কাকলি চ্যাটার্জী, চিন্তন নিউজ, ১২ জুলাই: স্বাধীনতার পর অতিক্রান্ত ৭২ বছর। সংবিধান স্বীকৃত সব ধর্মের, সব জাতির মানুষের দুবেলা দুমুঠো খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকা, স্বাস্থ্য শিক্ষার অধিকার আজও স্বপ্নই থেকে গেল সমাজের এক বিশাল সংখ্যক মানুষের কাছে। একটা ভারত স্বপ্ন দেখে আর একটা ভারত স্বপ্ন ফেরি করে। এরকম এক স্বপ্ন দেখা গ্ৰাম পুরুলিয়া জেলার বরাবাজার ব্লকের শবর অধ্যুষিত গ্ৰাম লটপদা।
১৭০ জন মানুষের বাস এই গ্ৰামে। ৭০ শতাংশ মানুষের নেই আধার কার্ড। ৪০ জন শিশুর কাছে পৌঁছায়নি শিক্ষার আলো। প্রাপ্তবয়স্ক সব মানুষের নেই ভোটার কার্ড। গতকাল পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক ডঃ নয়ন মুখার্জি এবং পুরুলিয়া শহরের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ডঃ সন্তোষ আগরওয়ালের নেতৃত্বে এই গ্ৰামে পৌঁছায় এক প্রতিনিধিদল। গ্ৰামবাসীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি শিশুদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরিকল্পনা নেন তাঁরা।
‘আপনা ঘর’ বাড়িয়ে দেয় সাহায্যের হাত। চারটি পরিবারের মাথায় ছাদের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব নেয় স্বেচ্ছায়। অন্য পরিবারের জন্যও নেওয়া হবে পদক্ষেপ যাতে কোনো একজনও বর্ষায় কষ্ট না পান। বসবাসকারী মানুষের নেই কোনো জমিসংক্রান্ত কাগজপত্র। ভূমি সংস্কার দপ্তরের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সেই ব্যবস্থা করার দায়িত্ব নেন নেতৃবৃন্দ। গরীব মানুষের কাছে সরকারি সাহায্য পাওয়ার মাধ্যম ব্যাঙ্ক একাউন্ট খোলার ব্যাপারে SBI ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে যাদের আধার কার্ড আছে তাঁদের একাউন্ট চালু করার প্রতিশ্রুতি দেন সম্পাদক নয়ন মুখার্জি।
সর্বতোভাবে এই গ্ৰামের পাশে থাকার আশ্বাস পেয়ে ঐ শবর মানুষগুলোর চোখেমুখে খুশির আভাস। পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান মঞ্চের এই উদ্যোগ খুবই সময়োপযোগী। এক নতুন ধরনের কাজে যুক্ত হয়ে সংগঠনের মাথায় এক নতুন পালক যুক্ত করল এই জেলা। আগামী দিনে অন্যান্য জেলাও তার নিজের কাজের পরিসরে এভাবে সাধারণ মানুষের মধ্যে কাজ করে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করবে, গৌরবান্বিত করবে বলেই বিশ্বাস সংগঠনের সদস্যদের।