কলমের খোঁচা

যে সময়ে যে ধরনের ব্যাক্তিত্বদের ভীষণ ভাবে প্রয়োজন!!



গৌতম প্রামানিক, নিজস্ব। প্র তিবেদন: চিন্তন নিউজ:১০ই মে:– সদ্য শেষ হলো ভারতের দীর্ঘতম বিধানসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল রাজ্যের সরকার ও কেন্দ্রের সরকারের মধ্যে কে কতো অর্থ এবং খরচের বিনিময়ে নিজেদের জাহির করে প্রচার করে সদা ব্যস্ত, অর্থ অনটনে জর্জরিত দিশেহারা নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। যে প্রচারের মধ্যে নেই কর্মসংস্থানের কথা নেই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। ছিল শুধুমাত্র একে অপরের বিরুদ্ধে আস্ফালন, বিভিন্ন ধরনের পাপভূক্ত অভিনয়!! পাশাপাশি সংযুক্ত মোর্চা, তাদের বক্তব্য ছিল- কাজের অধিকার, সুষ্ঠু নিয়োগ পদ্ধতির মাধ্যমে সরাসরি সরকারি নিয়োগ, সম্প্রীতি, কৃষির ভিত্তি করে শিল্প স্থাপন, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গঠন, শিক্ষায় বেসরকারীকরণ আটকানো, অতিথি শ্রমিকদের পরিবারে আগামী ছ’ মাস সাড়ে সাত হাজার টাকা করে সহায়তা করা।
কিন্তু সম্প্রচার মাধ্যমে শুরু থেকেই ওপিনিয়ন পোল সাথে অর্থের বিনিময়ে শুধুমাত্র কেন্দ্রের ও রাজ্যের শাসকের আস্ফালনই প্রচার করে গেলো, যা ছিল সুচতুর ভাবে ধর্মীয় বিভাজনের কৌশল। ফলে যা হবার তাই হলো, বিভাজনের মধ্য দিয়ে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল আসন নিয়ে সরকার গঠন করলো এবং বিজেপি ৩৮% জনসমর্থন নিয়ে বিধানসভায় প্রবেশ, অর্থাৎ সংযুক্ত মোর্চা শূন্য। এটাও একটা নজির, যা বিধানসভায় গঠনমূলক সমালোচনা, আলোচনার আর জায়গা রইল না।
অবশ্যই যে যতো যাই বলুক বাম কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে চুড়ান্ত ব্যার্থতায় হতাশা ও সাংগঠনিক কাজে অনিহা এসেছে। সাথে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি দ্বারা বিশৃঙ্খল পরিবেশ গঠন।

এই সময়েই অধ্যাপক শম্ভু নন্দী-র মতন ব্যাক্তিত্বদের বিরাট প্রয়োজন হয়!! সমগ্ৰ বিশ্বের ইতিহাসে এই রকম পরিস্থিতিতে অধ্যাপক শম্ভু বাবুর মতন মানুষদের তত্বাবধানে, নেতৃত্বেই বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে সমাজ মুক্তি লাভ করে।
বিশেষ করে বর্তমান পরিস্থিতি-
অতিমারি সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে মানুষ কিছু অসামাজিক কু-মনষ্ক দ্বারা  বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে দক্ষিণপন্থী সরকারের জনবিরোধী নীতির কারণে দিশেহারা দেশবাসী!! এই সময়েই বিজ্ঞান মনষ্ক, বাস্তববাদী, সমাজতান্ত্রিক চিন্তার মানুষদেরই ভীষণ দরকার হয়।
কিন্তু-
আবার ঠিক এই সময়েই এই রকম মানুষদের বিদায়ও  ঘটে যায়! বাস্তবে সেটাও মেনে নিতে বাধ্য আমরা, কারণ, এটাও বড়োই নির্মম ভাবে বিজ্ঞান।
অধ্যাপক শম্ভু নন্দী এই নিয়মেই আজ আমাদের মধ্যে নেই। পশ্চিমবঙ্গ বিঞ্জান মঞ্চের সর্বোচ্চ নেতৃত্বে ছিলেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ দায়িত্ব নিয়ে দক্ষতার সাথে সামলেছেন, এমনকি প্রকাশনার কাজও করেছেন যাতে মানুষের মধ্যে সচেতনতার প্রচার হয়। প্রকাশনার বই  বিক্রির ধরন কি হবে তার পরিকল্পনা ও পরামর্শও দেন ১২ এপ্রিল-র সভায়। হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন খবর পাওয়া যায় রক্ত পরীক্ষায় টাইফয়েড ধরা পড়ে, কিন্তু, সুস্থ হয়ে উঠছিলেন, পুনরায় অবনতি হয় ও প্রয়াত হলেন!
পাশাপাশি জনশিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব শ্রদ্ধেয় শক্তি মন্ডল গত ৫ জুন করোনা সংক্রমণ জনিত কারণে প্রয়াত হলেন। ছিলেন সত্যেন মৈত্র জনশিক্ষা সমিতির সভাপতি!! বঙ্গীয় সাক্ষরতা প্রসার সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। বহু বই সাক্ষরতার উপর লিখেছেন!! নিরক্ষরতাদুরীকরণ আন্দোলনে ওনার অবদান অনস্বীকার্য।
সাক্ষরতা, বিজ্ঞান চেতনা, জনশিক্ষা, জনসাস্থ-র সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত।
এই সময়েই মানুষ গুলোকে হারালাম—-!!!
শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক শম্ভু নন্দী
শ্রদ্ধেয় শক্তি মন্ডল
অমর রহে!!!!



মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।