জেলা রাজ্য

এন এস এস ও – এর তথ্য অনুযায়ী বামফ্রন্ট সরকারের আমলে বেকারদের কর্মসংস্থানে চুড়ান্ত সাফল্য অর্জন করেছিল।


সুপর্ণা রায়: চিন্তন নিউজ:২০শে জুন:- মাত্র নয় বছর আগে পশ্চিমবঙ্গ কর্মসংস্থানে দেশের শীর্ষ স্থানে ছিল আর আজ সেই পশ্চিমবঙ্গের কর্মক্ষম মানুষদের কোন কাজের ক্ষেত্র নেই।। এই নয় দশ বছরে শীর্ষে থাকা রাজ্যকে নীচে টেনে নামিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃনমুল সরকার।।

এটা কোন আজগুবি গল্প নয়,। দশ বছর আগের এন এস এস ও তথ্যে দেখা যায় যে বামফ্রন্ট সরকার এর সময়ে বেকারদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে চুড়ান্ত সাফল্য অর্জন করেছিল। এটা পুরোনো তথ্য হলেও আজ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও লকডাউন এর পরিপ্রেক্ষিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য।। লক্ষ লক্ষ কর্মক্ষম বেকার মানুষ নিজের নিজের ক্ষেত্রে সেই সব মানুষগুলো পশ্চিমবঙ্গ কাজ না পেয়ে শুধুমাত্র পেটের দায়ে ভিন রাজ্যে কাজের খোঁজে গিয়ে এই অপরিকল্পিত লকডাউন এর জেরে চরম বিপাকে ও দূর্ভোগে পড়েছে।। আজ সিঙ্গুরে টাটা কোম্পানির ন্যানো গাড়ির কারখানাটা হত বা বামফ্রন্ট সরকারের আমলে শেষ ছয় বছরে যে সমস্ত কলকারখানা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সেগুলো যদি রূপায়িত হত তবে আজ রাজ্যের মানুষকে কাজের খোঁজে ভিন রাজ্যে যেতে হত না। অশুভ রাজনৈতিক কারণে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এক অদ্ভুত ও অসীম দূর্দশাতে পড়েছে।।

তথ্য জানাচ্ছে বাম সরকারের শেষ ছয় বছরে পশ্চিমবঙ্গের শিল্প ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উৎপাদন মুলক শিল্পে এক নতুন জোয়ার এসেছিল।।। রাজ্যে স্থিতিশীলতা বজায় ছিল , শিক্ষা ক্ষেত্রে চুড়ান্ত ভাবে উন্নতি , রাজ্যে দক্ষ শ্রমিকের যোগান ছিল এবং গ্রাম বাংলার মানুষের ক্রয় ক্ষমতা যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছিল ফলে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অন্য রাজ্য গুলো র সাথে প্রতিযোগিতা করে যথেষ্ট বেসরকারি বিনিয়োগ টানতে সক্ষম হয়েছিল।। এন এস এস এর তথ্য জানাচ্ছে ২০০৪ থেকে ২০১১ এই সময়কালে সারা দেশে উৎপাদন মূলক শিল্পে কর্মসংস্থান হয়েছিল ৫৮ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষের যার মধ্যে চল্লিশ শতাংশ মানুষই পশ্চিমবঙ্গের।।সেই সময়ে প্রায় ২৪ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছিল।। ছোট ও মাঝারি শিল্পতেও ব্যাপকভাবে উন্নতি ও কর্মসংস্থান হয়েছিল।। রাজ্যে বড় কারখানা গুলো উৎপাদন করতে পেরেছিল বলে ছোট ও মাঝারি কারখানা গুলোও উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে পেরেছিল ।। হলদিয়া

পেট্রোক্যামিকালসের উপস্থিতি এ রাজ্যে সবচাইতে বেশি প্রভাব ফেলেছিল ছোট ও মাঝারি শিল্প এর বিকাশে।। বামফ্রন্ট সরকারের শেষ ছয় বছরে সিঙ্গুরের ন্যানো গাড়ির কারখানা, শালবনী , পুরুলিয়া , খড়্গপুরে ইস্পাত শিল্পসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্প তৈরির কাজ চলছিল জোরকদমে।। যখন ২৪ লক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছিল এই পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে তখন কর্মসংস্থানে সারা ভারতের মধ্যে প্রথম ছিল পশ্চিমবঙ্গ।।

তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও শিল্পমন্ত্রী নিরুপণ সেন বেকার মানুষদের কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন এবং স্পষ্ট বক্তব্য রেখেছিলেন যে সিঙ্গুরে টাটা মোটরসের ন্যানো গাড়ির কারখানা হলে সেই গাড়িতে কারা চড়বে সেটা বড় কথা নয় কিন্তু অটোমোবাইল শিল্প ও তার যন্ত্রাংশ তৈরি এবং তা সরবরাহ করতে বহু বেকার মানুষ এর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বেকারির কালো মেঘ সরে যাবে এবং হাজার হাজার বেকার যুবক যুবতী কাজ পাবে এটাই সবচেয়ে বড় কথা।। এটাই ছিল তাঁদের শুভ স্বপ্ন।। কিন্তু অপরিনামদর্শিতার জন্য মানুষ ভূল বুঝলো বলা ভালো তাদের ভুল বোঝানো হল ।।। । ২০১১ সালে পালাবদল আর তার সাথে সাথে হাজার হাজার মানুষের কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা ভেঙে গুঁড়িয়ে ছারখার হয়ে গেল।।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।