রাজ্য

টিটাগড়ে গভীর রাতে বোমাবাজি,প্রাক্তন বাম বিধায়কের বাড়িতে।


বলরাম বসু, চিন্তন নিউজ, ১৮ ফেব্রুয়ারি: গতকাল গভীর রাতে পরপর অনেকগুলি বোম মারা হয় চারবারের বিধায়ক বিশিষ্ট ডাক্তার প্রবীণ কুমারের চেম্বারে। প্রবীন কুমার ডাক্তারি পাশ করার পরে টিটাগর পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের রুকমিনি সিনেমা হলের পাশে পার্ক রোডে একটি ভাড়া বাড়িতে চিকিৎসা করতেন। প্রায় চল্লিশ বছরের উপরে ওই বাড়িতে তিনি চিকিৎসা করতেন। এলাকাটি শ্রমিক অধ্যুষিত অঞ্চল। বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষ বাস করেন। এই অঞ্চলের মানুষের কাছে প্রিয় ডাক্তারবাবু ছিলেন তিনি।

এমবিবিএস পাশ করার পরে এমডি করে দীর্ঘদিন ধরে চিটাগং অঞ্চলে বসবাস করেন। ওনাদের পৈত্রিক বাড়ি পুরনো বাড়ি রাসমণি ঘাটে। এরপরে ডক্টর প্রবীন কুমার ১৯৯১ সালে প্রথম টিটাগর বিধানসভা থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। তারপর থেকে একটানা ২০১১ সাল পর্যন্ত টিটাগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন।

গতকাল রাতে দুষ্কৃতীরা তার চেম্বারে বোম মারে। চেম্বারের ভিতরে আলমারি সমস্ত জিনিসপত্র ভেঙে যায়। পাশেই একটি বিয়ে বাড়ি ছিল, বিয়ে বাড়ির মানুষেরা তখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আড্ডা মারছিল। সেইসময় বোমা মারাতে বোমার আঘাতে দুইজন আহত হয়। দুই জনই মহিলা। সাথে সাথে তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যারাকপুর মহাকুমা হাসপাতাল বিএন বোস হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এই ঘটনার খবর পেয়ে আজ সকালে ঘটনাস্থলে আসেন সি আই টি ইউ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সম্পাদিকা গার্গী চ্যাটার্জী, প্রাক্তন সাংসদ তড়িৎ বরণ তোপদার। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ব্যারাকপুর পৌরসভার প্রাক্তন পৌর প্রধান বিজলি মিত্রা, উপস্থিত হন পীর মোহাম্মদ ও কল্লোল মুখার্জি এবং এলাকার পার্টির কর্মী-সমর্থকরা। টিটাগর থানায় এফ আই আর দায়ের করা হয়।

ঘটনার খবর পেয়ে টিটাগর পৌরসভার পৌর প্রধান প্রশান্ত চৌধুরী ঘটনাস্থলে আসেন। প্রবীণ কুমারএবং পার্টির নেতৃত্ব দের সাথে তিনি কথা বলেন। উনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন এবং যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি করেন। প্রশান্ত চৌধুরী জানান জুট মিল গুলোর আন্দোলনে ডক্টর প্রভীন কুমার তাকে ডেকে নিয়ে সেই জুট মিল শ্রমিকদের স্বার্থে আন্দোলন করেন এবং এলাকায় খুবই জনপ্রিয় ডাক্তারবাবু। উনার উপরে এই ধরনের আক্রমণ হতে পারে উনি ভাবতে পারছেন না। যার কোনো শত্রু আছে বলে জানা নেই।

ডাক্তারবাবু এলাকার সমস্ত মানুষের আপদে-বিপদে পাশে দাঁড়ান। তার সাথে এই ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন এলাকার মানুষ। অনেক মানুষকে ডাক্তার বিনা পয়সায় চিকিৎসা করেন এমনকি ওষুধ দিয়ে দেন। এই রকম মানুষের চেম্বারে আক্রমণ ঘৃণার বিষয়। এর মধ্যে দিয়ে ডাক্তারকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা এবং ওই জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য ভয় দেখানো হচ্ছে বলেই এলাকার মানুষের ধারণা। মানুষ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবেন এবং ডাক্তারবাবুর পাশেই থাকবেন।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।