দেশ

একসাথে ৮টি বিল পেশ করল সরকার


মীরা দাস, চিন্তন নিউজ, ১২ জুলাই: একসঙ্গে আটটি বিল লোকসভায় পেশ করল সরকার। এ এক নজিরবিহীন ঘটনা, এই বিলের বিরোধিতায় বিরোধীরা। এই বিলগুলির ভেতর তিনটি বিল এমন আছে যেগুলি আইন হলে আম জনতার ওপর সরকারের নজরদারির ফাঁস আরও বাড়বে। সরকার বিরোধিতা রোধ করতেই এই বিলগুলি আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের দাবি সন্ত্রাস দমনের উদ্দেশ্যেই এই সংশোধন।

কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী হর্ষবর্ধন ডি.এন.এ. প্রযুক্তি বিলটি লোকসভায় পেশ করেন। মৃত ব্যক্তির পরিচয় বার করতে ডি.এন.এ নমুনা কাজে লাগবে এবং তথ্য জমা থাকবে জাতীয় ও আঞ্চলিক তথ্য ব্যাঙ্কে। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরি বলেন, কোন সন্দেহভাজন ব্যক্তি নির্দোষ প্রমানিত হলে তাঁর তথ্য কিভাবে নষ্ট হবে তা বলা নেই বিলে। তথ্য সুরক্ষার আইন না থাকায় এর অপব্যাবহার হবে। তাছাড়া বিচারাধীন বা সন্দেহভাজন মানেই দোষী নয়। তাই শাস্তি ঘোষনা না হওয়া পর্যন্ত ডি.এন.এ. নমুনা সংগ্রহ না করার আর্জি বিরোধীদের।

ইউ.এ.পি.এ. সংশোধনী বিল পেশ করা হয়, যেখানে ধৃত ব্যক্তিকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষনা করা যাবে। বিরোধীদের বক্তব্য, এই বিল পাশ হলে, সরকার বিরোধী হলেই সন্ত্রাসবাদী হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া হবে। আর.এস.পি. সাংসদ এম. কে. প্রেমচন্দ বলেন ঐ আইনে বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার কেড়ে নেবে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রি কিষান রেড্ডির জবাব, ”অনেক জঙ্গিই একা কাজ করে। তাদের কথা ভেবেই পরিবর্তন করা হচ্ছে। আমজনতার সমস্যা হবে না।”

এন.আই.এ. সংশোধনী বিল বিদেশের মাটিতে মূলত সন্ত্রাসের ঘটনায় ভারতীয়ের মৃত্যু বা দেশীয় সম্পত্তির ক্ষতি হলে তদন্তের অধিকার।মানব পাচার ও সাইবার অপরাধ রুখতে সংস্থাকে বিশেষ ক্ষমতা হচ্ছে এই বিলে। এই বিষয়ে বিরোধীদের বক্তব্য, এন.আই.এ. -কে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বাইরে নিয়ে আসার দিশা নেই এই প্রস্তাবিত বিলে। বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন বিলে সংশোধনী আনায় ঐ আইন গুলির অপব্যবহারের আশঙ্কা করছেন বিরোধীরা। এই বিলে এন.আই.এ. আদালতে মামলার চাপ বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আদালতেও বিচারের জন্য দ্বারস্থ হতে পারবে এন.আই.এ।

মানবাধিকার রক্ষা সংশোধনী বিল অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের যেকোন বিচারপতি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন হতে পারবেন। বর্তমান আইন অনুসারে কেবলমাত্র সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিই ওই পদের অধিকারী। বিরোধীদের বক্তব্য প্রধান বিচারপতির উপস্থিতি আবশ্যিক না করে কমিশনকে দুর্বল করার চেষ্টা হচ্ছে এই বিলে।

উপভোক্তা সংরক্ষন সংশোধিত বিলে স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয় বাদ দেওয়া হয়েছে। বিরোধীরা বলছে স্বাস্থ্য পরিষেবায় মীমাংসার জন্য কোথায় দ্বারস্থ হতে হবে তার দিশা নেই প্রস্তাবিত বিলে।

জালিয়ানওয়ালাবাগ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে কংগ্রেস সভাপতিকে সদস্য হিসাবে সরিয়ে দেওয়া হবে। শশী থারুর বলেন, “কংগ্রেস চাঁদা তুলে সেখানে স্মারক বসায়। সেইখান থেকে কংগ্রেসকে সরিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস কে পাল্টাতে চাইছে সরকার।”


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।