রাজ্য

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মুজফ্ফর আহমেদ(কাকাবাবু)।


সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:৬ইআগস্ট:৫ই আগস্ট কমরেড মুজফফর আহমেদের তথা কাকাবাবুর জন্মদিবস।-১৯২০ সালের ১৭ আগস্ট সোভিয়েত ইউনিয়ন এর তাসখন্দে কিছু বিপ্লবীর হাত ধরে তৈরী হয়েছিল কমিউনিস্ট পার্টী।। সেই হিসাবে এ বছর কমিউনিস্ট পার্টীর শতবর্ষ উদযাপন যা চলবে ২০২০ সালের ১৭ আগস্ট পর্যন্ত।। ভারতে কমিউনিস্ট পার্টী গড়ে উঠার ক্ষেত্রে ইংরেজদের সাম্রাজ্যবাদ আর জালিওয়ানাবাগ হত্যালীলা এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কবিগুরুর নাইট উপাধি ত্যাগ করার ঘটনা এক বিষেশ ভুমিকা পালন করেছে।। আমাদের দেশে কমিউনিস্ট পার্টীর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কমরেড মুজফফর আহমেদ।। ১৯১৭ সালে এক বিশেষ বার্তা পেয়ে ভারতের শ্রমিকশ্রেনী——-কৃষক সমাজ —–শোষিত বঞ্চিত অংশকে সংগঠিত করার কাজে যুক্ত হয়ে গেলেন। তিনি অবশ্যসম্ভাবী ভাবে স্বাধীনতা সংগ্রাম এও যুক্ত ছিলেন এবং নানা কর্মসুচীতে অংশগ্রহণ করতেন।।।। এই কাজ করতে গিয়ে তিনি নানা জায়গাতে আত্মগোপন করতেন পুলিশের চোখ এড়াতে।। যখন তিনি কারুর বাড়ী তে আশ্রয় নিতেন তখন সেই বাড়ীর লোকেরা তাকে কাকাবাবু বলে সন্মোধন করতেন ——এই ভাবে পার্টীতেও তিনি কাকাবাবু হয়ে গেলেন——– কাকাবাবু প্রথমে জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন এবং স্বেচ্ছাসেবক ও প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করেছেন কারণ তখনকার দিনে মার্কসবাদী বই ও পুস্তক সংগ্রহ করা খুবই কঠিন কাজ ছিল।। অবস্থা তখন খুব প্রতিকুল কারন দক্ষিনপন্থি শক্তি কখনই চাইত না যে বিরোধী শক্তি সংগঠিত হোক।। আর কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধাচরণ করতে যা যা করা সম্ভব সব তারা কৌশলে করত।। কিন্তু কাকাবাবুর দৃঢ়চেতা মন মার্ক্সবাদ —লেলিনবাদ এর মতাদর্শ এর মর্মবস্তু কে আত্মস্থ করে নতুন উদ্যোমে পার্টীর পুনর্গঠনের কাজে মনোনিবেশ করলেন। পার্টী তার গঠনতন্ত্র কে মান্য করে পার্টী পুনর্গঠনের কাজে মনোনিবেশ করলেন।।। সেই সময় জাতপাত এর বিভাজন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।। তার বিরুদ্ধে শ্রমিকশ্রেনী—- কৃষক সমাজ ও সাধারন মানুষের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান শক্তিশালী করা আর তার সাথে সাথে আন্দোলন সংগঠিত করা একান্ত জরুরী হয়ে পড়েছিল।।তিনি মনে করতেন বিভেদকামী ধ্যানধারণা ও শক্তির বিরুদ্ধে কমিউনিস্ট দে দৃঢ় সংগ্রাম করতে হবে——-শ্রেনীআন্দোলন ও গনআন্দোলনের উপর বেশী গুরুত্ব দিতে হবে।। এই সময়ে ঐক্য ——সংহতি গড়ে তোলার কাজে নিত্যনতুন বাধার প্রাচীর তৈরী হচ্ছে।। তাই তার বার্তা ছিল সচেতন ভাবে গণতান্ত্রিক ব্যাবস্থা রক্ষা করা এবং তাকে শক্তিশালী করার কাজে যথেষ্ট যত্নবান হতে হবে।। বিংশ শতকের বিশ বা তিরিশিএর দশকে কাকাবাবুরা শ্রমিক শ্রেণী র দাবী বা কৃষক দের অধিকার নিয়ে স্থানীয় ভিত্তিতে কৃষক- শ্রমিক দের মধ্যে কাজ করতেন এবং তাদের মাঝে মার্কসবাদ —-লেনিনবাদ এর আদর্শ এর কথা বলতেন।। আবার স্বাধীনতা সংগ্রামে কৃষক -শ্রমিক দের অংশগ্রহণ এ অনুপ্রাণিত করেছেন।। তখনকার দিনে কমিউনিস্ট কার্যকলাপ পরিচালনা করতে —“””জীবন মৃত্যু পায়ের ভৃত্য””” এই মনোভাবের দ্বারা পরিচালিত হতেন।। স্বাভাবিক ভাবে এই কাজ করতে সর্বস্থরের পার্টী সদস্য—সমর্থক —-সাধারন মানুষ সকল কে ব্যাপক ভাবে মাঠে ময়দানে সামিল করার লক্ষে সমস্থ পার্টী কমিটি কে উদ্যোগী ভুমিকা পালন করতে হত।।। ১৯৫০ এর দশকে আমাদের দেশে তীব্র খাদ্যসংকট ——এই সময় অনেক আন্দোলন হলেও অনেক ক্ষেত্রে সফলতা আসেনি।। ১৯৫৯ সালে ৩১ শে অগাস্ট কলকাতা মনুমেন্ট এর সামনে এক বিশাল জনসভা করা হয়েছিল —–যা কাকাবাবু —–জ্যোতি বসু সহ অন্যান্য বামপন্থি দল এর উপস্থিতি তে সংগঠিত হয়েছিল।। জনগনের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে কমরেড মুজাফফর আহমেদের মতো চিরবিপ্লবী নেতার জীবন প্রেরনার সঞ্চার করে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।