রাজ্য

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অগণিত শিলা পুঁতেছেন,তার হিসাব এখন পাওয়া যাচ্ছে না।


সূপর্ণা রায়: চিন্তন নিউজ:২৪শে জানুয়ারি:–ঘোষণার পর এখন কোথায় কটা “”শিলা”” পোতা হয়েছে তার হিসাব হাতড়ে বেড়াচ্ছে রাজ্যসরকার__ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আবেগ বশে একের পর এক প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন কিন্তু কোথায় কি কাজ হলো তার কোন হিসেব পাচ্ছে না মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় এই নিয়ে রেগে কাঁই।। এখন সব জেলার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর পোতা শিলার অবস্থা কি? রাজ্যের সচিবালয় বেশ রেগে গেছে আর তা তাঁরা প্রকাশ ও করেছে তাদের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে।। যেখানে আর্থিক বছর শেষ হতে আর মোটে তিনমাস বাকি সেখানে যে প্রকল্পকে মুখ্যমন্ত্রী “” ফ্ল্যাগশিপ স্কিম”” হিসেবে ঘোষণা করেছেন কিন্তু সেই প্রকল্পে ২১ শতাংশ এর কম টাকা খরচ হয়েছে।।। রীতিমত বেসামাল হয়ে পড়েছে রাজ্যসরকার।।

বনদপ্তরের হাতে রয়েছে একটি বিশেষ প্রকল্প যার নাম “” সবুজ শ্রী”। এটি বর্তমান সরকারের অন্যতম ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প আর যার দেখভাল করে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়।। কড়া নজরদারি করা হয় এই প্রকল্প রূপায়ণে ।। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ যে টাকা তার খুব কম খরচ হওয়াতে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় তাদের ক্রোধ প্রকাশ করেছে।। বিশেষ সুত্র থেকে জানা যায় যে চলতি বছরে বরাদ্দ টাকার ২০’৪৮%টাকা খরচ হয়েছে।। মোট টাকা দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৯০ লক্ষ৯৩ হাজার ২২০ টাকা তার মধ্যে ডিসেম্বর পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১ কোটি ২১ লক্ষ৮৩০ টাকা।। রাজ্যে শিশুরা জন্মাচ্ছে কিন্তু তাদের জন্মের সাথে সাথে যে চারাগাছ দেওয়ার কথা তা তাদের অভিভাবকদের হাতে দেওয়া হচ্ছে না।।।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণাই সার কাজের কাজ কিছুই হয়নি।। জরুরী নির্দেশ এর ভিত্তিতে বলা হয়েছে এতদিন ধরে যে টাকা খরচ করার কথা তা ৩১ শে জানুয়ারীর মধ্যে খরচ করে ফেলতে হবে।।। এখন প্রশ্ন এই প্রকল্প টি কি??? এই প্রকল্প টি হল এটি মুখ্যমন্ত্রী র ঘোষণা যে যখন কোন বাচ্চা জন্মাবে তার অভিভাবকদের হাতে একটি করে চারাগাছ দেওয়া হবে।।এই গাছটি শিশুর পরিবার লালনপালন করবেন এবং চারাগাছ টি বড় করে তুলবেন।। সরকার এই চারাগাছ কেনে স্থানীয় চারাগাছ বিক্রেতা বা স্বনির্ভর গোষ্ঠী র কাছ থেকে।। বনদপ্তর এই কাজ দেখাশোনা করলেও কড়া নজরদারি করে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়।।

রিপোর্ট সরাসরি দেখাচ্ছে এই প্রকল্পের চুড়ান্ত দুরাবস্থা।। এখানে আরও একটি প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে যে প্রশাসনিক বৈঠক করেন তার অর্থ কি??? রাজ্য সরকার কারুর কথা শোনার প্রয়োজন বোধ করে না কারণ খবর অনুযায়ী এস এফ আই বৃক্ষরোপণ এর উদ্দেশ্য রাজ্যসরকার এর কাছে চারাগাছ চেয়েছিল কিন্তু বামপন্থী ছাত্র সংগঠন টির কথা শোনার প্রয়োজন বোধ করে নি।। শুধু এই প্রকল্প না মুখ্যমন্ত্রী র ঘোষণা করা আর একটা ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প “”জলতীর্থ””” তার ও এক ই দুরাবস্থা।। পশ্চিম অঞ্চলের লালমাটি এলাকায় ক্ষুদ্র সেচের বন্দোবস্ত করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য কিন্তু মাত্র৩৪% টাকা খরচ করতে পেরেছে চলতি বছরে।। দেওয়া হয়েছে ১৮ কোটি ৩৬ লক্ষ ৪৪ হাজার ৪৯৫ টাকা আর খরচ হয়েছে ৬ কোটি ৩৩ লক্ষ ৬৫ হাজার এর কিছু বেশি।। শুধু এই দুটি নয় _রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর এক বিশেষ নির্দেশিকা পাঠিয়েছে জেলাগুলোতে আর সেখানে জানতে চাওয়া হয়েছে গত তিন বছরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কটি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন আর দ্বিতীয়ত কটা প্রকল্প ঘোষণা করেছেন ।। এখন সেগুলো র হাল কি??? কেন ঘোষিত প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলো না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি একসময় কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী ছিলেন একটা সময় এ ।। সেইসময় তিনি এতো শিলান্যাস করেছিলেন সবাই তাকে ” শিলা দি”” বলে সন্মোধন করত।। সেই সব পোতা শিলার কি অবস্থা কেউ জানেনা।।। তারপর পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তিনি তার কাজের ধরন এক ই রেখেছেন।।

লাগাতার প্রকল্প ঘোষণা করেছেন যার কোন হিসাব মিলছে না।।আট বছর হয়েছে এই তৃনমুল পরিচালিত সরকার।।আট বছর ছেড়ে এখন গত তিন বছরের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা করা প্রকল্পের হদিশ জানতে চাওয়া হয়েছে।। কারিগরী দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন আগে তাঁরা বাস্তবায়িত প্রকল্প এর হিসাব দিতেন আর এখন এত প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে তার হিসাব মিলছে না।। জানা গেছে বিভিন্ন কারণে ঘোষণা করা প্রকল্প রূপায়ণ করা যাচ্ছে না।।তার মধ্যে একটি বিশেষ কারণ জমির অমিল।।এই যে প্রকল্প রূপায়ণ করা যাচ্ছে না সেগুলো কেন পর্যালোচনা করা হয় না??? কেন এতো এতো টাকা খরচ করে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়??????


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।