কলমের খোঁচা

মানুষ থেকে মানুষর কাছে ফিরিয়ে আনার দিন,সন্মিলিত হয়ে অধিকার ছিনিয়ে নেবার দিন ৭ নভেম্বর


মিতা দত্ত: চিন্তন নিউজ:৭ই নভেম্বর:– আজ সারা বিশ্বে যথোচিত মর্যাদার সাথে পালিত হচ্ছে মানব মুক্তির জয়যাত্রার দিনটি। পশ্চাদপদ রাশিয়ার জনগণ মার্ক্সীয় আদর্শে লেনিনের নেতৃত্বে অস্তায়মান সূর্যকে রাত্রির জঠর থেকে মুক্ত করে উদীয়মান সূর্যে পরিণত করে। কাজটা খুব সহজ ছিলো না। প্রতিপক্ষ সবদিকদিয়েই শক্তিশালী। বিরাজমান বব্যবস্থা বিদ্যমান ব্যবস্থা শ্রম সমেত গোটা মানুযটাকে আত্মসাৎ করেছিলো, বিকলাঙ্গ করেছিলো মানুষের মগজ ।মানুষ জানতো ,এটাই তার স্বাভাবিক জীবন।

সেই অবস্থা থেকে মানুষের চৈতন্যের জগতে আঘাত করে করে ঘুম ভাঙানোর কাজ করেছিলো লেনিন ও তাঁর শিক্ষায় শিক্ষিত সহযোগীরা ।এই অসাধ্য সাধন করতে তাঁরা পেরেছিলো বলেই পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হলো এক নতুন ব্যবস্থায় যে ব্যবস্থায় মানুষ মানুষ বলে প্রতিষ্ঠিত হলো।মানুষের সবচেয়ে বড়ো পরিচয় তাঁর সৃজনশীল শ্রম, সেই সৃজনশীল শ্রমের মর্যাদা পেলো। প্রতিষ্ঠিত হলো সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা। মানুষে মানুষে দূরত্ব ঘুচল।নারী স্বমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হলো। তাই তো সক্ষম হয়েছিলো ফ্যাসীবাদীর শক্তির পরাজয় ঘটাতে ও ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থার সামনে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে।

কিন্তু সোভিয়েত রাশিয়ায় লেনিন ও স্তালিনের পর যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। সমস্যার অনিবার্য ফলশ্রুতি ঘাম রক্তে গড়া সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার ঘনকালো মেঘে আচ্ছাদিত হয়ে পড়ল।সেই কালো মেঘের ছায়া শুধু রাশিয়ায় নয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশ যারা সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখছিল, তারাও আঁধারে নিমজ্জিত হলো।

পুঁজিবাদীরা দাঁত নখ বের করে সম্প্রসারণ শুরু করে, শুধু তাই নয় তারা প্রচার করতে থাকে পুঁজি বাদেই শেষ ।কিন্তু এই আক্রমণের মধ্যে চীন কিউবা, ভিয়েতনামের মতো দেশ সগর্বে নিজের অস্তিত্ব ঘোষণা করে। তারা জানান দেয় আদর্শে মৃত্যু নেই।

বিশ্বের বেশীরভাগ দেশেই পুঁজিবাদী ব্যবস্থা সঙ্কটে নিমজ্জিত।আমাদের প্রিয়মাতৃভূমি আজ নানাবিধ সমস্যায় সঙ্কটাপন্ন।পুঁজির থাবা বসিয়েছে আমাদের মননে ।সভ্যতা শুরু হয়েছিলো প্রকৃতির সন্তান হিসেবে সংঘবদ্ধভাবে। সেই সঙ্ঘবদ্ধতা নেই। মানুষ এখন বিচ্ছিন্ন।সৃজনশীল শ্রম মানুষকে অন্য জীব থেকে পৃথক করেছিলো, সেই শ্রম সে এখন প্রভুর কাছে বিক্রি করছে। প্রভু তার থেকে মুনাফার পাহাড় গড়ছে। পুঁজি থাবা বসিয়েছে শিক্ষাব্যবস্থায় । সৃজনশীল মানুষ হওয়ার পরিবর্তে তৈরী হচ্ছে বিচ্ছিন্ন দীপের বাসিন্দা। আক্রমণ নেমে এসেছে সর্বোচ্চ। আমাদের শেখানো হচ্ছে রাষ্টের কোনো দায় নেই। রাষ্ট্রীয় পরিসেবা তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। তাই তো গড়ে উঠেছে ওপরে চাকন চিকন, ভেতরে খড়গোজার মতো বেসরকারী শিক্ষা, চিকিৎসা ব্যবস্থা ।আমরাও তাই গিলছি।

পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় লালিত মগজভুলে যাচ্ছে সভ্যতার কারিগর কৃষক, শ্রমিকের কথা। তাদের বঞ্চনা আর যন্ত্রণাবিদ্ধ করে না ।আমি ভালো থাকবো – এই যে পুঁজিবাদী শিক্ষা যত গেলাচ্ছে কিছু মানুষ তত গিলছে। এই ব্যবস্থা প্রকৃতিকে নিজের প্রয়োজনে যথেচ্ছাচারভাবে ব্যবহার করছে যার বিষময় ফল ফলতে শুরু হয়েছে

তাই এই দিনটির প্রাস‌ঙ্গিকতা বেড়েছে। আমাদের মার্ক্সীয় লেনিনীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মগজ তৈরী করতে হবে। তবেই আমরা পারবো মেঘ কাটিয়ে আলো ফোঁটাতে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।