প্রতিবেদন- মিতা দত্ত: চিন্তন নিউজ:২১শে জুলাই:— বিগত কয়েক দিন থেকে সমগ্র বিশ্বের নজর কিউবা এর দিকে।১৯৫৯ এ ফিদেল কাস্ট্রোর নেতৃত্বে সংঘটিত বিপ্লবের ওপর এত বড় আক্রমন এই প্রথম।১৯৫৯ এর পর থেকে ২০২১ পর্যন্ত এত বড় প্রতিবিপ্লবী আন্দোলন আগে কখনো হয়নি কিউবায়।হাজারো মানুষ দেশের বেহাল অর্থনীতির প্রতিবাদে রাস্তায় নামে।তারা স্লোগান দেয় কিউবার স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা ও একনয়াতন্ত্রের অবসান ঘটানোর জন্য।তাদের বক্তব্য কিউবাতে খাদ্য,ঔষধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে,কিউবার অর্থনীতি ধবংস হয়ে গেছে।১৯৫৯ সালে ফিদেল কাস্ট্রোর নেতৃত্বে সংঘটিত বিপ্লবের সময় বিপ্লবীরা দিয়েছিল সেই বিখ্যাত স্লোগান “প্যাট্রিয়া ও মুর্তে!” যার অর্থ “পিতৃভূমি বা মৃত্যু “। বর্তমানে আন্দোলনকারী জনতার স্লোগান “প্যাট্রিয়া ই ভিদা!” যার অর্থ “পিতৃভূমি ও জীবন”।
অন্যদিকে কিউবার রাষ্ট্রপতি ডিয়াজ ক্যানেল হাজারো মানুষ নিয়ে রাস্তায় নামেন। সাথে থাকেন অবসরপ্রাপ্ত কিউবার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রাউল কাস্ত্রো। ডিয়াজ ক্যানেল কিউবার মানুষকে উশকে দেওয়ার জন্য আমেরিকাকে দায়ী করেছেন কারণ আমেরিকা বরাবরই কিউবার বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। কিউবার অর্থনৈতিক সংকটের কারণ হিসেবে আমেরিকা দ্বারা কিউবার ওপর প্রতিষ্ঠিত অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা বলে ক্যানেল মনে করেন। অন্যদিকে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন ক্যানেলের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন।
কিউবার অর্থনীতি বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এই করোনা আবহে। কিউবায় ভেনেজুয়েলা থেকে তেলের আমদানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিউবার অর্থনীতির অন্যতম প্রধান উৎস পর্যটন করোনা আবহে বন্ধ হয়ে গেছে। কিউবার মোট খাদ্যচাহিদার সত্তর শতাংশ আমদানি হয় অন্য দেশ থেকে যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
কয়েকদিন ধরে চলা এই আন্দোলন আপাতত শিথিল হয়েছে। কমিউনিস্টদের শক্ত ঘাঁটি কিউবা যা ষাট বছরেরও বেশি সময় ধরে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধরে রেখেছে । ১৯৯১ এ যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যায় তখনো কিউবার ওপর তেমন কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি। অবশেষে কি কিউবা এই আন্দোলন সামাল দিতে পারবে নাকী ফিদেল কাস্ট্রো ও চে গুয়েভারার ঐতিহাসিক বিপ্লবের এই ক্যারিবিয়ান দেশেও শুরু হবে তথাকথিত গনতন্ত্র – সেটাই দেখার। সমস্ত বিপ্লবী কণ্ঠ এক হোক কিউবার স্বপক্ষে।