রাজ্য

রাণাঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর এন‌আর‌সি,এনপিআর নিয়ে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা অটুট রাখার চেষ্টা


সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:৫ই জানুয়ারি:–রহস্যে ঘেরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষন_ রানাঘাটে ।। এখন এন পি আর নিয়ে রহস্যের আভাস দিলেন। বললেন তিনি যদি কোন কোনদিন কোন কিছু করেন তবে তা বলেই করবেন সাধারন মানুষকে না জানিয়ে কিছু করবেন না। তাঁর এই কথাতেই রাজ্যে ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়েছে। তিনি বলেছেন “”যদি করি”” কিন্তু কি করবেন সেটাই তো বললেন না।। তিনি জানিয়েছেন তাঁর ছবি দিয়ে বললেও শুনতে বারণ করেছেন বলেছেন তাঁর গলা সাধারণ মানুষ ভালভাবে চেনে ।। তিনি যখন নিজের মুখে বলবেন তখন বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে।। প্রথমে বনগাঁ আর তারপর রানাঘাট দু’জায়গাতেই সভা করেন আর দুজায়গায়তেই বলতে হয়েছে দলের নেতাকর্মীদের , সমর্থকদের কাছে তাঁকে বিশ্বাসযোগ্যতা র প্রমাণ দিতে হয়েছে। আসলে এন আর সি ,এনপিআর থেকে সংশোধিত নাগরিক আইন নিয়ে যে তিনি বিশ্বাস যোগ্যতা হারিয়েছেন এবার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন।।

রানাঘাটের সভায় তিনি বলেন এখন এনপিআর নিয়ে বলা হচ্ছে বাড়ী বাড়ী গিয়ে কেউ কোন কাগজপত্র দেখতে চায় তা একদম দেখাবেন না ।। তারপর ই তাৎপর্য পূর্ণ ভাবে বলতে শোনা যায় যদি এই নিয়ে কোন কিছু করার হয় তবে তিনি তা করবেন।। বক্তব্য এ এক বিরাট ধোঁয়াশার সৃষ্টি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।।এই এন আর পি নিয়ে প্রথম থেকেই তিনি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন।। দিল্লি তে মোদী ও অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক কলকাতায় ফিরে প্রথম কথা বলেছিলেন এনপিআর নিয়ে কথা হয়নি আর এন আর সি আসামের ব্যাপার ।। এরপর এনপিআর নিয়ে কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন আর টানা দুমাস ধরে টিভিতে এর স্বপক্ষে প্রচার চালিয়েছেন।।পরে বিক্ষোভের বহর দেখে সরকারের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়।।

সভায় ,””যদি কিছু করি “” তাঁর এই কথায় গোটা দেশ তোলপাড় হয়ে উঠছে।। তিনি কি করবেন সেটা একদম পরিষ্কার করে বলেন নি।। এমনিতেই ১৬ ডিসেম্বর এক নির্দেশিকা যে বলা হয়েছে এনপিআর প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে বাতিল করা হয়েছে এমন কিছু বলা হয়নি।। রানাঘাটের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে এনপিআর নিয়ে নতুন ধন্দে পড়েছে আপামর জনসাধারণ।।

বনগাঁ ও রানাঘাট দুই দলীয় সভাতেই মুখ্যমন্ত্রীর উপর ভরসা রাখার কথা বোঝাতে অনেক সময় খরচ করতে হয়েছে।। আসামে এই আতঙ্কে ১০০ জন মারা গেছে _পশ্চিমবাংলা তেও এই আতঙ্কে ৩০৩২ জন মারা গেছে।।অথচ তিনি বললেন ভয় না পেতে।। মানুষ ভয় পাচ্ছে আর মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস এও ভয় কাটার কোন লক্ষণ নেই কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেই আর সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করছে না।তার কারণ ও আছে।

সংসদে নাগরিক সংশোধিত আইন পেশের দিন তৃণমূল কংগ্রেস এর ৮ জন সংসদ এর অনুপস্থিত ছিলেন এবং ভোটদান এড়িয়ে গিয়েছেন আর এখান থেকেই সন্দেহের সুত্রপাত।। তারপর রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠক সন্দেহের তীর আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়।। তারপর আসে জলঙ্গীর মর্মান্তিক ঘটনা।। এন আর সি বিরোধী পথ আন্দোলনের সময় তৃনমুল ব্লক সভাপতির নেতৃত্বে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে দুজন সাধারণ মানুষ কে মেরে ফেলা হয়।।পরপর এসমস্ত ঘটনায় সাধারণ মানুষর ভয় আতঙ্ক দুই বাড়িয়েছে তৃণমূল সরকার।। যখন মুখ্যমন্ত্রী শাহিনবাগ বা লক্ষৌতে গুলি চালানোর বিরুদ্ধে সরব তখন জলঙ্গীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে আশ্চর্যজনক ভাবে চুপ। ঘটনার ৬ দিন পরে ও তৃনমুল কংগ্রেস এর ব্লক সভাপতি কে পুলিশ ধরতে পারে নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও জানেন যে তাঁর উপর মানুষের বিশ্বাস চলে যাচ্ছে আর তাই তাঁকে বারবার তাঁর উপর বিশ্বাস রাখার কথা বলতে হচ্ছে। তাঁকে বিশ্বাস করতে পারা যাচ্ছে না এটা তিনি বুঝতে পেরেছেন প্রতিবাদী পড়ুয়া দের মুখে “” গো ব্যাক”” শুনে।।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।