মীরা দাস, চিন্তন নিউজ, ১৬ সেপ্টেম্বর: কালো ছোপ ধরছে সোনালি আঁশের গা জুড়ে, কৃষকের চোখে ঘুম নেই আশঙ্কায়। ভরা বাদলার মরশুমে জল নেই খাল, বিল, নদীতে। পাট জাঁক দেওয়ার মরশুম শেষ হলেও, এখনও জমি থেকে পাট তুলে জমা জলে জাঁক দেবার মত পর্যাপ্ত জমা জলের অভাব। জল ভাড়া নিয়ে জাঁক দিতে হচ্ছে পাট। আর এই অল্প জলে পাট জাঁক দিলে পাটের মান নিয়ে হতাশ চাষীরা। বেশি জলে তেল হতো পাটের এবং চকচক করতো সোনালী পাট। দাম উঠতো দ্বিগুন। অল্প জলে পাট পচালে পাটের রং থাকে না, কালো হবে পাট। অভিজ্ঞতা থেকে আক্ষপ ঝরে পড়ছে পাটচাষীদের।
মুর্শিদাবাদের বহরমপুর ব্লকের ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ে পাটচাষী খায়ের আলি, অজিত মন্ডলদের আক্ষেপ এ বছর লোকসান হবে পাটের, দাম উঠবে না তিন হাজারের বেশি। একই জমিতে পাম্প চালিয়ে জল ভর্তি করে বারেবারে জাঁক দেওয়া অনেকের পাট। এর ফলে প্রথম দিকে জাঁক দেওয়া পাট ভালো হলেও শেষের দিকে যারা পাট জাঁক দিচ্ছেন সেই পাটের গুনমান ঠিক থাকছে না। জেসিআই কিনবে না এই পাট। গ্রামে আসা ফড়ে বা দালালরাও দাম দেবে না এই পাটের। এ কথা জানালেন গ্রামের পাটচাষিরা।
মুর্শিদাবাদ জেলার কৃষক সমিতির সম্পাদক বলেছেন এ বছর পাট চাষ হয়েছে ভালো কিন্তু পর্যাপ্ত জল যদি সরকারি সেচের মাধ্যমে পাট পচানোর জল সরবরাহ করা যায়, তাহলে কৃষকদের কষ্ট একটু লাঘব হবে। কিন্তু এই দাবিতে কর্ণপাত করেনি প্রশাসন। ক্ষতির কথা চিন্তা করে চাষীদের কপালে আশঙ্কার মেঘ।
মুর্শিদাবাদের কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের অধিকর্তা উত্তম রায়ের কথায়, ”মুর্শিদাবাদ জেলার অর্ধেক পাটচাষী জলের অভাবে এখনও পাট তুলতে পারেনি ঘরে। পাটের গুনমান খুবই নিম্নমানের হবে। জমিতে পাট থেকে যাওয়ায় ধানচাষও শুরু করতে পারছেন না চাষিরা।”
চাষিদের চোখ আকাশের দিকে। মেঘ দেখলেই এখনও মনে আশা জাগছে সোনালী রং হবে পাটের। পাটের রং যদি না জমে তাহলে এবছরে ৩২০০ থেকে ৩৩০০ টাকা কুইন্টাল দরে বিক্রি করে দিতে হবে পাট।