দীপঙ্কর সমাদ্দার: চিন্তন নিউজ:২৪শে অক্টোবর:– অকাল অপরিসীম বর্ষায়, মনিরাম গ্রামীন এলাকায় চাষিদের ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সিপিআই(এম) কর্মীদের ছোট টিম করে গত দুইদিন ধরে একদম কৃষকদের ধান খেতে পৌচ্ছে গিয়ে ছিলেন ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বোঝার জন্য ( টিমে ছিলেন নেতৃত্ব গৌতম ঘোষ, বনমালি বর্মন, গজেন্দ্র ছেত্রী, বিকাশ চক্রবর্তী, ওমপ্রকাশ ছেত্রী ) । পরিক্রমায় যে সব গ্রাম গুলো ছিলো, ঝাপু জোত , বড়ো মনিরাম, কিলারাম, কেটুগাবুর জোত। এই গ্রামীণ চাষি এলাকায় মূলত গরিব চাষিদের চাষ বাস। কেউ ২ বিঘা তো কেউ ৩ বিঘা আবার কেউ বা ৫ বিঘা ধান চাষ করেছেন। এই কৃষকদের জমি গুলো মূলত দোফসলি জমি, কিন্তু প্রতিবার হাতির আক্রমনে ফসলের নষ্ট করে দেওয়ার ভয়ে এই গরিব কৃষক গুলো বছরে একটি মাত্র ফসল চাষ করেন। এবার কৃষক ভাইরা পরিকল্পনা করে অল্পদিনের যে ধান ফলন বেশি দেবে সেই ধান চাষ করেছেন। যাতে হাতি আসার আগেই ধান কেঁটে বাড়িতে তুলতে নিতে পারেন। কিন্তু গত সপ্তাহ খানেকের ধরে বৃষ্টিতে যে ভাবে কাটা ধান জলের তলায় ডুবে গেছে তাতে চাষিদের কপালে হাত পড়ে গেছে।
কি করুন দৃশ্য চোখে পড়লো, জমির মধ্যে দলা পাকানো ধানের পাঞ্জা গুলোর থেকে ধানের গাছ বেরিয়ে গেছে। কারো বা কাদা মাটিতে এমন ভাবে ধান ঢেকে গেছে যে তা আর তুলে শুকানোর মতো কোন উপায় নেই। জমিতে ধান পৌঁচে গন্ধ বেরিয়ে গেছে।
কমরেড গৌতম দা কৃষকদের এই অবস্থা দেখে বারে বারে হাহুতাশ করছিলেন এবং কর্মীদের নির্দেশ দিলেন, কার কত বিঘার ধান নষ্ট হয়েছে লিষ্ট তৈরি করতে । গৌতম দা পকেট থেকে মোবাইল বের করে ব্লক আধিকারিকের সাথে কথা বলে দাবি তোলেন সরজমিনে তদন্ত করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
কথা হচ্ছিলো কৃষক ভাই হার্টওয়ার কিষানের সঙ্গে, উনি বলছিলেন, এক বিঘা ধান চাষ করতে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়। উনার ৫ বিঘা জমির ধান একদম নষ্ট হয়ে গেছে। উনার আশংকা সরকার কি আমাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিবে..?
নমিতা সিং কোনো মোতন খেতের থেকে কাদামাটির ধান আলে তুলে শুকোতে শুকোতে বিড়বিড় করে বলে চলছিলেন, ‘ ইবার ঘরত এক মুঠি ধান নাই, ইবার হাঁমা খামো কি, কি করে দিন চলবে হাঁমার।
চাষিরা আমাদের দেখে ছুটে ছুটে আসছিলেন নাম লেখাতে।চাষিরা জিজ্ঞেস করছিলেন ‘বাবু হামা কি ক্ষতিপূরণ পামো? নাকি হামার ক্ষতির টাকালা সরকারি দলের নেতা নেত্রী লা পাবে..?
আশংকা আছে, সত্যি পাবে তো এই গরিব কৃষকরা ক্ষতিপূরণ ? কেনো পাবেনা ওরা ক্ষতিপূরণ, পূজোর কারবারি ক্লাব গুলো ফুর্তির জন্য ৫০ হাজার টাকা সরকারের দিতে পারে । তবে এই গরিব কৃষক গুলোর বিপদের সময় বিঘা প্রতি ৫ হাজার টাকা কেনো ক্ষতিপূরণ সরকার দিতে পারবে না।
আবারো ভয় হয়, শিক্ষিত বেকাররা চাকরির জন্য হাহাকার করলে সরকার চপ ভাজার পরামর্শ দেয়, তখন ভয় হয়।
এবার এই কৃষকদের জন্য বুক বাঁধছি , ভিক্ষা নয়, কৃষকদের ন্যায্য অধিকারে ক্ষতিপূরণ চাই, দিতেই হবে, নইলে চলবে লড়াই।