দেশ

গুজরাতের পরিযায়ী শ্রমিকদের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন সি পি আই এম এর সাধারণ সম্পাদক


মল্লিকা গাঙ্গুলী:চিন্তন নিউজ:৩১মার্চ :বিশ্বজুড়ে মৃত্যু ভাইরাসের সংক্রমণে মানুষ দিশেহারা। দেশের অভ্যন্তরে ও করোনা মোকাবিলায় বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে দেশ জুড়ে নানান অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটছে। এরকমই ঘটনা ঘটেছে গুজরাতের সুরাটে।

ভারতবর্ষের বেশিরভাগ দিনমজুরই পরিযায়ী শ্রমিক। বিশেষ করে বিহার এবং উত্তর প্রদেশ থেকেই ভারতের সব প্রদেশে শ্রমিকের যোগান হয়। গুজরাতের সুরাটেও অসংখ্য বহিরাগত শ্রমিক কাজ করে। তারা তাদের পরিবারের গ্রাসাচ্ছাদনের কারনেই ঘর পরিবার ছেড়ে কোনো রকমে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দিন গুজরান করে! এমতাবস্থায় দেশে করোনা সংক্রমণ রুখতে হঠাৎ করেই গত ২১শে মার্চ সরকারি ভাবে গৃহবন্দী ঘোষণা করা হলে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পরে! বিশেষ করে পরিবহন ব্যবস্থা স্তব্ধ হয়ে গেলে এই পরিযায়ী শ্রমিকরা দিশেহারা হয়। তারা নিজেদের পরিবার পরিজনের কাছে ফিরে যেতে উদগ্রীব হয়ে ওঠে। গুজরাতের সুরাট প্রদেশের তিরুপতি নগর এবং গনেশ নগরের প্রায় পাঁচশ’ শ্রমিক বাড়ী ফেরার জন্য পথে নামে এবং পরিবহনের দাবি জানায়।

কিন্তু গুজরাত পুলিশ চরম নির্দয় ভাবে এই জনতার উপর লাঠি চার্জ করে, কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। অপর দিকে মরিয়া মানুষ গুলিও আত্মরক্ষার্থে ইট ছুঁড়তে থাকে । ফলে যথেষ্ট বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। সুরাতের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন শ্রমিকরা গৃহবন্দীর নির্দেশ মানতে রাজি নয়, তারা জোর করে রাস্তায় নামে। পুলিশের দাবি শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে ঝামেলা করায় পুলিশ তিরিশ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় এবং প্রায় ৯৫ জন শ্রমিককে গ্রেফতার করে। পুলিশ শ্রমিকদের উপর দাঙ্গা এবং পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে আনে। এই রকম এক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায় ঐ অসহায় মানুষের উপর চাপিয়ে প্রশাসন যে দায়িত্ব পালন করছে তা কখনোই গ্রহনযোগ্য নয়।

গুজরাতের এই ঘটনার চরম নিন্দা করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সি পি আই এম এর সাধারণ সম্পাদক। তিনি স্পষ্ট ভাষায় প্রশ্ন তুলেছেন “এ কি মোদি রাজ্যের গুজরাত মডেল নাকি ??” তিনি আরো বলেন কোনো রকম পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই সরকার হঠাৎ করে লকডাউন ঘোষনা করেছেন। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ভিন রাজ্য থেকে আগত শ্রমিকদের এর ফলে কি পরিনতি হবে, তাদের আপনজনের কাছে ফেরার কি ব্যবস্থা হবে, কিছুই ঠিক না করে তাদের আটকে রাখা হয়েছে। পরিযায়ী এই শ্রমিকরা ও মানুষ, বিশ্ব জুড়ে এক ভয়াবহ মৃত্যু ভয় পরিবার পরিজন বিচ্ছিন্ন মানুষ গুলোর মানসিক অবস্থার কথা ভাবা উচিত। দমন পীড়নের দ্বারা মানুষকে দাবিয়ে রাখার কৌশল অন্তত এ ক্ষেত্রে মেনে নেওয়া যায় না! দেশের কোভিড ঊনিশ সংক্রমণের মতো জরুরি পরিস্থিতিতে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা সময় সাপেক্ষে সঠিক পদক্ষেপ হ’লেও মৃত্যু ভীতিতে আতঙ্কিত মানুষগুলির প্রতি সরকারের এবং প্রশাসনের অনেক বেশি সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।