শ্শী চিন্তন নিউজ, ৫ আগষ্ট: গত ২৬শে আগস্ট ২০১৮ তে মূলত চরম দূর্নীতি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, ও স্বজনপোষনের অভিযোগে এ রাজ্যের তৃণমূল সরকার চন্দননগর পৌরবোর্ড ভেঙে দেয়।
২৩ জন তৃনমূলী কাউন্সিলর থাকা সত্বেও এই বোর্ড চলছিল চরম দূর্নীতির মধ্যে দিয়ে।
গত বছর এই পৌরবোর্ডের এক তৃনমূলী কাউন্সিলর অপর একজন তৃনমূল কাউন্সিলরকে মারধরের কারণে এই বোর্ড ভেঙে দিয়ে রাজ্য সরকার একজন প্রশাসক বসায়। ফলে চন্দননগর পৌরসভার ৩৩ টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পদ বাতিল হয়ে যায়। এর ফলে সবচেয়ে অসুবিধার সম্মুখীন হন এই পৌরসভার সাধারণ মানুষ। রেসিডেন্সিয়াল, ইনকাম, ওয়ারিশন, কাস্ট , ক্রিমিয়েশন সার্টিফিকেটের মতো অতি প্রয়োজনীয় নাগরিক পরিষেবার পেতে মানুষকে নাকাল হতে হয়।
অপর দিকে এর মাস ছয়েক পরেই সরকার কোনো নির্বাচনের ব্যবস্থা না করে পিছনের দরজা দিয়ে মেয়র সহ ঐ সকল দূর্নীতিগ্রস্ত কাউন্সিলরদের ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠন করে। এ যেন চোরকে পাহারার দায়িত্ব দেওয়া হোলো।
এই ঘটনার প্রতিবাদে অবিলম্বে পৌর নির্বাচন, দূর্নীতিগ্রস্ত কাউন্সিলরদের গ্রেপ্তার ও কাটমানি ফেরতের দাবি নিয়ে গত ২৬শে জুলাই সিপিআইএম উত্তর দক্ষিণ এরিয়া কমিটি এবং মধ্য পশ্চিম এরিয়া কমিটির যৌথ উদ্যোগে চন্দননগর পৌর ভবনের সামনে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত শহরের নাগরিকদের একটি অবস্থান বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। এতে শহরের অনেক বিশিষ্ট মানুষ জন অংশ নেন।বক্তারা বলেন, অবিলম্বে নির্বাচন হোক, তাতে যে দলই আসুক, তবু মানুষের গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক।
বিভিন্ন বহুতল আবাস প্রকল্পে কোটি কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন, যত্রতত্র জলাভূমি বোজানো, নির্বিচারে সবুজ ধ্বংস, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকায় কাউন্সিলরদের উৎকোচ গ্রহন ছাড়াও রাস্তা তৈরি, আলোকস্তম্ভ নির্মাণ, সবেতেই চলছে কাটমানি নেওয়ার এক বিশাল দূর্নীতির চক্র। বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার টাকার অনিয়মিত বন্টন চলছে অবাধে। পৌরনিগম চালিত বিদ্যালয়গুলির বেহাল দশা, দিশারী স্বাস্থ্য কেন্দ্র বেহাল, পৌরসভার ৩০০ পদ শূন্য এমনকি ২০১১ থেকে নিযুক্ত ঠিকা শ্রমিকরা অনিশ্চয়তায় ভুগছে।
বামেদের আমলে স্থায়ী সম্পদ এই শহরের বুকে তৈরী হয়ছিল যেমন দিশারী, রবীন্দ্রভবন, রানী ঘাট, বিভিন্ন বরো ও ওয়ার্ড কমিটি, গোন্দলপাড়া জলপ্রকল্প, স্বাগতম ভবন নির্মাণ, উড়ালপুল, ইন্ডোর স্টেডিয়াম প্রমুখ। এই তৃনমূলী আমলে গঠনমূলক তেমন কিছু ই হয়নি। গোন্দলপাড়া জুটমিল বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আলোচনা শেষে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে কমিশনারের কাছে ডেপুটেশনে দেওয়া হয় এবং এতে কাজ না হলে আরও বড় আন্দোলনের শপথ নেওয়া হয়।