চৈতালি নন্দী: চিন্তন নিউজ:১২ই জুন:- এ্যানা ফ্রাঙ্ক জন্মেছিলেন জার্মানিতে ১২ জুন ১৯২৯ তে ,তিনি জন্মগত ভাবে ছিলেন একজন ইহুদী। শুধুমাত্র জন্মসূত্রে ইহুদি হবার কারণে বন্দীদশায় তাকে মৃত্যুবরন করতে হয় ১৯৪৫এর ফেব্রুয়ারি বা মার্চে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে যখন জার্মানি হল্যান্ড দখল করে সেই সময় তিনি সপরিবারে বন্দী হন নাৎসি বাহিনীর হাতে।কারণ সেসময় তিনি ও তাঁর পরিবার আত্মগোপন করে ছিলেন হল্যান্ডের আমস্টারডামে। ১৯৪২ থেকে ১৯৪৪ এই দু’বছরের বন্দী জীবনকালে তাঁর লেখা একটা ডায়েরি তাঁকে অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে আসে।
এ্যানা,তার তের বছরের জন্মদিনের আগের দিন তিনি তার বাবার থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন একটি ডায়েরি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার সহপাঠী এ্যালবার্ট। তাঁর ও এ্যানার বাবার উদ্যোগেই এই ডায়েরি আলোর মুখ দেখেছিল। বন্দীদশার সেই দুটো বছরের প্রতিদিনের অনুভূতি ও উপলব্ধি , যে কোনো দিন প্রচারের আলোয় আসতে পারে তা এ্যানা কখনও কল্পনাও করতে পারেনি। এই ডায়েরি প্রকাশিত হবার পর বিশ্বজুড়ে আলোড়ন ফেলে। ফলে এটি ৬০ টি ভাষায় অনুদিত ও ৩০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়। এই তথ্য স্বাভাবিকভাবেই লেখাটির জনপ্রিয়তা আন্দাজ করার পক্ষে যথেষ্ট।
প্রশ্ন জাগে কি ছিল সেই ডায়েরিতে…এর প্রথম পর্বে ছিল একটি বালিকার কিশোরী হয়ে ওঠা , প্রেম , ভালবাসা অনুভূতি ও উপলব্ধির কথা। একটা প্রানচঞ্চল ছটফটে কিশোরীকে মুক্ত আকাশ থেকে নামিয়ে আনা হয়েছিল পায়রার খোপের মতো অন্ধকার কুঠুরিতে আরও কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে। যা তার মানসিক জগৎকে ছিন্নভিন্ন করেছিল। সাম্প্রদায়িক জীবনের সন্ত্রাস মিশে গেল তার পেলব মননে , যা তাকে প্রভাবিত করেছিল মারাত্মক ভাবে। কিন্তু তার মানবিক চাহিদা গুলোর পরিবর্তন ঘটেনি, প্রেম ভালোবাসা ,শারীরিক চাহিদার আকাঙ্ক্ষা ও অনুভূতি গুলো ছিল অপরিবর্তিত।
তিনি অবলীলায় লিখেছেন দর্শন , ঈশ্বর, মানব চরিত্রের গোপন রহস্য , প্রকৃতি ও জীবনবোধের কথা। একই সঙ্গে তুলে ধরেছেন ইহুদীদের লাঞ্ছনা, যন্ত্রনা, সংগ্রাম সমকালীন ইতিহাস ও বিশ্বযুদ্ধের কথা। তার বেঁচে থাকার স্বপ্ন, বড় হবার আকাঙ্ক্ষা, তার আশাবাদী ভবিষ্যতের স্বপ্ন, যা কোনোদিন বিলীন হবেনা ,যা ভরসা জোগাবে আগামী প্রজন্মকে।