রাজ্য

দীর্ঘ ৫০বছরের ধারাবাহিকতা ভেঙে রাজ্যসরকারি কর্মচারীদের বেতন স্লিপ থেকে উধাও ” ডিএ” কলাম।


সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:২৮শে জানুয়ারি:–রাজ্যসরকারি কর্মচারীদের বেতন স্লিপ থেকে উধাও ” ডিএ” কলাম।রেকর্ড তৈরি করল মমতা ব্যানার্জি সরকার। গত ৫০ বছরে যা হয়নি এবার তাই ঘটল ।।

পাঁচ দিনের সরকারি ছুটি, তাই আজ বেতন তুলবেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।।প্রথম ডিএ ছাড়াই বেতন পেতে চলেছেন যা একটি নজিরবিহীন ঘটনা।। চলতি মাসেই বেতন কমিশনের সুপারিশ করা বেতন আর সেই বেতনেই থাকছে না মহার্ঘ ভাতা।।”সে অ্যান্ড এলাউন্স”থেকে এমাসেই প্রথম মহার্ঘ ভাতার কলাম উধাও হয়ে গেছে।। কর্মচারীদের পে স্লিপেও নেই”ডিএ” লেখা।। কর্মীদের সঙ্গে এই বঞ্চনার রূপকার পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।।

স্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার থেকে কোনো রাজ্য সরকার এমন অমানবিক ঘটনা ঘটাতে পারে নি।। । প্রায় ৮ লক্ষ কর্মচারী এই বঞ্চনার শিকার হলেন।। কর্মচারীদের জন্য শুরু এক কঠিন পথ চলা ।। বেতনের সাথে কর্মচারীরা চার ধরনের ভাতা পেতেন এতদিন ।।। মহার্ঘ ভাতা, চিকিৎসা সংক্রান্ত ভাতা, বাড়িভাড়া সংক্রান্ত ভাতা ও অন্যান্য বিশেষ ভাতা।। জানুয়ারি মাসের বেতনে সব ভাতা আছে কিন্তু কর্মচারীদের জন্য যেটা সবথেকে প্রয়োজনীয় ভাতা ডিএ টাই উধাও।।

কাশ্মীরের মতো সেনা ঘেরাটোপের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও সেই রাজ্য সরকার কর্মচারীদের ডিএ দিচ্ছে নিয়মিত ব্যতিক্রম হলো শুধু এই পশ্চিমবাংলা।। মুদ্রাস্ফীতির জন্য মূল বেতনের টাকা ক্ষয় হয় আর সেই জায়গাটা পূরন করে মহার্ঘ ভাতা।।আর অভিরূপ সরকার দ্বারা গঠিত হয়েছিল যে বেতন কমিশন তাতে ডিএর কোন উল্লেখই করা হয়নি।।কমিশন ডিএ প্রসঙ্গে ঠিক কি বলছে তা জানার কোন উপায় নেই কারণ করিতকর্মা সরকার কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনে নি।।

অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র গতবছর ২৩ শে সেপ্টেম্বর মন্ত্রী সভার বৈঠকে সাংবাদিক সম্মেলনে বেতন কমিশন এর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন কিন্তু তখন বকেয়া মহার্ঘ ভাতা নিয়ে একটি কথাও খরচ করেন নি।। সুপারিশ গ্রহণ করার পর আসে রোপা_ এতেও মহার্ঘ ভাতা নিয়ে কোন কথা ছিল না।।আর এই সুত্র ধরে বেতন স্লিপ থেকে উধাও হয়ে গেল মহার্ঘ ভাতা কলাম টি যা কর্মচারীদের মোটামুটি ভালো থাকার প্রধান উপাদান।। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক রাজ্য সরকারি কর্মচারী দের।।

১৯৭০ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকার এর হাত ধরে ডিএ প্রাপ্তি র সূচনা ঘটে ।। ১৯৭০ এ প্রথম সে কমিশন বসে তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।। বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৮১,১৯৯০,১৯৯৮,২০০৯ সালে নিয়মিত বেতন কমিশন বসে আর তা কার্যকর করা হয়।। মহার্ঘ ভাতা বেতন এর অংশীদার আর মমতা ব্যানার্জি সরকার এর আমলে ডিএ প্রাপ্তি র অধিকার আপাতত ইতি ঘটল।। উল্লেখযোগ্য ঘটনা এখন রাজ্যসরক্ষকারি কর্মচারী দের বকেয়া ডিএ প্রায় ৫৪%।। এই পরিমাণ আর ও বাড়বে কারণ জানুয়ারি তে মহার্ঘ ভাতা বাড়ছে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের।।রাজ্য কো অর্ডিনেশন কমিটির সম্পাদক বিজয় সিনহা বলেন “”নজিরবিহীন ঘটনা_ ভূ ভারতে এমন নজির নেই যে মহার্ঘ ভাতা ছাড়া বেতন।।”” মহার্ঘ ভাতা নিয়ে রাজ্যসরকার মুখে কুলুপ এঁটেছে।।

মুখ্যমন্ত্রী ভরা সভায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলেছেন কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পেতে হলে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যান।।অথচ সংবিধানের ৩০৯ ধারায় রোপা বিধিতে বলা আছে মহার্ঘ ভাতার অধিকার স্বীকৃত।। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে যতগুলো রোপা বিধি চালু হয়েছে তার সবকটি যে মহার্ঘ ভাতার কথা ছিল ।। এবার নেই আর তাই সংবিধান বহির্ভূত কাজ করেছে পশ্চিমবঙ্গের মমতা ব্যানার্জি সরকার।।।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।