সোশ্যাল মিডিয়াকে যদি ‘সমাজ-দর্পন’ বলা যায় তবে কেমন হয় ভেবে দেখা যায়। যেমন, ‘চিন্তন’ হল সমাজদর্পন।
আজ সকালে খবর পড়তে পরতেই এই কথাটা মনে হল। খবরগুলো পরপর বসে যে প্রতিচ্ছবি তৈরী করে তাতে সমাজের হাল-হকিকৎ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এক, পুলিশের অতিসক্রিয়তায় আইনজীবীরা যার পর নাই বিপন্ন ও ক্ষুব্ধ। সারা বাংলার ৫৫০০০ আইনজীবী কর্মবিরতি পালন করলেন। এতে করে আর একটা প্রশ্নও সামনে আসে : প্রশাসন অতি সক্রিয় হয় কখন? যখন সেখানে অনিশ্চয়তা তথা আত্মবিশ্বাসের নিদারুণ অভাব হয়। ভুল নির্দেশ বা নির্দেশহীনতার ফসল এটা। প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙ্গে পড়ার লক্ষণ।
দুই, প্রধান বিচারপতির নামে যে কলঙ্ক লেপনের উদ্যোগ হয়েছে তার একমাত্র উদ্দেশ্য তাকে নিস্ক্রিয় ও হীনমন্য করে ব্ল্যাকমেল করে রাজনৈতিক দুস্কৃতি স্বার্থ চরিতার্থ করা। একটি ওয়ান-ম্যান কমিটিকে সত্য উদ্ঘাটনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সেটা কথা নয়। সমাজের অবস্থা জানান দিচ্ছে যে ঘটনা তা হল, এই তদন্ত ( বিচারে?) দেশের প্রধান বিচারপতির পরোক্ষ জবাবদিহির(?) প্রয়োজনীয়তা। বিশ্বের দরবারে সমগ্র ভারতবাসী কতটা হতমান হল শুধুমাত্র কিছু চক্রান্তকারী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কুকীর্তির কারনে। এরা আমাদের সমাজকে কলুষিত করে। তারা শাস্তি পায় কি না সমাজ তাকিয়ে থাকবে।
তিন, প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার তল্লাশীর কান্ডের দায় চাপিয়ে দেয়া হয় এক অভিজ্ঞ আই এ এস অফিসারের ওপর, যিনি প্রমান করেছেন যে তিনি সে সময়ে অকুস্থলেই ছিলেন না, এবং তিনি তল্লাশীর নির্দেশ দেন নি। তার বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়েই ট্রাইবুনাল তাঁর সাসপেনশন রদ করে চাকরীতে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রশাসনের মধ্যে দুর্নীতির শিকড় কতটা গভীর হলে এ ধরনের চ্যূতি ঘটে, যা ভাবলে হতাশ হতে হয়।
এগুলি উদাহরন মাত্র। এরকম আরো ঘটনা অবিরত ঘটছে নিহিত স্বার্থের সঙ্গে সমাজের দুর্নীতিগ্রস্ত অংশের যোগাযোগে। সাধারন নাগরিক অপূরনীয় স্থায়ী ক্ষতির শিকার হয়ে তিলে তিলে ধ্বংসের পথে চলে যাচ্ছে, বুঝতে পারছে না।
একমাত্র সমাজ দর্পনে এই বিপন্নতার প্রকৃত প্রতিফলন জনচেতনা তৈরী করা সম্ভব মনে হয়।